ছেলে অনীশই দেবশ্রীর প্রিয় বন্ধু।
বিগত কয়েক মাসে জীবনে ঝড় বয়ে গিয়েছে। অনেক ওঠানামা দেখেছি। ভেঙে পড়েছি। ভাঙা টুকরোগুলি আবার জড়ো করে সাজিয়েছি নিজেকে। আর এই সব কিছুতে পাশে পেয়েছি আমার প্রিয় বন্ধুকে। আমার ছেলে অনীশকে।
আমি যখন মাত্র ১৯, তখন অনীশ আমার জীবনে এল। আমি মা হলাম। প্রথম বার যখন কোলে পেলাম, দেখলাম সাদা ফুটফুটে একটা বাচ্চা। মাথা ভরতি চুল। বুঝেছিলাম, ওর সঙ্গে সে দিন আমারও নতুন করে জন্ম হয়েছিল। মা হিসেবে, বন্ধু হিসেবে। ভেবে রেখেছিলাম, সারা জীবন বন্ধুর মতো পাশে থাকব ওর।
এর পরে আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি। ওকে তিলে তিলে বড় হতে দেখেছি। বন্ধুদের মতো সুখ, দুঃখ, ‘টপ সিক্রেট’ সব কিছু ভাগ করে নিয়েছি আমরা। ভাবতেই পারি না, আমার সেই ছোট্ট বন্ধুটা আজ এত বড় হয়ে গিয়েছে। আমার মাথা ছাড়িয়ে গিয়েছে। রাস্তায় একসঙ্গে বেরোলে লোকে ভাবে ও আমার প্রেমিক! শুধু উচ্চতায় নয়, মানসিক ভাবেও আমার ছেলে যেন এক লাফে অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে। আমার বন্ধু শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত, নিয়ম করে নিরামিষ খায় সে, সপ্তাহে একটা করে ক্লাস করে ইস্কনে। কখন যে নিজেকে এত গুছিয়ে নিল, জানতেই পারলাম না। ছোটবেলায় মা-বাবার বিচ্ছেদ দেখেছে। তখনও একই ভাবে আমার পাশে ছিল।
আমি মাঝেমাঝে ওকে প্রশ্ন করি, “এই যে তুমি জন্ম নিলে বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে, অথচ এখন আমার পদবি ব্যবহার করছ, তোমার খারাপ লাগে না?” ও বলে, “আমরা সবাই তো এক একটি আত্মা মা। আমাদের নাম, পদবি হয় না।” ওর মুখে এই কথাগুলো যত শুনি, অবাক হই। বুঝি আমার এই বন্ধুই আমার বৈতরণী পার করে দেবে।
আমি জানি ও অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। এর পরে আমাকে একা রেখে বিদেশে পড়তে চলে যাবে। কিন্তু ওর জীবনের প্রতিটি ধাপে আমি থাকব। ঠিক যে ভাবে ও থেকেছে আমার সঙ্গে। আজ বন্ধুত্ব দিবসে ওকে বলব, কখনও যদি মন ভাঙে, ওর বন্ধু গল্প আর আইসক্রিম নিয়ে অপেক্ষা করে থাকবে। আমাদের বন্ধুত্ব ধ্রুবক। ভালবাসা চিরন্তন।
(লেখিকা অভিনেত্রী এবং শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের দিদি)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy