চিত্রগ্রাহকদের উদ্দেশে অভিনেত্রী বলছিলেন, ‘‘মিতিন মাসি বেশি হাসে না। একটু গম্ভীর থাকে।’’ তবে কোয়েল মল্লিককে যাঁরা চেনেন, তাঁর অমায়িক হাসি তাঁরা সহজে ভোলেন না। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের মিতিন মাসিকে রক্ত-মাংসের করে তুলতে কোয়েলের সুপারস্টার ইমেজ ভাঙছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ‘‘ব্যোমকেশ লার্জার দ্যান লাইফ, শবর লালবাজার থেকে বেরিয়ে আসা আর মিতিন মাসি হোমমেকার আবার গোয়েন্দাও। তাই চরিত্রটা বেশ চ্যালেঞ্জিং।’’
দক্ষিণ কলকাতার এক অট্টালিকায় ছবির শুট চলছিল। পুরো বাড়ি জুড়ে এলাহি কাণ্ড! মনিটরে স্থির চোখ পরিচালকের। শটের ফাঁকে জুন মাল্যের চুলের কোন দিক ঠিক করতে হবে, দেখিয়ে দিলেন তিনি। ছবিতে বাড়িটি এক পার্সি চরিত্রের, যার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সেই পার্সি চরিত্রে বিনয় পাঠক ও তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায় জুন। ফ্লোরে প্রবেশের আগে বিনয় বলছিলেন, ‘‘অনেক বছর আগে ‘ভায়া দার্জিলিং’ নামে একটি ছবি করেছিলাম। সেখানে অরিন্দমদার সঙ্গে বন্ধুত্ব। তখনও উনি পরিচালক হননি। সম্প্রতি আবার ওঁর সঙ্গে দেখা হয়।’’ ধানবাদে বড় হওয়ার সুবাদে বাংলা ও বাঙালিদের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। ছবিতে বাংলা সংলাপও বলবেন তিনি। খাবারের মধ্যে আলুপোস্ত, বেগুন ভাজা তাঁর খুবই পছন্দের। শুটের ক্যান্টিনে উঁকি দিয়ে দেখা গেল, লাঞ্চে সে দিন আলুপোস্ত রয়েছে।
কোয়েল ফ্লোরে আসার পরেই বিনয়, কোয়েল ও পরিচালক একসঙ্গে বসে শট বুঝে নিলেন। শট নিয়ে বিনয়ও তাঁর চিন্তাভাবনা অরিন্দমকে বলছিলেন। চরিত্রে হাসার সুযোগ না থাকলেও বিনয়ের মজাদার কথা শুনে শটের ফাঁকে মনভরে হাসছিলেন কোয়েল। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘সাইকোলজি পড়ার সুবাদে মানুষকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করা আমার স্বভাবের মধ্যেই রয়েছে। মিতিন মাসির চরিত্র করতে গিয়ে সেটা খুব সাহায্য করছে। আর আমি বরাবর বলি, সব মেয়ের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে। আমার মা-মাসিমা-বৌদির মধ্যেও মিতিন মাসি রয়েছে। কারও মধ্যে সুপ্ত ভাবে, কারও মধ্যে জাগ্রত।’’
সেটের দৃশ্য
পরিচালক জানালেন, ছবিতে নিও-ক্ল্যাসিকাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে। কালার প্যালেট, লুকে সফ্টনেস রাখা হচ্ছে যা সাধারণত থ্রিলারে দেখা যায় না। গল্পে ও মিতিনের চরিত্রে বড়সড় পরিবর্তন করা হয়েছে। অরিন্দম বলছিলেন, ‘‘ঝুঁকি নিয়েই পরিবর্তন করেছি। আশা করি, দর্শক পছন্দ করবেন।’’ ছবিতে মিতিনের বোনঝি টুপুরের চরিত্রে রিয়া বণিক। আবহের সঙ্গে মিলিয়ে ইলেকট্রো-ক্ল্যাসিকাল মিউজ়িক কম্পোজ় করেছেন বিক্রম ঘোষ। একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রাশিদ খান।
বিনয়, জুনের সঙ্গে পরিচালক
মিতিন মাসি এমন একটি বহুস্তরীয় চরিত্র, যার সাহিত্যমূল্যও রয়েছে। কোয়েল কি বাড়তি চাপ অনুভব করছেন? এক গাল হেসে বললেন, ‘‘অরিন্দমদার ঘাড়ে সব চাপ দিয়ে দিয়েছি। নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিয়েছি। সে দিন আমার হেয়ার ড্রেসার কী নিয়ে একটা কথা বলছিল... আমি পরপর ‘কবে’, ‘কোথায়’, ‘কেন’ প্রশ্ন করলাম। তাতে ও বলল, ‘তুমি তো বাস্তবেও মিতিন মাসি হয়ে গিয়েছ।’ চরিত্রের আভাস যখন বাস্তব জীবনেও অজান্তে ভাগ বসায়, তার মানে আমার হোমওয়র্ক সফল।’’ পরিচালকও আশ্বাস দিলেন, ‘‘এ ছবি ছোট-বড় সবার জন্য। যে যার মতো রসদ খুঁজে নেবে।’’
ছবি: নিরুপম দত্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy