পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ
১৪ ফেব্রুয়ারি, প্রেম দিবসে মুক্তি পেতে চলেছে ‘প্রেম টেম’। গায়ক, সাহিত্যিক ও পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ও তার গানগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে দর্শক মহলে। এই প্রথম আনন্দবাজারের সঙ্গে নতুন ছবি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
ট্রেলার দেখে যা বোঝা যাচ্ছে, ছবিটায় ত্রিকোণ না, চতুষ্কোণ প্রেমের গল্প বলা হচ্ছে, তাই কি?
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: (হেসে) নিশ্চয়ই! কুকুরটিই (খগেন) আমার ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছে। তার প্রেম, তার অভিব্যক্তি সব গুরুত্বপূর্ণ। খগেনের মাধ্যমেই গল্পের সুতোটা বাঁধা। আমার ছবিতে যে মূল বক্তব্যটা রয়েছে, তা হল শর্তহীন প্রেমের সৌন্দর্য। আমার মনে হয়, দু’টি মানুষের মধ্যে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, তার মধ্যে ‘শর্তাবলী প্রযোজ্য’-র ট্যাগ লাগানো থাকে বহু ক্ষেত্রে। আর সেখানেই আমাদের চতুর্থ চরিত্র অর্থাৎ খগেনের প্রবেশের পর এই প্রশ্নটা নিয়ে নাড়াচাড়া করা হয়। কারণ মানুষের সঙ্গে অন্য কোনও প্রাণীর ভালবাসায় সেই শর্তের জায়গাটা থাকে না। এই তফাতটা নিয়েই ছবি। আমার যে মূল উপন্যাসটা ছিল, তার নাম ‘বকলস’। কিন্তু এই শব্দটা দিয়ে আমি কোথাও কুকুরের কথা বলছি না। এটা আসলে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের বকলস। কারণ, আমরা একে অপরকে আঁকড়ে ধরতে ভালবাসি। আর তাতেই তৈরি হয় একটা অদৃশ্য চেন। এই ছবিটায় ওই সীমাটাকে পেরিয়ে যাওয়ার গল্প বলা হয়েছে।
উত্তর কলকাতার ক্যাম্পেনার বলা হয় আপনাকে, সেটা নিয়ে কী বক্তব্য? আর এই ছবিতে লোকেশনের কী ভূমিকা?
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: হ্যাঁ, সেটা বেশ মজার। কিন্তু আমার ছবিগুলো দেখলে বোঝা যাবে, এক মাত্র ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এ আমি উত্তর কলকাতাকে দেখিয়েছি। ‘প্রজাপতি বিস্কুট, ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ বা ‘প্রেম টেম’ কোথাওই কিন্তু উত্তর কলকাতা দেখানো হয়নি। তবে এই ছবিটার লোকেশন আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। পুরো ছবির শ্যুটিংটা হয়েছে চন্দননগর, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, শ্রীরামপুরে। কলেজের শ্যুট হয়েছে শ্রীরামপুর কলেজে। গোটা হুগলি জেলায় নানা দেশের মানুষ এসে কলোনি স্থাপন করেছিল বলে নানা সংস্কৃতির মিলন ঘটেছে। এই ছবিটা যেহেতু প্রেমের গল্প নিয়ে, তাই ছবির আবহে আমি ওই প্রকাণ্ড স্থাপত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছি। আর সেখানেই আমার ভাবনার সঙ্গে সেটাকে মিলিয়ে দিতে সাহায্য করেছে আমার ডিওপি শুভঙ্কর ভর। আমি মনে করি, কেবল মাত্র ক্যামেরার জন্যেও এই ছবিটা বড় পর্দায় দেখা উচিত সকলের।
আগের দু’টো ছবির মতোই নতুন চেহারা দেখা যাবে এই ছবিতে...
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: এটা যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, তা নয়। এই ছবির ক্ষেত্রে আমার কলেজ পড়ুয়ার বয়সটাই দরকার ছিল। যেন মনে না হয় যে তাঁদের কলেজের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। সৌম্য, শ্বেতা ও সুস্মিতা— প্রত্যেকেরই বয়স ২১ থেকে ২৩-এর মধ্যে। তিন জনেই খুব ভাল কাজ করেছে। পরিচালক হিসেবে আমি খুশি।
‘তোমারই তো কাছে’ গানটা তো খুব পছন্দ হয়েছে শ্রোতাদের, এই প্রথম নিজের ছবিতে গান গাইলেন আপনি...
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: আসলে কখনওই নিজের ছবিতে গাইব বলে ভাবিনি। এই গানটা যখন প্রসেন বানিয়েছিল, তখন থেকেই ও বলছিল যে আমায় দিয়ে গাওয়াবে। ছবিতে ব্যবহার করার কথাই ওঠেনি। কিন্তু গানটা এত ভাল লেগে গেল যে ছবিতে ব্যবহার করে বসলাম। তার পর এসভিএফ ও প্রসেন সবাই জোর করায় আমাকেই গাইতে হল।
গানের প্রসঙ্গ এল বলে জানতে চাই, ‘চন্দ্রবিন্দু’ কবে ফিরবে?
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: সময়ের অভাবে দেরি হচ্ছে। কিন্তু জানিয়ে রাখি, ‘চন্দ্রবিন্দু’ ফিরছে। ১০ নং অ্যালবামের কাজ শেষ। কিন্তু আগে মতো গোটা অ্যালবামটা এক সঙ্গে আসবে না। একটা অথবা দু’টো করে গান প্রকাশ পাবে। কারণ, এখন মানুষের কাছে সমস্ত গান এক সঙ্গে শোনার মতো সময়ও নেই।
ছবির এক্স-ফ্যাক্টর কী আপনার মতে?
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: অবশ্যই খগেন। ও আমাদের এক মাত্র ‘বম্বে স্টার’। সহকারীদের সঙ্গে খগেন কলকাতায় আসে আমাদের অনুরোধে। অপূর্ব অভিনয় করেছে সে। ছবিটার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ওকে দিয়ে অভিনয় করানো। মনে হয়, সেটায় সফল হয়েছি আমরা।
আপনার সব ছবিগুলোর নামের মধ্যেই একটা বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী চলছিল মাথায়?
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়: আমার উপন্যাসের নামটা এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করলাম না ইচ্ছাকৃতই। কারণ তা হলে কেবল কুকুরের কথাই মাথায় আসত। সেটা চাইনি। উদ্দেশ্য ছিল, খুব সূক্ষ্ম ভাবে নামের মধ্যে দিয়ে গল্পটাকে তুলে আনার। তাই সোজাসুজি ‘প্রেম’ শব্দটাকেই বেছে নিয়েছি। সঙ্গে ‘টেম’ (টি এ এম ই), যার অর্থের মধ্যে পোষ মানানোটা লুকিয়ে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy