সৌরসেনী, ঋদ্ধি ও উজান
অভিনয়ের পাশাপাশি শারীরচর্চার ব্যাপারে কতটা সচেতন এই প্রজন্ম? বিশেষ করে, যাঁরা সদ্য পা রেখেছেন বিনোদন দুনিয়ায়? টলিউডের নতুনদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ফিটনেসের সংজ্ঞা কী। পেশার প্রয়োজনে প্রস্তুতি, না কি ফিট থাকাটাই আসল? ঋদ্ধি, ঋতব্রত, সৌরসেনীরা কৌতূহল মেটালেন ‘আনন্দ প্লাস’-এর।
পেশি প্রদর্শন করাটা লক্ষ্য নয়: ঋদ্ধি সেন
আমি যেটুকু শারীরচর্চা করি, তা একেবারেই নিজে ফিট থাকার জন্য। আমার কাছে জিমে যাওয়ার উদ্দেশ্য, পেশি তৈরি করা নয়। আর খাওয়াদাওয়া কন্ট্রোল করাও আমার কাছে বেশ কঠিন ব্যাপার! সফ্টড্রিংক খেতে খুব ভালবাসি, সেটা প্রায় ত্যাগ করতে হয়েছে। আর চিনি খাওয়াও ছেড়েছি। ট্রেনারের পরামর্শ নিয়ে এক্সারসাইজ় করি এখন। খুব পেশিবহুল শরীর পছন্দ নয়, বরং দোহারা গড়নই ধরে রাখতে চেষ্টা করি।
এখন বিষয়টা ভাবিয়ে তুলেছে: ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়
আগে যা-ই খেতাম, গায়ে লাগত না। এখন দেখছি সেটা হচ্ছে না। ‘গোয়েন্দা জুনিয়র’-এর সময়েই আমায় অনেকে বলেছে যে, এ বার একটু কমানো দরকার। তাই এখন বিষয়টা একটু ভাবিয়ে তুলেছে। আমি খেতে প্রচণ্ড ভালবাসি। বাড়িতেও মা আর মাসির একটা বেকারি আছে, যেখানে সারাক্ষণই ভাল ভাল খাবার তৈরি হচ্ছে। সেই লোভ এড়ানো খুব কঠিন। আগে সাঁতার কাটতাম নিয়মিত, খেলাধুলোও করতাম। এখন কোনওটাই আর নিয়মিত হয় না। জিমে যাওয়ার অভ্যেস নেই, তবে চেষ্টা করছি যাতে ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
শারীরচর্চার ব্যাপারে আমি খুব অলস: সৌরসেনী মৈত্র
বললে হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করবেন না, তবে ব্যায়াম করার ব্যাপারে আমি কিন্তু বেশ অলস। জিমে যাওয়ার অভ্যেস নেই। একবার ভর্তি হয়েও ছেড়ে দিয়েছিলাম। বাড়িতেই ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ়, কার্ডিও ইত্যাদি করি। আর খাওয়ার ব্যাপারেও কম্প্রোমাইজ় করি না। তিন ঘণ্টা অন্তর অল্প পরিমাণে হাই-প্রোটিন ব্যালান্সড ডায়েট মেনটেন করি। তবে ডায়েট থেকে কার্বস একেবারে বাদ, এই ধারণায় বিশ্বাসী নই। আমার মেটাবলিজ়ম রেট বেশ হাই। ব্রেকফাস্টের ১২ ঘণ্টার মধ্যে বাকি সব মিল শেষ করি। আগে মাঝরাতে নেটফ্লিক্স দেখতে দেখতে খিদে পেলে হাতের কাছে যা পেতাম, খেতাম। সেটা বন্ধ করেছি। শুটিং চললে প্রোডাকশন থেকে যা খাবার দেয়, তাই খাই। ফিট আর হেলদি থাকাটাই আমার কাছে আসল।
খাওয়ার সময়ে অত ভেবে লাভ নেই: উজান গঙ্গোপাধ্যায়
খেলাধুলো করতাম আগে। এখন যেটুকু এক্সারসাইজ় করি, সেটা বাড়িতেই। ডাম্বল নিয়ে অল্পসল্প প্র্যাকটিস করি। প্রথম ছবি ‘রসগোল্লা’য় নবীন চন্দ্র দাসের জন্যে একটা লিন লুক দরকার ছিল, ‘লক্ষ্মী ছেলে’র ক্ষেত্রেও তাই। আমার স্বাভাবিক চেহারাটা সে রকমই। ফলে আলাদা করে বডি বিল্ড-আপ করার দরকার হয়নি এখনও। আমি খেতে ভালবাসি। হোটেল-রেস্তরাঁয় খেতে গেলে কখনও ক্যালরির চিন্তা করি না। খরচ করে যখন খাবই, তখন বাছবিচার করে লাভ কী? বাড়িতে সব রকম খাই, ভেজিটেবল খেতেও ভালবাসি। ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তাটা এখনও তেমন ভাবে ভাবায়নি আমায়, টাচউড!
১৩ বছর ধরে মার্শাল আর্টস শিখছি: আরিয়ান ভৌমিক
আমাকে ফিটনেস ফ্রিক বলা যায়। মার্শাল আর্টস শিখছি ১৩ বছর হয়ে গেল। শতকান ক্যারাটে শিখেছি। ২০১০’এ ব্ল্যাক বেল্ট। এখন ক্যালিস্থেনিক্সে মন দিয়েছি। বিভিন্ন অ্যাডভান্সড বডিওয়েট মুভমেন্টস। এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ হিউম্যান ফ্ল্যাগ, ড্রাগন ফ্ল্যাগের প্র্যাকটিস করেন বলে জানা নেই। আর ছবির চরিত্রের জন্য এখানে ট্রান্সফরমেশনের সময় পাওয়া যায় না। ‘চলো পাল্টাই’-এর সময় আমায় ২৫ কিলোগ্রাম বাড়াতে হয়েছিল। ‘মেসি’তে আবার ফুটবলারের মতো চেহারায় ট্রান্সফর্ম করতে হয়েছিল নিজেকে। সন্তুর চরিত্র করতে সুবিধে হয়েছিল, কারণ সে-ও মার্শাল আর্টিস্ট। খেতে ভালবাসি, পরিমাণেও অনেকটা খাই। নাচও করি নিয়মিত। ভালবাসা থেকেই শারীরচর্চাটা করি।
বলিউডের নবাগতদের ফিটনেস ট্রেন্ড টলিউডে এখনও সে ভাবে জোরালো নয়। তবে বোঝাই যাচ্ছে, বাংলার জেন নেক্সটের মন্ত্র— জিমমুখী না হলেও ফিট থাকাটা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy