রুক্মিণী মৈত্র।
বৃহস্পতিবারও কলকাতায় ছিলেন। ঝটিকা সফরে সেরেছেন বাংলা ছোট পর্দার প্রথম স্টেজ শো-র শ্যুটিং। শুক্রবার সকালেই মুম্বইয়ের পথে। টানা ৭২ ঘণ্টা ঘুমোননি। কাজের চাপে বলিউড-টলিউডের রোজের যাত্রী! সচেতন ভাবেই দেবকে ছাড়া ছবি করছেন? রাজনীতিতে কবে আসছেন রুক্মিণী মৈত্র? বিমানবন্দরে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দিলেন ‘রুমি’।
প্রশ্ন: সুইৎজারল্যান্ড যাচ্ছেন?
রুক্মিণী: আপাতত মুম্বই যাচ্ছি।
প্রশ্ন: বলিউড-টলিউডের রোজের যাত্রী হয়ে গেছেন তো?
রুক্মিণী: ব্যাপারটা নিয়ে আমিও ভীষণ উত্তেজিত। জীবনের সেরা সময় কাটাচ্ছি বলতে পারেন। কোনও দিন ভাবিনি এক সঙ্গে এত কিছু সামলাতে পারব। পরিবার, কাজ, এক শহর থেকে আরেক শহরে দৌড়ঝাঁপ। দম ফেলার ফুরসত নেই। ভোর ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত শ্যুট চলে। স্টার জলসার পুরস্কার মঞ্চের শ্যুট করব বলে আগের দিন পাঁচটা পর্যন্ত শ্যুট করে কলকাতায় ফিরেছি।
প্রশ্ন: প্রথম স্টেজ শো দেবের সঙ্গে...
রুক্মিণী: আমার একার অনুষ্ঠানও ছিল। দেবের সঙ্গেও করেছি। ছোট পর্দায় প্রথম স্টেজ শো। মহড়া দেওয়ার সময়ই পাইনি। ভিডিয়ো দেখে নাচের স্টেপ তুলেছি। বলিউডে শ্যুটের মাঝখানে ভ্যানিটি ভ্যানে রিহার্স করার চেষ্টা করেছি। কলকাতায় পা দিয়েই শো-এর কস্টিউম ট্রায়াল। তার পরেই রেড কার্পেট। রাত ১২টা পর্যন্ত সে সবেই ব্যস্ত। পরের দিন অনুষ্ঠানের শ্যুটিং। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পরে সব মিটিছে। ওঁরা সবাই ভীষণ সাহায্য করেছেন। আমিও দারুণ খুশি।
প্রশ্ন: কাজের আনন্দে টানা ৭২ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলেন!
রুক্মিণী: আমিও ভেবে অবাক হচ্ছি। সাক্ষাৎকার দিচ্ছি। মুম্বইয়ে নেমেই পা রাখব সেটে। আজ সারা রাত শ্যুটিং।
আগামী কাল সকাল ৭টার পরে হোটেলে ফিরে ঘুমোব।
প্রশ্ন: করোনা আবার ফিরছে। বলিউডের অবস্থা কী রকম?
রুক্মিণী: করোনা ফিরেছে মহারাষ্ট্রে। মুম্বইয়েও তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি, রণবীর কপূর, সঞ্জয় লীলা ভন্সালী আক্রান্ত হয়েছেন। সেটেও প্রচণ্ড কড়াকড়ি। বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, নানা জায়গা থেকে আসা অনেক লোক এক সঙ্গে এখানে কাজ করেন। তার পরেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আমাকেও কলকাতা-মুম্বই করতে গিয়ে কত বার পরীক্ষা করাতে হল! কী করা যাবে? ‘শো মাস্ট গো অন।’
প্রশ্ন: ঘরোয়া ‘রুমি’ বিপুল শাহের ‘সনক’-এ কোন ভূমিকায়?
রুক্মিণী: বলা যাবে না (হাসি)। বিদ্যুৎ জামওয়ালের বিপরীতে অভিনয় করছি। চন্দন রায় সান্যাল, নেহা ধুপিয়া আছেন। অ্যাকশন-থ্রিলার জঁরের ছবি।ব্যস, এখন এ টুকুই...।
প্রশ্ন: সমালোচকদের মুখ বন্ধ। একের পর এক ছবি করছেন দেব ছাড়াই। এই বাছাই সচেতন ভাবেই?
রুক্মিণী: সমালোচনা তো অভিনেতাদের জীবনের একটা অঙ্গ! অন্তত আমি তাই মনে করি। আমার পরিশ্রম আর আমার চরিত্র এই ২টো নিয়ে তো বিতর্ক নেই। তাই হয়ত আমি দেবের সঙ্গে পরপর ৫টি ছবি করেছি এটাই সমালোচনার বিষয়! (হাসি)। আমি যদিও পাত্তা দিই না। আমি অভিনয়ে আসব, দেবের বিপরীতে অভিনয় করব, কোনওটাই ঠিক ছিল না। আমরাও কাউকে বলিনি, আমাদের নিয়ে ছবি করা হোক। পরিচালকদের মনে হয়েছে। তাঁরা নিয়েছেন। আবির চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যুৎ জামালের বিপরীতে সুযোগ পাওয়াটাও মনে করি সময়ের ব্যাপার। যা হচ্ছে, সময় আমায় দিয়ে করাচ্ছে। আগামী দিনে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জিতের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও করব। হিন্দি ছবির শ্যুট শেষ হলেই শুরু করব দেবের ‘কিশমিশ’। আবার দেবের বিপরীতে। কী বলবেন বলুন?
প্রশ্ন: রাজনীতিতে আসার ডাক পাননি? ২১-এর নির্বাচনের একটা বড় অংশ তারকাদের দখলে...
রুক্মিণী: আমাকে এখনও পর্যন্ত ‘বার্থ ডে পার্টি’ ছাড়া অন্য পার্টিতে দেখা যায় না। কারণ? এখনও পর্যন্ত ওই একটি পার্টিতেই আমি বিশ্বাসী। আপাতত ওই পার্টি নিয়েই খুশি। যাঁরা এসেছেন তাঁদের সবার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা। নিশ্চয়ই তাঁরা রাজনীতিসচেতন। তাই পা রেখেছেন। আমি তেমনটা নই।
প্রশ্নঃ কাজ করতে চাইলে রাজনীতিতে আসতেই হবে?
রুক্মিণী: কে বলেছে, রাজনীতিতে না এলে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না? আমি মিশনারি স্কুলে পড়া মেয়ে। আমাদের পড়াশোনার অঙ্গ ছিল সমাজসেবা। যাঁরা অর্থের অভাবে পড়তে পারেননি তাঁদের পড়াতে হত। নানা ফান্ডে চাঁদা তুলতে হত। তাই আমি মনে করি আমার বাড়ির নীচে শুয়ে থাকা পথের কুকুর, বিড়ালকেও যদি রোজ ২বেলা খেতে দিই, সেটাও সমাজসেবা। পাশের বাড়ির বৃদ্ধ কাকুর প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে পারলে মানুষের পাশে দাঁড়ানো হবে। বিশ্বাস করুন, আমি এ টুকুই পারি। যাঁরা কাজ করবেন বলে রাজনীতিতে আসছেন তাঁরা আরও বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের জড়াতে চাইছেন। এবং পারবেনও তাঁরা। আমার ক্ষমতা এ টুকুই।
প্রশ্ন: যে হারে সবাই শাসকদল ছাড়ছেন, দেবেরও সেই সম্ভাবনা আছে?
রুক্মিণী: এটা দেব ভাল বলতে পারবেন। ওঁকেই বরং জিজ্ঞেস করুন।
প্রশ্নঃ যশ-নুসরত বা বনি-কৌশানীর মতো যুগলেরা ভিন্ন রাজনীতি করলে সম্পর্কে কোনও আঁচ পড়বে?
রুক্মিণী: একেবারেই মনে হয় না। এক বাড়িতে ভিন্ন মতাদর্শ থাকতেই পারে। এক ছাদের নীচে সব ভোট যাতে এক দলে না যায় তার জন্যেই নারীদের নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সব ক্ষেত্রে তাঁদের স্বাধীন মত প্রকাশের জন্যেও এই সুযোগ। এ টুকু বিশ্বাস, আস্থা বা সম্মান যদি সম্পর্কে না থাকে তা হলে সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মানে কী?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy