যিশু—ছবি: দেবর্ষি সরকার
প্র: গত দু’বছরে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বারবার বলেছেন, দম ফেলার ফুরসত ছিল না। লকডাউন কি সেই অবসর ফেরাতে পারল?
উ: একেবারে ঠিক। লকডাউনের প্রথম এক মাস পরিবারের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছি। তার পরে কাজ কবে শুরু হবে, কী ভাবে হবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল। মাঝে কিছু দিন রান্নাবান্নাও শিখছিলাম। সেটায় একঘেয়েমি আসায় ওয়র্কআউট শুরু করলাম। সেটা অবশ্য এখনও চলছে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। পরমের (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) পরিচালনায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বায়োপিক ‘অভিযান’-এর শুট চলছে।
প্র: টলিউডের চেয়ে কি মুম্বই ইন্ডাস্ট্রির বেশি কাছের হয়ে গিয়েছেন যিশু সেনগুপ্ত? পরপর হিন্দি ছবি...
উ: এটা কি অভিযোগ? তা হলে আর করব না (জোরে হাসি)।
প্র: অভিযোগ নয়, অবজ়ারভেশন...
উ: ভাল স্ক্রিপ্ট হলে আমি যে কোনও ভাষায় কাজ করব। তিনটি তেলুগু ছবি করে ফেলেছি। আর একটা করার কথা চলছে। বাংলার বাইরের ইন্ডাস্ট্রিতে আমি চেষ্টা করছি। দর্শক সেখানে আমাকে গ্রহণও করছেন।
প্র: ‘শকুন্তলা দেবী’তে কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম?
উ: বিদ্যার (বালন) কাজের আমি বড় ফ্যান। মানুষ হিসেবেও বিদ্যা খুব ভাল। আমরা পরস্পরকে অনেক দিন ধরেই চিনতাম। ঋতুদার (ঋতুপর্ণ ঘোষ) পরিচালনায় আমার করা ছবিগুলো ও দেখেছে। এমনকি ঋতুদার ছবিতে এক সময়ে কাজ করার কথাও ছিল বিদ্যার।
প্র: তেলুগু ছবি ‘এনটিআর’-এ বিদ্যার সঙ্গে ছিলেন আপনি...
উ: হ্যাঁ। তবে সেখানে আমাদের একসঙ্গে বেশি দৃশ্য ছিল না। ঋতুদার চ্যাট শো ‘ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি’ আমি প্রোডিউস করতাম। সেই শোয়ে বিদ্যা এসেছিল। তখন থেকেই চেনা। ‘রাজকাহিনী’তে আমার চরিত্র ওর খুব পছন্দ ছিল। ‘বেগমজান’-এ কেন চরিত্রটা করলাম না, সেটা বারবার করে বলেছিল। আমি বলেছিলাম, ‘সৃজিত (মুখোপাধ্যায়), নিল না। কী করব বলো?’ (হাসি) প্রথম দিন ওর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে একটু ভয় ছিল। তবে বিদ্যা এমন ভাবেই কাজ করে, মনে হল আমরা দুশোটা ছবি আগে করেছি।
প্র: সানিয়া মলহোত্র এবং অমিত সাধের সঙ্গেও আপনার দৃশ্য রয়েছে।
উ: সানিয়া অসাধারণ অভিনেত্রী। অমিত যত ভাল অভিনেতা, তত ভাল মানুষ। হি ইজ় ক্রেজ়ি। আর আমার মাথাও তো পুরো ঠিক নয় (হাসি)। ওর সঙ্গে মিলে সেটে খুব মজা করতাম। পরিচালক অনুর (মেনন) দিকে তাকিয়ে বিদ্যার সঙ্গে বাংলায় কথা বলতাম। অনু ভাবত, ওকে নিয়ে কথা হচ্ছে। বারবার জিজ্ঞেস করত, ওকে নিয়ে আমরা কী বলছি।
প্র: ‘মর্দানি’, ‘মণিকর্ণিকা’, ‘শকুন্তলাদেবী’... বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের স্বামীর চরিত্রে টাইপকাস্ট হয়ে যাচ্ছেন না?
উ: (একটু সময় নিয়ে) এর পরে যে ছবিটা (সড়ক টু) আসছে, সেটা দেখার পরে লোকে হয়তো এ কথা বলবে না।
প্র: ইনসাইডার-আউটসাইডার বিতর্ক নিয়ে বলিউড সরগরম। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে কখনও ‘আউটসাইডার’ মনে হয়েছে?
উ: আমি তো ভারতের নাগরিক। আমার আধার কার্ড রয়েছে। বরাবরই তো আমি ইনসাইডার।
প্র: কিন্তু আপনার কেরিয়ার তো হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয়নি। সেই দিক থেকে তো আউটসাইডার বটেই...
উ: এই ইন্ডাস্ট্রিতে বড় ফ্যাক্টর হচ্ছে লাক। প্রতিভাও থাকা চাই। এই দুটো সঙ্গে থাকলে সাফল্য আসবেই। এখন এত কথা হচ্ছে, অমুকে অমুকের ক্লোজ় বলে ছবি পাচ্ছে... তাদের বলতে চাই, মিঠুন চক্রবর্তী কার ক্লোজ় ছিলেন? অমিতাভ বচ্চন কার ক্লোজ় ছিলেন? এ বার এঁদের ছেলেরা বাবার নামে একটা বা দুটো ছবি পেতে পারেন। কিন্তু প্রতিভা না থাকলে তাঁরা তো টিকতে পারবেন না। আমি যদি কখনও প্রযোজক হই, নিজেকে ছবিতে রাখব না। রণবীর কপূরকে নিয়ে ছবি করব। হি ইজ় আ ফেনোমেনাল অ্যাক্টর। আর নেপোটিজ়ম তো সব ইন্ডাস্ট্রিতেই। মুকেশ অম্বানী তাঁর ছেলেকেই তো কোম্পানির সিইও বানাবেন। এ বার কোনও প্রযোজক যদি নিজের টাকায় তাঁর ছেলে বা পছন্দের লোককে অভিনেতা বানান, অসুবিধে কোথায়? সেই প্রযোজক যদি অন্যের টাকা নিয়ে এটা করেন, তখন প্রশ্ন উঠতে পারে।
প্র: নেপোটিজ়ম বিতর্ক কি তবে শুধু ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য চলছে?
উ: আমি কোনও একটি ঘটনা বা বিশেষ কারও পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলব না। তবে সফল স্টারকিড যেমন আছেন, ব্যর্থ স্টারকিডের উদাহরণও তার চেয়ে বেশি বই কম নয়।
প্র: হিন্দি ছবির ওটিটি রিলিজ় হয়ে যাচ্ছে। হল না খুললে বাংলা ছবির ক্ষেত্রে সমস্যা হবে বলে মনে হয়?
উ: প্রযোজক হলে বেশি ভাল বলতে পারতাম। তবে আমার যত দূর ধারণা, অনেক বাংলা ছবি তৈরি হয়ে পড়ে আছে, এমন নয়। অনেক ছবির শুটই পুরো হয়নি। তাই সমস্যা বলে এখনই মনে হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy