সৌমিতৃষা নিজস্ব চিত্র
মিষ্টি নিয়ে ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্রাভিনেত্রীর মিষ্টির প্রতি ভালবাসা থাকা অস্বাভাবিক নয়। শুটিংয়ের প্রয়োজনে সেটে প্রচুর মিষ্টি আসে, কিন্তু ফাইনাল টেকের আগেই তার আয়ু শেষ! হাসতে হাসতে ‘মিঠাই’ ওরফে সৌমিতৃষা কুণ্ডু বললেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমি আর পরিচালক রাজেনদা (রাজেন্দ্র প্রসাদ দাস) সিদ্ধহস্ত।’’
এই চরিত্রটির জন্য নিজেকে তৈরি করতে গিয়ে তাঁকে ময়রার কাছ থেকে শিখতে হয়েছে কী ভাবে দুধ জ্বাল দিতে হয়, ছানা পাকাতে হয়। জিলিপি ভাজার কায়দা, মনোহরা বানানোও আয়ত্তে আনতে হয়েছে। বারাসতের মেয়ে সৌমিতৃষার কলকাতায় আসাটা বেশ আকস্মিক। একটি ব্র্যান্ডের হয়ে মডেলিং দিয়ে শুরু হয়েছিল পথচলা। সে সময়ে চ্যানেলের তাঁর ছবি পছন্দ হয়ে যাওয়ায় কোনও অডিশন না দিয়েই সুযোগ পান ‘এ আমার গুরুদক্ষিণা’ ধারাবাহিকের নেগেটিভ চরিত্রে। তার পর একে একে ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’, ‘গোপাল ভাঁড়’, ‘অলৌকিক না লৌকিক’ ইত্যাদি সিরিয়ালের পরে সুযোগ আসে ‘কনে বউ’-এর প্রধান চরিত্রে। এই ধারাবাহিকের কাজ শেষ হতে না হতেই সুযোগ পান ‘মিঠাই’-এ। ‘‘প্রায় পাঁচ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি। কিন্তু আজ অবধি কাজ পেতে আমাকে অডিশন দিতে হয়নি,’’ ঠোঁটে তাঁর গর্বের হাসি।
সৌমিতৃষার সঙ্গে মিঠাইয়ের অনেক মিল থাকলেও মিল নেই শুধু একটা জায়গায়। ‘‘রান্নাবান্না তো দূরের কথা, এখনও গ্যাস জ্বালাতে জানি না,’’ একগাল হাসি মিঠাইয়ের মুখে। আরও বললেন, ‘‘আমার হাতে কোনও জিনিস থাকলেই পড়ে যায়। সে দিন শুটিং ফ্লোরে হাত লেগে গাছের টব ভেঙে গেল। তার আগেও শুটিংয়ের প্রপস উল্টে ফেলেছি!’’ নিজেও ফ্লোরে বহুবার পড়ে গিয়েছেন, চোটও পেয়েছেন। ‘‘সারা দিনে একবার-দু’বার পড়ে যাওয়া, হাতে-পায়ে চোট লাগা, গুঁতো খাওয়ার ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটবেই। কোনও দিন কিছু না ঘটলে সকলে জানতে চায়, সুস্থ আছি কি না!’’
সৌমিতৃষা মনে করেন অল্প সময়ের মধ্যে ছোট পর্দায় তাঁর এই সাফল্যের কান্ডারি বাবা-মা। ‘‘আমার স্বপ্নটা সত্যি করেছে বাবা আর মা। আমার সঙ্গে প্রথম দিন থেকে কলকাতায় রয়েছে ওরা। আজও সব সময়ে পাশে থেকে আমাকে আগলে রাখে,’’ আবেগপ্রবণ অভিনেত্রী। আর তাই কখনও বাবা-মায়ের বিশ্বাস ভাঙেননি তিনি। বললেন ‘‘নিজের প্রথম পারিশ্রমিকের পুরো টাকাটা মা-বাবার হাতে তুলে দিয়ে প্রণাম করি। তবে একটা বাড়ি কিনে উপহার দিতে পারলে ওটাই আমার দেওয়া সেরা উপহার হবে।’’
অভিনেত্রী শুধু মা-বাবার আদুরেই নন, সেটেও সকলে তাঁকে ভালবাসে। এমনকি মেকআপ রুমে সহ-অভিনেত্রী তাঁকে খাইয়েও দেন! বললেন, ‘‘একমাত্র সন্তান হওয়ায় বাড়িতে খুবই আদুরে। তাই শুটিংয়ের সময়ে একা একা খেতে কষ্ট হয়। তাই কখনও আমার মেকআপদিদি বা অর্পিতাদি (অর্পিতা মুখোপাধ্যায়) আমাকে খাইয়ে দেয়। এমনকি মেকআপ রুমে জিনিসপত্র ছড়িয়েছিটিয়ে রাখলে সেগুলোও অর্পিতাদি গুছিয়ে দেয়।’’ এহেন সৌমিতৃষার একটাই আফসোস, ‘‘বারাসত গার্লস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিকে আর্টস বিভাগে থার্ড হয়েছিলাম। কিন্তু অভিনয় করে এখন কোনও রকমে পাশ করতে পারলেই বাঁচি।’’ অনার্স পড়তে সেন্ট পলস কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সিরিয়ালের কারণে তা ছাড়তে বাধ্য হন। এখন ওপেন ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি অনার্স পড়ছেন সৌমিতৃষা। তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি।
ব্যস্ত অভিনেত্রীকে প্রেমের কথা জিজ্ঞেস করতে বললেন, ‘‘আমি একটু পুরনো ধ্যান-ধারণার মেয়ে। এমন কাউকে এখনও পাইনি যে লংটার্ম রিলেশনশিপে বিশ্বাস করে। টুকটাক প্রেম করতে পারব না। আমার অগাধ ভালবাসা একজনের জন্য তোলা আছে। যে দিন সেই দুর্ঘটনা ঘটবে, সকলকে চেঁচিয়ে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy