শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় ও রোশন সিংহ।
এমনিতে কাউকে সাক্ষাৎকার দেন না তিনি। আনন্দবাজার ডিজিটালকে শর্ত দিয়েছিলেন, শ্রাবন্তীকে নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। কিন্তু দিলখোলা রোশন সিংহ নিজের নতুন ব্যবসা থেকে সম্পর্ক সব নিয়েই কথা বললেন।
রোজ ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করেন আপনি। অথচ সাক্ষাৎকার দিতে চান না...।
আমার কাজ নিয়ে তো কেউ জানতে চায়নি কখনও! শুনুন, আমি একটা সময়ে একটা এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু সুপারভাইজার ছিলাম। ১৩ বছর ওই চাকরিটা করেছি। পরবর্তীকালে চাকরি করতে করতেই দু’টো জিম খুলে ফেলি। শরীরচর্চা আমার প্যাশন। এখন জিমের প্রমোশনেই ইনস্টাগ্রামে থাকি। তবে এই সোশ্যাল মিডিয়া খুব খারাপ জায়গা।
কেন?
আরে, আমার এক বন্ধু সুশান্ত সিংহ রাজপুতকে নিয়ে একটা ছবি পাঠিয়েছিল। বলেছিল, হাসিটা ঠিক আমার মতো। সেটাই আমি ইনস্টায় পোস্ট করি। ব্যাস! ট্রোলড! লোকে লিখতে শুরু করল, আমিও এ বার সুশান্তের মতো গলায় দড়ি দিয়ে মরব! মেরেই ফেলল আমায়! এখন যা-ই পোস্ট করি, লোকে খারাপ বা ভুল কমেন্ট করতেই থাকে। আর শুধু তো আমার ওপর নয়। ওর (শ্রাবন্তীর নাম না করে) প্রোফাইলেও যা খুশি লেখা হচ্ছে। লোকে ওকে ওর মতো থাকতে দেবে না! সোশ্যাল মিডিয়া খুব খারাপ জায়গা হয়ে গিয়েছে। যে যা করছে করতে দাও। আনএথিকাল খবর করে কী লাভ?
একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে সংসার করা কতটা চ্যালেঞ্জিং?
আর পাঁচটা সংসারের মতোই আমাদের সংসার ছিল। ও যে সুপারস্টার, সেটা বাড়িতে থাকলে কোনওদিন বুঝতে দেয়নি। এমনকি, আমার পরিবারের সঙ্গেও মিশে গিয়েছিল। ওর ছেলের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল আমার। ৪০৭ (মালবাহী ম্যাটাডর) চালায় আমার এক বন্ধু। তার সঙ্গেও ও মিশতে পারত। তবে আমি মনে করি, যা হয় সবসময় ভালর জন্যই হয়। এর বেশি আমি কিছু বলব না। প্লিজ!
চাকরিটা ছাড়লেন কেন?
দেখুন, ওই চাকরি থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। নিয়মানুবর্তিতা। কথা বলার ধরন। পোশাক নিয়ে সচেতনতা। এদিক থেকে ওদিক হলে চাকরিতে লাল দাগ। অন্য দিকে কত রকমের মানুষ দেখেছি। শাহরুখ খান থেকে অমিতাভ বচ্চন— সকলে আমার ফ্লাইটে চড়েছেন। সুস্মিতা সেনের সঙ্গে আড্ডা হয়েছে। একবার সোহেল আর সলমন খানও ছিলেন। মুম্বই থেকে হায়দরাবাদ যাচ্ছিলেন। আমরা মজা করে বলেছিলাম, স্যারের সঙ্গে ডিনার করব। উনি সেটা শুনে রাতেই পুরো টিমের জন্য হায়দরাবাদের হোটেলে বিরিয়ানি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
তখন সুসময়। শ্রাবন্তী আর রোশন।
তবুও চাকরি ছাড়লেন?
আমি খুব আবেগপ্রবণ। ৩১ ডিসেম্বর ছুটি না পেলে ভেঙে পড়তাম। হোলিতে কাজ করতে ভাল লাগত না। আর কলকাতা ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কথা আমি এখনও ভাবতে পারি না।
আপনি তো পঞ্জাবি?
হ্যাঁ। শুধু পদবিতে। জানেন, আমি পঞ্জিকা দেখতে পারি! ছোটবেলায় পাশের বাড়ির গায়ত্রীপিসি আমায় মানুষ করেছেন। তাই পুরোদস্তুর বাঙালি হয়ে উঠেছি।
কখনও ছবিতে অভিনয় করতে ইচ্ছে হয়নি?
আমি তো সিনেমা নিয়েই সংসার করেছিলাম। পুরো ইন্ডাস্ট্রি আমার চেনা। আমার জিমে শ্যুটিংও হয়েছে। কিন্তু আমি ‘নেম’ বা ‘ফেম’ কিছুই চাইনি। এখন যদিও অন্য কারণে, উল্টো দিক থেকে নাম হয়ে যাচ্ছে! তবে আমার মনে হয়, আমি অভিনয় করলে প্রযোজকরা ফেল করে যাবে। (হেসে) সেটা হতে দেওয়া যায় না।
নতুন বছরে কী ভাবছেন?
১৮ বছর বয়স থেকে চাকরি করেছি। নিজের ওপর বিশ্বাস আছে আমার। সেই জায়গা থেকেই ক্লোদিং ব্র্যান্ড লঞ্চ করছি। ট্রি-চিয়ার্স। টি শার্ট হবে নানারকম লেখা দিয়ে। মাস্ক তো থাকবেই। ওটা এখন জীবনের অঙ্গ। মার্চ মাসে কোনও সেলিব্রিটিকে দিয়ে লঞ্চ করাব। দেখি।
একলাই ভাল আছেন!
ঘরের সেলিব্রিটিকে রাখবেন?
নাহ্! অবশ্যই বাইরের লোক। পুরো টলিউড আমার পরিবার। সকলের সঙ্গে আলাপ আছে। আপনি খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন সকলের সঙ্গে আমার কেমন সম্পর্ক।
আপনি তো ভীষণ কথা বলতে ভালবাসেন...।
একদিন আসুন না। এয়ারলাইন্সে থাকার সময় এত মানুষ দেখেছি, যে গল্প করতে করতে এক ঘন্টা কখন পেরিয়ে যাবে বুঝতে পারবেন না। আরে আমার নিজস্ব কাজের ক্ষেত্র আছে! জীবনের লড়াই আছে। আপনিই তো সেগুলো প্রথম জানতে চাইলেন।
আপনি কিন্তু শ্রাবন্তীর বর হয়েই থেকে গিয়েছেন...।
হ্যাঁ। সেটা খুব বুঝতে পারি। কিন্তু আমার কাজের মধ্যে দিয়ে, নতুন ভাবনা দিয়ে এ বার চলব।
আপনি সম্পর্কটাকে কতটা হ্যান্ডল করতে পারলেন বলে মনে হয়?
এই তো হ্যান্ডল করছি। করেই চলেছি। বললাম না, যা হয় ভালর জন্যই হয়।
শ্রাবন্তীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে?
নাহ্। এখন তো আর যোগাযোগ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy