Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Anushka Sharma

‘যাঁরা এক সময়ে প্রেরণা জোগাতেন, তাঁদের ইনস্পিরেশন হতে পেরেছি’

নিজের প্রথম ওয়েব প্রযোজনার সাফল্যের পরে বললেন অনুষ্কা শর্মা। ই-মেলে সাক্ষাৎকার দিলেন অভিনেত্রীনিজের প্রথম ওয়েব প্রযোজনার সাফল্যের পরে বললেন অনুষ্কা শর্মা। ই-মেলে সাক্ষাৎকার দিলেন অভিনেত্রী

অনুষ্কা শর্মা।

অনুষ্কা শর্মা।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০০:২২
Share: Save:

প্র: প্রথম ওয়েব প্রযোজনা ‘পাতাল লোক’-এর জন্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া সেরা কমপ্লিমেন্ট কোনটা?

উ: যাঁদের তৈরি ছবি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়, তাঁরা যখন ফোন করে বলছেন ‘পাতাল লোক’ তাঁদের ইনস্পায়ার করেছে, তার চেয়ে বড় কমপ্লিমেন্ট আর হতে পারে না। আমি আর ভাই ব্রিটেন বা আমেরিকান প্রোডাকশন ছাড়াও আয়ারল্যান্ড, টার্কি, ইজ়রায়েলের মতো বিভিন্ন দেশের নানা ধরনের কনটেন্ট ওটিটি-তে দেখতে থাকি। যখনই খুব ছকভাঙা কোনও কনটেন্ট দেখি, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি আমাদেরও এ রকমই কিছু বানাতে হবে এখানে। আর এখন লোকে যখন আমাদের কাজ সম্পর্কে সত্যিই সেটা বলতে শুরু করেছেন, খুবই আনন্দ হচ্ছে।

প্র: সিরিজ়ের কোন বিষয়টি আপনাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছিল?

উ: দ্য রাইটিং অব দ্য সিরিজ়। যে ভাবে জটিল গল্পটা বুনতে বুনতে চিত্রনাট্য এগিয়েছে, সেটা যে কোনও দর্শককেই আকৃষ্ট করবে। সেই সঙ্গে কাহিনির ব্যাকস্টোরিও। আমাদের মাথায় প্রথম থেকেই ছিল, এমন কোনও মোড়কে গল্পটা প্রেজ়েন্ট করতে হবে, যা ভারতীয় দর্শক আগে সে ভাবে দেখেননি। এর জন্য এমন একটা টিম নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম, যাঁরা আমাদের সমমনস্ক। লেখক, পরিচালক, অভিনেতা, টেকনিশিয়ান— প্রত্যেকের কাজই প্রশংসিত হয়েছে।

প্র: আপনার এই টিমে তো অনেক বাঙালি...

উ: হ্যাঁ। ‘পরী’র পরে আরও একবার প্রসিতের (রায়, পরিচালক) সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুবই ভাল লেগেছে। গল্পের ন্যারেটিভে ওর মতো কন্ট্রোল এখনকার খুব কম পরিচালকের মধ্যেই আছে। তা ছাড়া স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রতিভাদের এই সিরিজ়ে কাজে লাগাতে পেরেছি, সেটাই বা কম কী!

প্র: ‘এনএইচটেন’ থেকে ‘পাতাল লোক’... প্রযোজক হিসেবে অনুষ্কা শর্মা কি সাহসী গল্প বলতেই পছন্দ করেন?

উ: একেবারেই। আমার মতে, জোরালো গল্পের চেয়ে প্রভাবশালী আর কিছু হতে পারে না। এই কারণেই এখন সারা দেশের দর্শক ‘পাতাল লোক’ নিয়ে কথা বলছেন। কম বয়সে ‘এনএইচটেন’-এ যে ঝুঁকিটা নিয়েছিলাম প্রথম, তার পরের জার্নিটা প্রযোজক হিসেবে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এর জন্য আমার পুরো টিমের কাছেই কৃতজ্ঞ আমি। বিশেষ করে লেখকদের কাছে। অভিনেতা হিসেবেও আমার বরাবরই মনে হয়েছে, যে কোনও প্রোডাকশনে একজন কাহিনিকারের গুরুত্ব ও সম্মান সকলের ঊর্ধ্বে। ভারতীয় কনটেন্টকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে হলে আমাদের এটা মাথায় রাখতেই হবে।

প্র: অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাকে দর্শক মিস করছেন দীর্ঘদিন। ২০১৮-এ ‘জ়িরো’র পরে আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি আপনাকে...

উ: খুব শিগগিরই আবার দেখতে পাবেন। অভিনয় আমার কাছে এমন একটা বিষয়, যত দিন চলেফিরে বেড়াতে পারব, তত দিন পর্যন্ত করে যাব! এর কোনও বিকল্প নেই। তবে বছর তিনেক আগে এমন একটা হেকটিক শিডিউলে চলে গিয়েছিলাম, পরপর ছবি করছিলাম। তাই যে কোনও ক্রিয়েটিভ মানুষের মতোই আমারও একটু ব্রেকের দরকার ছিল। ‘জ়িরো’র পরে সেই ব্রেকটা নিয়েছিলাম সচেতন ভাবেই। আই ওয়ান্টেড টু টেক সাম টাইম অফ অ্যান্ড রিঅ্যালাইন মাইসেলফ। আর আমার মনে হয় আমি এখন সেই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি, যেখানে শুধুমাত্র খবরে থাকার জন্য আমাকে ছবি সাইন করে যেতে হবে না!

প্র: লকডাউনে দীর্ঘদিন বাড়িবন্দি হয়ে কাটাতে হয়েছে। কী ভাবে সময় কাটালেন?

উ: যে কোনও সময়কেই প্রোডাক্টিভ ভাবে কাজে লাগাতে পছন্দ করি আমি। তবে এই লকডাউনে এমন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছি যে, নিজেকে খুব বেশি দূর পুশ করাও মুশকিল। ইট’স আ ভেরি ট্রাইং টাইম ফর এভরিওয়ান। ‘কেবিন ফিভার’, অর্থাৎ খুব বেশি দিন বাড়িতে বন্দি হয়ে থাকায় যে মানসিক চাপ পড়ে, তার মধ্যে সৃষ্টিশীল কিছু করাও কঠিন হয়ে পড়ে। আমি এর মধ্যে বেকিংয়ে মন দিয়েছিলাম, যেমনটা আগেও করতাম সময় পেলেই। এ ছাড়া প্রচুর সিনেমা আর সিরিজ়ও দেখে ফেলেছি এর মধ্যে। ঘরের সব জিনিসপত্র সাজিয়েগুছিয়ে রাখতেও পছন্দ করি আমি, তাই সে সব করেও নিজেকে ব্যস্ত রাখছিলাম।

প্র: এই অতিমারিতে অনেকেই নিজের জীবনবোধ বা উপলব্ধি প্রকাশ করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। করোনাভাইরাস প্যানডেমিক আপনাকে কী শেখাল?

উ: একটা কথা খুব ভাল করে বুঝতে পারলাম যে, আমরা প্রত্যেকেই অন্যের উপর কোনও না কোনও ভাবে নির্ভরশীল। অনেকেই বোকার মতো ভেবে নিই, আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। অথচ যিনি মাঠে ফসল ফলাচ্ছেন, যে ভিনরাজ্যের শ্রমিক হাইরাইজ় তৈরি করছেন, আবার যিনি ঠান্ডা ঘরে বসে ল্যাপটপে মুখ গুঁজে কাজ করছেন— প্রত্যেকের অবদান রয়েছে আমাদের জীবনে। আর বিশেষ করে এই প্যানডেমিকে ফ্রন্টলাইন ওয়র্কারদের কথা বলব, যে চিকিৎসাকর্মী, পুলিশকর্মীরা অক্লান্ত ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মানুষের সেবায়। বাড়িতে বাধ্য হয়ে কাটানো এই সময়টায় যেন সেই সব মানুষদের সঙ্গে অনেক বেশি করে একাত্ম বোধ করলাম, যা আমাকে আরও বিনয়ী হতে সাহায্য করবে। জীবনে যা অ্যাচিভ করতে চাই, সকলের মিলিত প্রয়াস ছাড়া তা যে সম্ভব নয়, সেটা বুঝলাম। আর ঠিক এই কারণেই অন্যের পিঠ চাপড়ে দিতে আমরা যেন কখনও ভুলে না যাই।

অন্য বিষয়গুলি:

Anushka Sharma Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy