মানালি দে এবং অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়।
সেটা ২০১৭। ‘নিমকি ফুলকি’-র শ্যুট চলছে। পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায় ব্যস্ত দৃশ্য বিশ্লেষণ করতে। ভাল করে সবটা বুঝে নিচ্ছেন অভিনেত্রী মানালি দে। পরিচালক মহাশয় ‘অ্যাকশন’ বললেই দিতে হবে নিখুঁত শট! অভিমন্যু-মানালির গল্পের শুরুটা ছিল এ রকমই। টানা ১১ দিন শ্যুটিং। আর সকলের চোখ এড়িয়ে তখনই একটু একটু করে নিজেদের সম্পর্কের ভূমিকা লিখেছেন তারকা দম্পতি। পরিচালক-অভিনেত্রীর পেশাগত ছক ভেঙে বন্ধু হয়ে ওঠার কথা বন্ধুত্ব দিবসে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন মানালি।
দু’জনেই অনেকটা সময় কাটিয়ে ফেলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। একে অপরকে আগে থেকেই চিনতেন মানালি এবং অভিমন্যু। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে আলাপ হয় কাজের সূত্রেই। এর পর ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর হাঁকডাকের মাঝে নিঃশব্দে বেড়ে ওঠে দু’জনের বন্ধুত্ব। মানালি বললেন, “কাজ করতে করতেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। শ্যুট শেষ করে আমি যখন বাড়ি ফিরতাম অভিও (অভিমন্যু) তখন গাড়িতে থাকত। ওর সঙ্গে কথা বলতে, সময় কাটাতে ভাল লাগত।” ধীর আঁচে এ ভাবেই একটু একটু করে গাঢ় হয় দু’জনের বন্ধুত্ব।
শ্যুট শেষে একসঙ্গে ফেরা থেকে কাজের বাইরে একসঙ্গে আড্ডা— বদলে যেতে থাকে মানালি-অভিমন্যু সম্পর্কের সমীকরণ। বন্ধুত্ব থেকে ভাল লাগা, ভাল লাগা থেকে প্রেম। সেই প্রেমকে পরিণতি দিয়ে গত বছরের ১৫ আগস্ট খাতায় কলমে বিয়ে করেছেন মানালি-অভিমন্যু। একসঙ্গে সংসার, নতুন দায়িত্ব। কিন্তু বদলায়নি দু’জনের বন্ধুত্ব। “বিয়ের পর আমার জীবনে কিছুই বদলায়নি। আমরা সব ধরনের আলোচনা করি। এমনকি অভিকে এখনও মন খুলে ভিকি কৌশলের কথা বলতে পারি। ওরও কাউকে ভাল লাগলে, আমাকে সেই কথা মন খুলে বলে”, মানালির কণ্ঠে উচ্ছ্বাস স্পষ্ট।
শুধু অভিমন্যু নন, তাঁর মা-বাবাও মানালির বন্ধু হয়ে উঠেছেন। শ্যুট শেষে বাড়ি ফিরে বৌমার ঘুম হল কি না, ভোরবেলা কল টাইমের চাপ, এ সব নিয়ে তাঁদের চিন্তার অন্ত নেই। একই ভাবে কাজের চাপে মানালি তাঁর বাবা-দাদুর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না পেলে, সময় বার করে অভিমন্যু চলে যান শ্বশুরবাড়ির সকলের খোঁজ নিতে।
মানালির কথায়, “অভিমন্যুর এই ছোট ছোট জিনিসগুলোই আমার খুব ভাল লাগে। আমি ওর থেকে বেশি কিছু আশা করি না। ব্রেকের সময় একটা ফোন করলেই আমি খুশি। অভিও সব সময় সেটা করার চেষ্টা করে।”
সম্প্রতি স্টার জলসায় শুরু হয়েছে মানালির নতুন ধারাবাহিক। এক লাফে কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে অনেকটা। অভিমন্যুর সঙ্গে যে ওয়েব সিরিজটা দেখা শুরু করেছিলেন, সেটি শেষ করার ফুরসৎ আপাতত তাঁর নেই। অভিমন্যুও তাই অপেক্ষা করছেন মানালির জন্য। সাবটাইটেল চালিয়ে অন্যান্য ভাষার ছবি দেখে সময় কাটছে তাঁর। “যে সিরিজটা আমরা একসঙ্গে শুরু করেছিলাম, আমাকে ছেড়ে সেটা অভি দেখবে না। এই বন্ধুত্বটা না থাকলে হয় তো, আমাদের সম্পর্কটাও এত সুন্দর হতো না”, মৃদু হেসে বললেন মানালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy