তারকাদের রাখীবন্ধন।
বাংলার তারকাদের থেকে একই প্রশ্নের দু’রকম জবাব মিলল নিউ নর্মাল দুনিয়ায়। একদল একটা দিন সামাজিক দূরত্ব সরিয়ে রেখে ভাই, দাদাকে নতুন করে বাঁধলেন রাখীর বাঁধনে। আর এক দলের কাছে সুস্থতা সবার আগে। তাই ভার্চুয়ালি সারলেন রাখীবন্ধন।
কোন দলে কোন জন?
আজকের দিনে দাদা বা ভাইকে দূরে রাখেননি সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীমা ভট্টাচার্য, পল্লবী চট্টোপাধ্যায়। ভার্চুয়ালে রাখীর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেল অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ-তারকা নুসরত জাহান, অপরাজিতা আঢ্য, ত্রিধা চৌধুরীকে।
‘উৎসব’ বাড়িতে উৎসব পালন হবে না কী করে হয়? সামনে আঁচল দিয়ে রানি শাড়িতে, মানানসই গয়না আর খোলা চুলে সেজে পল্লবী তাঁরদাদা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ওরফে বুম্বাদার হাতে বাঁধলেন রাখী। কপালে এঁকে দিলেন লাল তিলক। দাদার পরনে নীল পঞ্জাবি, সাদা চোস্ত। একা পল্লবী নন, অন্য বোনেরাও একে একে এরপর বুম্বাদার হাতে রাখী পরান।
সেই ছবি ভিডিয়ো আকারে বিকেলে পোস্ট করেন পল্লবী। সঙ্গে ক্যাপশন, পৃথিবীর সবথেকে পবিত্র এবং অটুট সম্পর্ক, ভাই ও বোনের সম্পর্ক, যা আমাদের বন্ধনের প্রকৃত মানে শেখায়। আজ সেই বন্ধনকে আরও একবার উদযাপন করার পালা। দেখতে দেখতে ভাইরাল সেই ভিডিয়ো।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজকের দিনে দূরে রাখেননি ভাইকে। রকমারি খাবার আর হাতে রাখী নিয়ে তৈরিই ছিলেন। ভাই আসতেই পালন করেন সমস্ত রেওয়াজ। ছবি সোশ্যালে আসতেই নেটাগরিকদের মন জয় করে নিয়েছে নিমেষে। সঙ্গে মনপসন্দ ক্যাপশন, ‘রাখীপূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানাই সকলকে। খুব ভাল থেকো, ভাল রেখো..’।
একই ভাবে ভাইয়ের হাতে রাখী বাঁধতে দেখা গেছে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীমা ভট্টাচার্যকেও। পাটভাভা পেস্তা সালোয়ার, ভেজা চুল বলছে, স্নান সেরে সক্কাল সক্কাল শুভ কাজ সেরেছেন শ্রীমা। ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর অনুরাগীদেরও রাখীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
রয়েছেন সাংসদ-তারকা দেবও। আসন পেতে যত্ন করে বসিয়ে, কপালে তিলক এঁকে তাঁর হাতে রাখী বেঁধে দিয়েছেন বোন।
সাবধানের মার নেই, এই কথায় বিশ্বাসী উপরে বলা আর এক দল তারকা। সেই কথা জপে অর্পিতা সোশ্যালে পোস্ট করেছেন রাখীবন্ধনের আসল মাহাত্ম, ‘১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পর, বাঙালীদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও একতা বজায় রাখার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘রাখীবন্ধন’উৎসব শুরু করেন। রবি ঠাকুরের ডাকে সারা দিয়ে কলকাতা, ঢাকা ও সিলেটে বসবাসকারী শয়ে শয়ে হিন্দু-মুসলমান একতার প্রতীক হিসেবে একে অপরকে রাখী বাঁধে। পশ্চিম ও পুর্ব বাঙলার মানুষদের অনমনীয় ও ব্যাপক প্রতিবাদের ফলস্বরূপ ছ’বছর পরে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এই সাফল্য ছিল স্বল্প দিনের, ধর্মীয় বৈষম্যের ফলে ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গ করা হয়।’
ভিন্ন ধারার অভিনেত্রী অর্পিতা যে সবার থেকে অন্য কিছু তুলে ধরবেন সেটাই স্বাভাবিক। বাঙালিয়ানায় মাখামাখি লাল পাড়, সাদা বেনারসী, হাত খোঁপা, বিন্দি, সোনার গয়নায় সেজেছেন অর্পিতা। পাশে লাল-গেরুয়া রঙা রাখীর জ্বলজ্বলে ছবি।
নুসরত শেয়ার করেন গত বছরের রাখীবন্ধনের ছবি। যেখানে নিখিল জৈনের হাতে রাখী বাঁধার পর তাঁর হাতেও রাখী পরিয়ে দিয়েছেন ননদ। সেই ছবি সোশ্যালে ভাইরাল তো বটেই। অনুরাগীরা খুব খুশি তাঁর এই সর্বধর্মসমন্বয় মনোভাবে।
তবে আসর জমিয়ে দিয়েছেন ত্রিধা আর তাঁর দাদা। দু’জনে একই সময়ে নিজেদের কিচেনে দিনটিকে স্মরণ করে প্রিয় রেসিপি রেঁধেছেন। বোনের জন্য দাদা রেঁধেছেন জিভে জল আনা মুচমুচে ফিশ ফ্রাই। ত্রিধার রেসিপি গাজরের কেক!
অপরাজিতা আঢ্য-র কথা না বললে কী করে গল্প শেষ হয়? দর্শক, নেটাগরিকদের প্রচণ্ড পছন্দের ‘অপা’ ২০১২ থেকে ২০২০— আট বছরের রাখী উৎসবের ছবির কোলাজ বানিয়ে পোস্ট করেছেন। ছবিতে, তাঁর দু’হাত ভর্তি রাখী বলে দিচ্ছে, অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বেড়েছে বই কমেনি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy