Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Celebrity Interview

এমন সময়ও আসে, যখন সব কিছু ব্যাটেবলে হয় না, চাইছি অনামিকা ধারাবাহিকে ফিরুক

“শুনছি, ‘এ কেন নায়ক! অন্য কাউকে কেন নায়ক করা হল না?’ শুনছি আর মজা হচ্ছে। কেন এঁদের নিয়ে মাথা ঘামাব? এঁরা কারা? এঁদের তো চিনিই না।”

সুখে-দুঃখে এক সঙ্গে উদয়প্রতাপ সিংহ-অনামিকা চক্রবর্তী।

সুখে-দুঃখে এক সঙ্গে উদয়প্রতাপ সিংহ-অনামিকা চক্রবর্তী। ছবি: ফেসবুক।

উপালি মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫৬
Share: Save:

স্টুডিয়োয় সহকর্মীরা চিনতে পারছেন না তাঁকে! বলছেন, অভিনয় দুনিয়ায় ‘নব্য যুবক’ বলে মনে হচ্ছে! সেই প্রশংসা মাথায় রেখেই আনন্দবাজার অনলাইনে অভিনয় থেকে বিবাহিত জীবন নিয়ে অকপট জি বাংলার ‘পরিণীতা’ ধারাবাহিকের নায়ক উদয়প্রতাপ সিংহ।

প্রশ্ন: আপনি নায়কের ভূমিকায়। লোকে বলছে, বৌ ভাগ্যে নাকি আপনার এই উন্নতি।

উদয়: (হেসে ফেলে) আমার সঙ্গে মনে হয় সেটাই ঘটেছে।

প্রশ্ন: স্ত্রী অনামিকা চক্রবর্তী কী বলছে?

উদয়: খুব খুশি। স্বামীর উন্নতি হলে কোন স্ত্রী না খুশি হয়, বলুন। এত বছর ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। এই প্রথম আমি নায়ক। শুধু অনামিকা নয়, বাড়ির সবাই খুশি।

প্রশ্ন: ছোট পর্দা সাধারণত নায়িকাপ্রধান। নায়কের সেখানে খুব বেশি কিছু করার থাকে না। আপনার চরিত্রে কী বিশেষত্ব আছে যার জন্য রাজি হলেন?

উদয়: প্রথমত, এই প্রথম নায়কের ভূমিকায়। রাজি হওয়ার জন্য যথেষ্ট জোরালো কারণ। তার থেকেও বড় কারণ, আমায় কলেজ পড়ুয়ার ভূমিকায় নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। পর্দায় আমি ২৩ বছরের যুবক। বাস্তবে ৩৩! এক মাসে ১০ কিলো ওজন ঝরিয়েছি যাতে পর্দায় নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। জি বাংলা, ধারাবাহিকের পরিচালক আমায় ভরসা করে চরিত্রটি দিয়েছেন। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। বলিউড ধাঁচে কলেজ কালচার দেখানো হবে। পড়াশোনা কম, নাচগান, রকমারি বাইক, গাড়ির মেলা। নিজেকে ভাঙার অনেক সুযোগ রয়েছে।

প্রশ্ন: ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবির মতো?

উদয়: (খুব খুশি হয়ে) একদম ঠিক বলেছেন।

প্রশ্ন: নিজেকে শাহরুখ খান মনে হচ্ছে? ওঁর ‘সিগনেচার পোজ়’-এ দেখা যাবে?

উদয়: কার কথা বললেন! বাবা! আমার ‘আইডল’ তিনি। ওঁর সমতুল্য কোনও দিন হওয়া যায়? না না, আমি কারও মতো করে কিছু করার চেষ্টা করছি না। তা ছাড়া, এ রকম কোনও দৃশ্যও এখনও পর্যন্ত আসেনি।

প্রশ্ন: উদয়প্রতাপ সিংহ কলেজ জীবনে কী করতেন?

উদয়: কলেজে ক্লাস ছাড়া বাকি সব করতাম। খেলাধুলোয় আমি সকলের আগে।

প্রশ্ন: প্রচুর বান্ধবীদের আড্ডা, সুন্দরী দেখলেই আকর্ষিত হওয়া? পর্দায় যেমন দেখাচ্ছে...

উদয়: (লজ্জায় লাল হয়ে) না না, একেবারেই এই ধরনের ছিলাম না। এটা তো অভিনয়। চিত্রনাট্য যা বলবে সেটাই করে দেখাতে হবে আমায়।

প্রশ্ন: চিত্রনাট্য অনুযায়ী, কলেজের ‘ক্যাসানোভা’ ছাত্রটির সঙ্গে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে বিয়ে! বাস্তবে আপনার সঙ্গে যদি এটাই হত?

উদয়: পর্দায় তো জোর করে বিয়ে হচ্ছে! আমার অভিনীত চরিত্রটি নিজেকে প্রমাণ করতে এ সব করছে। বাস্তবে আমি এত বোকা নই... (হাসি)। জেদও নেই, কারও সঙ্গে লড়াই নেই আমার। ফলে, বাস্তবে এ সব ঘটার কোনও উপায়ই নেই।

প্রশ্ন: এত কিছুর মধ্যে মেগার ক্ষণস্থায়িত্ব কি কখনও কাঁটার মতো বিঁধছে?

উদয়: এটা তো আমার হাতের বাইরে। তিন মাস, ছ’মাস না তিন বছর চলবে এ গুলো আমার ভাবার কথাও নয়। আমার পেশা অনুযায়ী, রোজ স্টুডিয়োয় আসব। ১৪ ঘণ্টা কাজ করব। চরিত্রকে ক্যামেরার সামনে ফুটিয়ে তুলব। প্যাকআপ হলে চলে যাব।

প্রশ্ন: এক দিকে যেমন ধারাবাহিকের ক্ষণস্থায়িত্ব তেমনি একাধিক ধারাবাহিক দীর্ঘদিন চলছে। একই ছাদের নীচে এই বৈপরীত্য কেন?

উদয়: কোনও ধারাবাহিকের গল্প ভাল না হলে, দর্শক ধরে রাখতে না পারলে কিছু করার থাকে না। কোন গল্প দর্শকের পছন্দ হবে, সেটাও আগাম বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমরা বেশি চিন্তা না করে নিজেদের কাজটুকুই করে যতে পারি। (একটু থেমে), দেখুন, শাহরুখ খানের ছবিও ফ্লপ হয়। চার বছর বিরতি কাটিয়ে যখন ফিরলেন তখন আবার হিট।

প্রশ্ন: নিজেকে ইতিবাচক রেখে কাজ করে যাওয়ার পরেও বাড়তি বোঝা ‘ট্রোলিং’। পান থেকে চুন খসলেই সমাজমাধ্যমে নেটাগরিকেরা রে রে করে ওঠেন...

উদয়: খুব উপভোগ করি। শুনছি তো। ‘এ কেন নায়ক! অন্য কাউকে কেন নায়ক করা হল না?’ শুনছি আর মজা হচ্ছে। কেন এঁদের নিয়ে মাথা ঘামাব? এঁরা কারা? এঁদের তো চিনিই না। সমাজমাধ্যমে প্রোফাইল ছবি পর্যন্ত নেই!

প্রশ্ন: এ গুলো লিখব?

উদয়: লিখুন লিখুন। আমার চোখে যাঁদের কোনও অস্তিত্বই নেই কেন তাঁদের নিয়ে মাথা ঘামাব? হেসে উড়িয়ে দিই। আরও একটা কথা, যাঁরা এই আচরণ করেন তাঁরা ব্যক্তিগত জীবনে নানা সমস্যায় জর্জরিত, হতাশ। সেই ব্যর্থতা, হতাশা থেকে অন্যের ‘ভুল’ খোঁজেন। এটা আমি জানি।

ধারাবাহিক ‘পরিণীতা’য় উদয়প্রতাপ সিংহ এবং ঈশানী চট্টোপাধ্যায়।

ধারাবাহিক ‘পরিণীতা’য় উদয়প্রতাপ সিংহ এবং ঈশানী চট্টোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্য: জ়ি বাংলা।

প্রশ্ন: ধারাবাহিকের নায়িকা নবাগত। ভাব হয়েছে? প্রয়োজনে দাদার মতো শেখাচ্ছেন, না কি প্রেমিকের মতো?

উদয়: আমি শেখাব? আমারই শেখা শেষ হয়নি! বলতে পারেন বড় জোর একটু পরামর্শ দিচ্ছি। একদম দাদার মতো করে, অবশ্যই লিখবেন কিন্তু (জোর হাসি)। খুবই মিষ্টি মেয়ে। ধারাবাহিকে ওকে বাঁকুড়ার ভাষা বলতে হবে। সেই জায়গায় একটু হোঁচট খাচ্ছে। প্রশিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে ধরিয়ে দিচ্ছেন। নইলে বেশ ধরে নিয়েছে।

প্রশ্ন: এ বার ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি?

উদয়: (হাসি), আমার কোনও সমস্যা নেই।

প্রশ্ন: অনামিকা এখন আগের মতো পুরো দমে অভিনয় করছেন না। এ দিকে আপনি নায়ক। অনামিকা হীনম্মন্যতায় ভুগছেন?

উদয়: ও কিন্তু বসে নেই। হ্যাঁ, এটাও ঠিক, আগের মতো নায়িকা চরিত্রে নেই। জীবন এ রকমই। এক একটা সময় আসে, যখন সব কিছু ব্যাটেবলে হয় না। অনামিকারও হচ্ছে না। স্বামী হিসেবে মন থেকে চাইছি, আগের পরিস্থিতি ফিরে আসুক। এও জানি, সব ঠিক হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: তা হলে অভিনেত্রী স্ত্রী এখন গুছিয়ে সংসারী?

উদয়: সব করছে। কাজ করছে, সংসার করছে— কিচ্ছু বাদ দিচ্ছে না। আমিও করছি। মিলেমিশে সব সামলাচ্ছি আমরা।

প্রশ্ন: বাস্তবের মতো পর্দাতেও উদয়-অনামিকা কবে জুটি বেঁধে আসবেন?

উদয়: (জোরে হাসি) এটা প্লিজ় পরিচালককে জিজ্ঞেস করুন। কোনও পরিচালক সুযোগ দিলেই আমরা রাজি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy