Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Baazigar

সলমন-সেলিমের আইডিয়া ‘চুরি’ করেই শাহরুখকে নিয়ে বাজিগর বানিয়েছিলেন আব্বাস-মস্তান!

শাহরুখ এবং সলমন খানের বন্ধুত্বের কথা ইন্ডাস্ট্রিতে কারও অজানা নয়। কিন্তু এই কর্ণ-অর্জুনের মধ্যে মনোমালিন্যও কম হয়নি। এমনও হয়েছে, মুখ দেখাদেখি, কথা বলাও বন্ধ হয়েছে বহুবার। তবে এক জনের স্টোরি আইডিয়া বেমালুম চুরি করে অন্য জনের ফিল্ম হিট করানোর মতো ঘটনাও যে এই দু’জনের মধ্যে ঘটেছে তা কি আপনি জানতেন?

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২০ ১৪:৫২
Share: Save:
০১ ১৬
শাহরুখ এবং সলমন খানের বন্ধুত্বের কথা ইন্ডাস্ট্রিতে কারও অজানা নয়। কিন্তু এই কর্ণ-অর্জুনের মধ্যে মনোমালিন্যও কম হয়নি। এমনও হয়েছে, মুখ দেখাদেখি, কথা বলাও বন্ধ হয়েছে বহুবার। তবে এক জনের স্টোরি আইডিয়া বেমালুম চুরি করে অন্য জনের ফিল্ম হিট করানোর মতো ঘটনাও যে এই দু’জনের মধ্যে ঘটেছে তা কি আপনি জানতেন?

শাহরুখ এবং সলমন খানের বন্ধুত্বের কথা ইন্ডাস্ট্রিতে কারও অজানা নয়। কিন্তু এই কর্ণ-অর্জুনের মধ্যে মনোমালিন্যও কম হয়নি। এমনও হয়েছে, মুখ দেখাদেখি, কথা বলাও বন্ধ হয়েছে বহুবার। তবে এক জনের স্টোরি আইডিয়া বেমালুম চুরি করে অন্য জনের ফিল্ম হিট করানোর মতো ঘটনাও যে এই দু’জনের মধ্যে ঘটেছে তা কি আপনি জানতেন?

০২ ১৬
সালটা ১৯৯৩। আব্বাস-মস্তান পরিচালকদ্বয় তখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। এর আগে তাঁদের ছবি ‘খিলাড়ি’ বক্স অফিসে মোটামুটি সাফল্য লাভ করেছে। লোকজন চিনতে শুরু করেছে তাঁদের। আব্বাস-মস্তান ঠিক করেন হলিউড ছবি ‘অ্যা কিস বিফোর ডায়িং’-এর অনুপ্রেরণায় একটি হিন্দি ছবি বানাবেন। ওই হলিউড ছবির একটি বিশেষ দৃশ্য তাঁদের বেশ পছন্দ হয়ে যায়।

সালটা ১৯৯৩। আব্বাস-মস্তান পরিচালকদ্বয় তখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। এর আগে তাঁদের ছবি ‘খিলাড়ি’ বক্স অফিসে মোটামুটি সাফল্য লাভ করেছে। লোকজন চিনতে শুরু করেছে তাঁদের। আব্বাস-মস্তান ঠিক করেন হলিউড ছবি ‘অ্যা কিস বিফোর ডায়িং’-এর অনুপ্রেরণায় একটি হিন্দি ছবি বানাবেন। ওই হলিউড ছবির একটি বিশেষ দৃশ্য তাঁদের বেশ পছন্দ হয়ে যায়।

০৩ ১৬
ছবির প্রস্তাব নিয়ে আব্বাস-মাস্তান প্রথমে যান আরমান কোহালির কাছে। কিন্তু আরমান সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন। প্রস্তাব যায় অনিল কপূরের কাছে। কিন্তু তিনিও না বলে দেন। সবার একটাই বক্তব্য ছিল, হিরোর চরিত্রটি বড় বেশি নেগেটিভ। নিজেদের ‘গুড বয়’ ইমেজ নষ্ট করতে রাজি ছিলেন না কেউ-ই।

ছবির প্রস্তাব নিয়ে আব্বাস-মাস্তান প্রথমে যান আরমান কোহালির কাছে। কিন্তু আরমান সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন। প্রস্তাব যায় অনিল কপূরের কাছে। কিন্তু তিনিও না বলে দেন। সবার একটাই বক্তব্য ছিল, হিরোর চরিত্রটি বড় বেশি নেগেটিভ। নিজেদের ‘গুড বয়’ ইমেজ নষ্ট করতে রাজি ছিলেন না কেউ-ই।

০৪ ১৬
বিষণ্ণ পরিচালকদ্বয় সলমন খানকে এ বার সেই চরিত্রটি করার অফার দেন। স্ক্রিপ্ট শোনাতে সোজা সলমনের বাড়িই চলে যান তাঁরা। ছিলেন সলমনের বাবা, প্রখ্যাত চিত্রনাট্যকার সেলিম খানও।

বিষণ্ণ পরিচালকদ্বয় সলমন খানকে এ বার সেই চরিত্রটি করার অফার দেন। স্ক্রিপ্ট শোনাতে সোজা সলমনের বাড়িই চলে যান তাঁরা। ছিলেন সলমনের বাবা, প্রখ্যাত চিত্রনাট্যকার সেলিম খানও।

০৫ ১৬
পুরো স্ক্রিপ্ট পরে বেশ পছন্দ হয় সেলিম-সলমনের। তবে সেলিমের কিছু শর্ত ছিল। স্ক্রিপ্টে কিছু পরিবর্তন করার উপদেশ দেন তিনি। তা হলেই সলমন ওই ছবিতে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

পুরো স্ক্রিপ্ট পরে বেশ পছন্দ হয় সেলিম-সলমনের। তবে সেলিমের কিছু শর্ত ছিল। স্ক্রিপ্টে কিছু পরিবর্তন করার উপদেশ দেন তিনি। তা হলেই সলমন ওই ছবিতে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

০৬ ১৬
সেলিম বলেন, ছবিতে হিরোর চরিত্র বড় বেশি নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর এই ডার্কশেড কিছুটা কমানোর জন্য হিরোর মায়ের চরিত্রটি খানিক বড় করে দিতেও বলেন। যাতে দর্শকের মনে হয়, মায়ের কষ্ট দূর করতেই এমন কাজ করেছেন হিরো। সেলিমের এই প্রস্তাবে কোনও ভাবেই রাজি হননি আব্বাস-মস্তান। সলমনেরও আর সেই ছবিতে কাজ করা হয়ে ওঠেনি।

সেলিম বলেন, ছবিতে হিরোর চরিত্র বড় বেশি নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর এই ডার্কশেড কিছুটা কমানোর জন্য হিরোর মায়ের চরিত্রটি খানিক বড় করে দিতেও বলেন। যাতে দর্শকের মনে হয়, মায়ের কষ্ট দূর করতেই এমন কাজ করেছেন হিরো। সেলিমের এই প্রস্তাবে কোনও ভাবেই রাজি হননি আব্বাস-মস্তান। সলমনেরও আর সেই ছবিতে কাজ করা হয়ে ওঠেনি।

০৭ ১৬
কিন্তু ছবি তাঁরা বানাবেনই। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আব্বাস-মাস্তান এর পর শাহরুখ খানকে ছবিটি করার জন্য অনুরোধ করেন। তাঁদের শেষ বাজি ছিলেন এসআরকে’ই। স্ক্রিপ্ট পড়েই রাজি হয়ে যান শাহরুখ। নেগেটিভ চরিত্রকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন তিনি। এর আগে কোনওদিনও ডার্ক রোলে অভিনয় না করা শাহরুখ নিজের মন-প্রাণ সব দিয়ে দেন এই চরিত্রটির জন্য।

কিন্তু ছবি তাঁরা বানাবেনই। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আব্বাস-মাস্তান এর পর শাহরুখ খানকে ছবিটি করার জন্য অনুরোধ করেন। তাঁদের শেষ বাজি ছিলেন এসআরকে’ই। স্ক্রিপ্ট পড়েই রাজি হয়ে যান শাহরুখ। নেগেটিভ চরিত্রকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন তিনি। এর আগে কোনওদিনও ডার্ক রোলে অভিনয় না করা শাহরুখ নিজের মন-প্রাণ সব দিয়ে দেন এই চরিত্রটির জন্য।

০৮ ১৬
ছবিতে শাহরুখ ছাড়াও ছিলেন কাজল এবং শিল্পা শেট্টি। কাজলের এটি ছিল দ্বিতীয় ছবি। আর শিল্পার প্রথম। নতুন মুখ সবাই। কোন ছবির কথা বলা হচ্ছে, এতক্ষণে নিশ্চয়ই আন্দাজ করেই ফেলেছেন। শাহরুখ-কাজল-শিল্পা অভিনীত আইকনিক ছবি ‘বাজিগর’।

ছবিতে শাহরুখ ছাড়াও ছিলেন কাজল এবং শিল্পা শেট্টি। কাজলের এটি ছিল দ্বিতীয় ছবি। আর শিল্পার প্রথম। নতুন মুখ সবাই। কোন ছবির কথা বলা হচ্ছে, এতক্ষণে নিশ্চয়ই আন্দাজ করেই ফেলেছেন। শাহরুখ-কাজল-শিল্পা অভিনীত আইকনিক ছবি ‘বাজিগর’।

০৯ ১৬
ছবি মুক্তি পায়। বক্স অফিসেও বিপুল সাফল্য পায় সেই ছবি। প্রথম বার শাহরুখ শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পান। কাজলের মধ্যে যে এক অদ্ভুত অভিনয় সত্তা লুকিয়ে রয়েছে তা প্রথম বার এই ছবির মধ্য দিয়েই যেন প্রকাশ পায়।

ছবি মুক্তি পায়। বক্স অফিসেও বিপুল সাফল্য পায় সেই ছবি। প্রথম বার শাহরুখ শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পান। কাজলের মধ্যে যে এক অদ্ভুত অভিনয় সত্তা লুকিয়ে রয়েছে তা প্রথম বার এই ছবির মধ্য দিয়েই যেন প্রকাশ পায়।

১০ ১৬
এতো গেল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথা। আব্বাস-মাস্তানের কাজেরও খুব প্রশংসা হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁরা নিজেদের জায়গা পাকা করে নেন।

এতো গেল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথা। আব্বাস-মাস্তানের কাজেরও খুব প্রশংসা হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁরা নিজেদের জায়গা পাকা করে নেন।

১১ ১৬
সুপার-হাইপড এই ছবিটি দেখার লোভ সামলাতে পারেননি স্বয়ং সেলিম খানও। এত হইচই ফেলেছে শুনে তিনি নিজেও এই ছবি দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। স্ক্রিপ্টে রদবদল করার পরামর্শ না দিলে তো এই ছবি তাঁর ছেলে সলমনের ঝুলিতেই আসত।

সুপার-হাইপড এই ছবিটি দেখার লোভ সামলাতে পারেননি স্বয়ং সেলিম খানও। এত হইচই ফেলেছে শুনে তিনি নিজেও এই ছবি দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। স্ক্রিপ্টে রদবদল করার পরামর্শ না দিলে তো এই ছবি তাঁর ছেলে সলমনের ঝুলিতেই আসত।

১২ ১৬
ছবি দেখে বেরিয়েই সেলিম তো ‘থ’। যা ভেবেছিলেন ঠিক তার উল্টো। সেলিম ভেবেছিলেন মতের মিল না হওয়ার জন্যই বুঝি আব্বাস-মস্তান সলমনকে ছবিতে নেননি। কিন্তু এ কি! সেলিম যা যা পরিবর্তন করার উপদেশ দিয়েছিলেন, তার সব কয়টি নিয়েছেন আব্বাস-মস্তান।

ছবি দেখে বেরিয়েই সেলিম তো ‘থ’। যা ভেবেছিলেন ঠিক তার উল্টো। সেলিম ভেবেছিলেন মতের মিল না হওয়ার জন্যই বুঝি আব্বাস-মস্তান সলমনকে ছবিতে নেননি। কিন্তু এ কি! সেলিম যা যা পরিবর্তন করার উপদেশ দিয়েছিলেন, তার সব কয়টি নিয়েছেন আব্বাস-মস্তান।

১৩ ১৬
হিরোর মায়ের চরিত্র বড় করেছে। হিরোর ডার্ক শেড কমানো হয়েছে। অথচ সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকারের বালাই নেই! যদি তাঁরা পরিবর্তন করবেন ভেবেই ছিলেন, তা হলে তো সলমনকেই চরিত্রটির জন্য বলতে পারতেন।

হিরোর মায়ের চরিত্র বড় করেছে। হিরোর ডার্ক শেড কমানো হয়েছে। অথচ সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকারের বালাই নেই! যদি তাঁরা পরিবর্তন করবেন ভেবেই ছিলেন, তা হলে তো সলমনকেই চরিত্রটির জন্য বলতে পারতেন।

১৪ ১৬
কিন্তু না, আব্বাস বা মস্তান কেউ-ই সলমন বা সেলিমকে কিছু জানাননি। মুখে কিছু না বললেও বেশ রুষ্ট হয়েছিলেন সেলিম। এ তো প্রকারান্তরে আইডিয়া চুরি।

কিন্তু না, আব্বাস বা মস্তান কেউ-ই সলমন বা সেলিমকে কিছু জানাননি। মুখে কিছু না বললেও বেশ রুষ্ট হয়েছিলেন সেলিম। এ তো প্রকারান্তরে আইডিয়া চুরি।

১৫ ১৬
অজয়-সীমা-প্রিয়ার সেই কেমিস্ট্রি আজও ফ্যানেদের মনে অমলিন। ‘বাজিগর’ মুক্তির একই দিনে আরও তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। অজয় দেবগণ-ঊর্মিলা মাতণ্ডকরের ‘বেদরদি’, জিতেন্দ্র এবং মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের ‘সন্তান’ এবং সিদ্ধার্থ, শিল্পা শিরোদকর অভিনীত ছবি ‘পারওয়ানে’।

অজয়-সীমা-প্রিয়ার সেই কেমিস্ট্রি আজও ফ্যানেদের মনে অমলিন। ‘বাজিগর’ মুক্তির একই দিনে আরও তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। অজয় দেবগণ-ঊর্মিলা মাতণ্ডকরের ‘বেদরদি’, জিতেন্দ্র এবং মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের ‘সন্তান’ এবং সিদ্ধার্থ, শিল্পা শিরোদকর অভিনীত ছবি ‘পারওয়ানে’।

১৬ ১৬
কিন্তু সব ছবিকে ছাপিয়ে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল ‘বাজিগর’। না-ই বা থাকুক স্টারকাস্ট। এসআরকেই তো বলেছিলেন, ‘হার কর জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর কহেতা হ্যায়’।

কিন্তু সব ছবিকে ছাপিয়ে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল ‘বাজিগর’। না-ই বা থাকুক স্টারকাস্ট। এসআরকেই তো বলেছিলেন, ‘হার কর জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর কহেতা হ্যায়’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE