স্বস্তিকা দত্ত
কেকা চরিত্রে লেখা চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় আপনি। কেমন ছিল সে অনুভূতি?
যে কোনও জায়গায় আমরা কাউকে রিপ্লেস করলে ডেফিনিটলি খারাপ লাগে। আসলে দুটো জিনিস হয়... খারাপ লাগে এবং ভয় লাগে। আমার খারাপ লাগার থেকেও বেশি ছিল ভয় লাগা। খারাপ শুধু লেখার জন্য নয়, মেল আর ফিমেল দু’জন প্রোটাগনিস্টের জন্যই খারাপ লেগেছে। কিন্তু তার থেকেও বেশি ছিল ভয়। মানে... আমার জীবনের এটাই প্রথম রিপ্লেসড ক্যারেক্টার... একটা সিরিয়াল যেটা প্রোমোতেই এত ধামাকা দিয়ে লঞ্চ হয়েছিল এবং যেটা রাত ন’টার স্লটের একটা সিরিয়াল, যেখানে আমি নিজেই সাড়ে নটার স্লট করে এসেছি। তো আমি যখন প্রোপোজালটা পাই আমার ‘হ্যাঁ’, ‘না’ কিছু ছিল না, ভীষণভাবে ভয় লেগেছিল। কারণ... কী হয় ভিউয়ারসদের, আমরা যেটা দেখাই সেটাই তাঁরা অ্যাডপ্ট করেন আর প্রথম থেকে তাঁরা যেটা দেখেন সেটাকে ভালবাসতে শুরু করেন।একটা ক্যারেক্টার প্রথম থেকে করা যতটা ইজি,আর একটা ক্যারেক্টারকে রিপ্লেস করে ওর থেকেও বেটার করা বা ওর থেকে ডেটোরিয়েট করা... এই পুরোটাই তোমার ট্যালেন্ট আর তোমার কেরিয়ারকে জাস্টিফাই করে। তো সেটা নিয়ে আমি প্রচণ্ড ভয়ে ছিলাম। আমার খারাপ লাগা ডেফিনিটলি ছিল। কিন্তু ক্রু মেম্বাররা কী ভাবে আমাকে অ্যাকসেপ্ট করবেন সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা ছিল। টাচউড, সবাইকেই তো চিনি, সবাইকেই তো জানি... তবু নার্ভাস ছিলাম।
প্রথম দিন ফ্লোরে এসে কী মনে হল?
আমি জানি, এতদিন যে মানুষগুলো দু’জন মানুষকে দেখে এসেছে তাদের পরিবর্তে অন্য দু’জনকে দেখতে চলেছে। ভেবেছিলাম ক্রু মেম্বারদের পক্ষে অ্যাকসেপ্ট করা ডিফিকাল্ট হবে, কিন্তু আমাকে অ্যাকসেপ্ট করিয়ে নিতে হবে। তো এমন কিছু মানুষ এখানে আছেন যারা আমার প্রিভিয়াস প্রজেক্ট ‘ভজগোবিন্দ’-তেও ছিলেন। প্রথম দিন থেকে একটা জিনিস ভেবেছিলাম যে দিস ইজ গোয়িং টু বি মাই নিউ ফ্যামিলি। সেই পরিবার হয়তো আমাকে অ্যাকসেপ্ট করতে সময় নেবে, কিন্তু ফ্রম দ্য ভেরি ফার্স্ট ডে আমাকে ভাবতে হবে যে আমি অলরেডি যখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি তখন আমি ওই ফ্যামিলিকে অ্যাকসেপ্ট করে নিয়েছি। কারণ আর্টিস্ট বা টেকনিশিয়ান সবার কাজ... হট স্টারে ‘বিজয়িনী’-র আগের এপিসোডগুলো দেখেছি। দে আর নোন টু মি। বাট আই অ্যাম নট নোন টু দেম। এই জিনিসটা মাথায় রেখে প্রথম দিন ফ্লোরে কাজ করতে গেছি।
আগে ভাবতে পেরেছিলেন এরকম হবে?
না,তখনও জানতাম না এটাই আমার ডেস্টিনি। আমি ‘ভজ গোবিন্দ’-র ক্লাইম্যাক্স শুট করছি, পাশের ফ্লোরেই ‘বিজয়িনী’-র প্রোমো শুট হচ্ছে। আমার মেকআপ রুম থেকে দেখছি। এই রকম সারকামস্টান্সেস হয়েছে। কিন্তু কোনও দিনও ভাবিনি ওই জায়গায় আমি থাকব।
অন্য রূপে স্বস্তিকা
রিপ্লেসমেন্টের পর অনেকগুলো এপিসোড টেলিকাস্ট হয়েছে। কেমন লাগছে?
প্রায় সাড়ে তিন মাস হয়ে গেছে। কেকার চরিত্র আমাকে সুশান্তদা (দাস)এবং চ্যানেল খুব ইজিলি ব্রিফ করেছিল। বাট যখন ক্যারেক্টারটা শুরু করলাম, বিশ্বাস করবেন না... আই থিঙ্ক কেকার মতোএকটা চ্যালেঞ্জিং ক্যারেক্টার বোধহয় এই মুহূর্তে সিরিয়াল জগতে খুব কম আছে। প্রত্যেক দিন চ্যালেঞ্জ, প্রত্যেক দিন আমি নতুন কিছু করছি। ডালি (‘ভজ গোবিন্দ’) ওয়াজ মাচ মোর ইজিয়ার টু মি।কেকা করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে, অনেক ছবি দেখতে হয়েছে, অনেক বই পড়তে হয়েছে... একেবারেই মিথ্যে কথা নয়... কেকা আমার জন্য অন্তত ডিফিকাল্ট।
কেকা তো ডান্সার...
সেটা তো আরও ডিফিকাল্ট ছিল। আমি নিজে ট্রেনড কত্থক ডান্সার। শীলা মেটা-র কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়েছি। কেকার সাবজেক্ট হচ্ছে ওডিশি ডান্স, ইটস নট মাই কাপ অফ টি। কত্থক ইজ মাচ মোর ইজিয়ার। অঞ্জনাদি (বসু) তো... সত্যি কথা বলতে গেলে শি ইজ আ মার্ভেলাস ওডিশি ডান্সার। আর এখানে রাত্রিদিও (ঘটক) রয়েছেন। দু’জনেই আমাকে প্রচুর হেল্প করেছিলেন, এখনও করেন। আমাকে ওডিশি-র ট্রেনিং নিতে হয়েছে।
নাচের ছন্দে অঞ্জনা এবং স্বস্তিকা
টোটো চালিয়েছেন শুনলাম?
হ্যাঁ।
শিখতে হল?
অফকোর্স! মানে... এমনও হয়েছে দাসানি-২-এর গেট অলমোস্ট ভেঙে ফেলছিলাম। আমি ‘দুগ্গা দুগ্গা’-য় অটো চালিয়েছি, ‘ভজ গোবিন্দ’-তে রিকশা আর এখানে টোটো।
এরপর কী?
এরপর ট্রাক চালানোর ইচ্ছে আছে... হা হা হা হা...
ফ্যানরা কী বলছেন?
সত্যি কথা বলি... আমি ‘বিজয়িনী’ নিয়ে যতটা অকুপায়েড থাকি সোশ্যাল মিডিয়ায় কী বলেন ফ্যানরা জানি না। আর কেকা হিসেবে কোনও শো করিনি, শিগগির করব।তখন সরাসরি মুক্তমঞ্চে অডিয়েন্সের ভিউ বুঝতে পারব। তবে এমনি যা বুঝতে পারি... বাড়ির যাঁরা মায়েরা রয়েছেন, তাঁরা ভীষণভাবে কেকাকে ভালবাসছেন। আমার মাকে মহিলারা অনেক কিছু বলেন। বেসিক্যালি এটা তো শাশুড়ি আর বউমার গল্প, মানে ক্ষমতা বনাম প্রতিভা। কেকা ইজ আ পজিটিভ ক্যারেক্টার এবং সিরিয়ালের পুরোটা জুড়েই কেকার লড়াই। আমাকে ডালি হিসেবে দেখার পরে কেকা হিসেবে অ্যাকসেপ্ট করতে দর্শকের একটু সময় লেগেছে। কিন্তু এখন আই থিঙ্ক আই অ্যাম অ্যাকসেপ্টেড।
শুটের ফাঁকে বা ছুটি থাকলে কী করেন?
সত্যি কথা বলি? আপনি হাসবেন। আমি শুটিংয়ে ব্রেক থাকলে ঘুমোই, শুটিংয়ের পরে ঘুমোই, শুটিংয়ের আগে ঘুমোই (মৃদু হাসি)। এবং... আমি প্রচণ্ড মিউজিক ফ্রিক, খুব ছবি দেখি, আই অ্যাম আ বুক ওয়ার্ম বলতে পারেন। তিনটে জিনিস করি... সাউন্ড, রিড আর ভিজুয়াল। এই তিনটে জিনিস জীবনে থাকতেই হবে।
এখন কী বই পড়ছেন?
‘প্রেমের কবিতা’। পূর্ণেন্দু পত্রী। আমাকে অনেকে হয়তো বলবেন, ‘তোমার এত প্রেম প্রেম কিসের?’ প্রেমটা তো ভাল জিনিস তাই না? প্রেম থেকে অভিনয়ের অনেক এক্সপ্রেশন শেখা যায়।
‘বিজয়িনী’ ধারাবাহিকের দৃশ্য
প্রেম হচ্ছে?
প্রেম! একটা কথা বলি, আমি সিঙ্গলও নই, কমিটেডও নই। আমার নতুন রিলেশনশিপ স্টেটাস হচ্ছে, আই অ্যাম থিঙ্কিং টু বি। থিঙ্কিং টু ম্যারেড অর থিঙ্কিং টু বি গেটিং এনি রিলেশনশিপ অর থিঙ্কিং টু ব্রেক আপ... এটা... তো... আমিও বুঝতে পারছি না (হাসি)।
ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই দল বদল করছেন। আপনি...?
এইটা ভীষণ জটিল প্রশ্ন। আমি তো ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় নতুন, যদিও সাত বছর হয়ে গেল। আগে স্টেবল হয়ে নিই। তারপর নাহয় ভাবনাচিন্তা করা যাবে। যাঁরা পলিটিক্সের দিকে এগোচ্ছেন তাঁরা অলরেডি অনেকটা পথ অতিক্রম করে ফেলেছেন। যে কাজে আছি সেটা আগে ভাল করে করি। কারণ আই নিড আ মিনিমাম নলেজ টু গো দেয়ার। নো ওয়ান নোজ দ্য ফিউচার। লেটস সি হোয়াট উইল হ্যাপেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy