পুরুষের চরিত্র নিয়ে একমুখী আক্রমণ অভিনেত্রী গুলশনারা খাতুনের! গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্য উত্তাল আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ৩১ বছরের চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদ করছেন সমাজের সর্ব স্তরের মানুষ। আগামী ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে টলিপাড়ার অভিনেত্রীরা পথে নামার বার্তা দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। পিছিয়ে নেই টলিউডের পুরুষরাও। পরিচালক থেকে অভিনেতা— অনেকেই শামিল এই প্রতিবাদে। এর মাঝেই টেলি অভিনেত্রী ও নাট্যকর্মী গুলশনারা খাতুনের মন্তব্যের জেরে তাঁকে নিয়ে চর্চা নেটপাড়ায়। টলিপাড়ার শিল্পীরা গুলশনারাকে ফেসবুক থেকে ‘আনফ্রেন্ড’ করতে শুরু করেছেন একে একে।
‘মেয়েরা রাত দখল করো’ প্রতিবাদ মিছিল হতে চেলেছে ১৪ অগস্ট শহর কলকাতায়। শ্যামবাজার, যাদবপুর, অ্যাকাডেমি ও কলেজ স্ট্রিটে জমায়েত হবে। এ ছাড়াও, সারা রাজ্যে, এমনকি রাজ্যের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে মধ্যরাতের জমায়েতের ডাক। বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হবেন মহিলারা, সঙ্গী হবেন পুরুষেরাও। গুলশনারা নিজেও এই প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটবেন বলেই জানিয়েছেন।
এ সবের মাঝে ফের সরব হন গুলশনারা, তিনি ফেসবুকে লেখেন, “প্রতিটি পুরুষের চরিত্রেই ধর্ষক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি চিৎকার করে বলছি। যদি আপত্তি থাকে আমাকে বন্ধুতালিকা থেকে সরিয়ে দেবেন।” আর তাতেই প্রায় গর্জে উঠেছেন টলিপাড়ার অনেকে। সেখানে শুধু পুরুষেরা নন, মহিলারাও প্রতিবাদ করেছেন।
পোশাকশিল্পী অভিষেক রায় যেমন বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রীর এমন মন্তব্যে। অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় এটা তুমি তোমার কোনও অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছ। কিন্তু এ ভাবে তুমি বলতে পারো না। তোমার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’ নিম ফুলের মধু ধারাবাহিকের অভিনেত্রী তনুশ্রী গোস্বামী লিখেছেন, “কথাটা গায়ে নিলাম। নিজের বাবার কথা মনে হল। তোর বাবার কথাও মনে হল। ওঁকে নিয়ে তোর লেখাও পড়েছিলাম। কোথাও তো এ রকম মনে হয়নি। কী জানি হয়তো কিছু আছে। যা-ই হোক, তোর অভিনয়ের ভক্ত আমি। ওটুকুই থাক। আমরা এক প্ল্যাটফর্মে কাজ করি। সেটুকু শ্রদ্ধা রেখে চলব। আর যে হেতু তুই তোর বক্তব্য পছন্দ না হলে আনফ্রেন্ড করতে বলেছিস, তাই সেটাই করলাম। ভাল থাকিস।’’ এক খ্যাতনামী পুরুষ নেটপ্রভাবীও তাঁকে জানিয়ে ইতিমধ্যেই বন্ধুতালিকা থেকে বার করে দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে গুলশনারা জানান, তিনি তাঁর বক্তব্যে অনড়। পাশপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘‘ধর্ষক মানেই পুরুষ। ‘পুরুষ’ হলেই ধর্ষক নন।’’ গুলশনারা এও জানান, তিনি চিন্তিত এই সমাজের পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে। এই ঘটনার দায় একা পুরুষদের নয়। নারীদের সচেতন হতে হবে, তাঁদের ছেলেদের সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আসলে যখন আমি প্রথম শ্রেণিতে পড়ি, তখন সাঁতার শিখতে গিয়ে প্রশিক্ষকের হাতে প্রথম বার যৌন হেনস্থার শিকার হই। তখন এ সব কিছু বুঝতামও না। তার পর সাঁতারে যাওয়া বন্ধ করে দিলাম। জল দেখলেই ভয় করত। আসলে মেয়েদের একটা মাংসপিণ্ড হিসেবে দেখা হয়। বাসে ট্রামে অটোতে, সর্বত্রই তাই। আর আমি আমার করা এই মন্তব্যের কারণ ইতিমধ্যেই হুমকি পাচ্ছি। তবে পরোয়া করি না সে সব আর। ইন্ডাস্ট্রির যে সব বন্ধু ‘আনফ্রেন্ড’ করছেন, করতেই পারেন। তাঁদের কখনও প্রয়োজন পড়লে পাশে থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy