Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ফিরে আসে জ্বলন্ত স্মৃতি

ছবি শুরু হামলার দিন থেকেই। ছোট ছোট সাবপ্লট আছে। কিন্তু কাহিনির মূলস্রোত থেকে বেরিয়ে নয়। বরং তা গল্পের আবেগ, টেনশন ধরে রাখে। নির্মাতারা ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস, লিওপোল্ড কাফে-সহ হামলার জায়গাগুলি ছুঁয়ে গিয়েছেন শুধু। ফোকাসে ছিল তাজ হোটেলের অংশটিই। তাতে ঘটনার গুরুত্ব হ্রাস পায়নি। বরং সিনেমা হিসেবে আরও কমপ্যাক্ট হয়েছে। 

ছবির একটি দৃশ্য।

ছবির একটি দৃশ্য।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০০
Share: Save:

হোটেল মুম্বই
পরিচালনা: অ্যান্টনি মারাস
অভিনয়: অনুপম খের, দেব পটেল
৭/১০

ভাল ছবি অথচ দেখতে অস্বস্তি হচ্ছে! শেষ হলে যেন স্বস্তি মিলবে। খুব কম ছবিতেই এমন অনুভূতি হয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টেনশন ধরে রাখে ‘হোটেল মুম্বই’। যুদ্ধ, হামলা, রেসকিউ অপারেশন— এই ধরনের ক্রাইসিস নিয়ে অজস্র বিদেশি ছবি হয়েছে। সে সব ছবি দেখতে গিয়ে শিউরে উঠতে হয়েছে। তার মধ্যেও ‘হোটেল মুম্বই’ আলাদা। কারণ সমস্যা এখানে ঘরের মধ্যে। ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে নিজেদের লোক। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার ঘটনা এখনও টাটকা। অ্যান্টনি মারাসের ছবি সেই হাড়হিম করা স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

দেব পটেল, অনুপম খের-সহ একাধিক ভারতীয় মুখ থাকা সত্ত্বেও ছবিটি পুরোপুরি আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট। ভারতের মাটিতে ঘটে যাওয়া একটা বিপর্যয় কতটা ছাপ ফেললে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ছবি হতে পারে!

ছবি শুরু হামলার দিন থেকেই। ছোট ছোট সাবপ্লট আছে। কিন্তু কাহিনির মূলস্রোত থেকে বেরিয়ে নয়। বরং তা গল্পের আবেগ, টেনশন ধরে রাখে। নির্মাতারা ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস, লিওপোল্ড কাফে-সহ হামলার জায়গাগুলি ছুঁয়ে গিয়েছেন শুধু। ফোকাসে ছিল তাজ হোটেলের অংশটিই। তাতে ঘটনার গুরুত্ব হ্রাস পায়নি। বরং সিনেমা হিসেবে আরও কমপ্যাক্ট হয়েছে।

অন্যান্য সব দিনের মতোই চলতে থাকা একটা দিন কী ভাবে মুহূর্তে বদলে গেল... সাদা পাথরের মেঝে কয়েক লহমায় লাল। বিলাসবহুল হোটেলে তখন শান্তির শ্বাসও বিলাসিতা ঠেকছে। হামলার ছ’ঘণ্টা পরেও উদ্ধারকারীরা এসে পৌঁছতে পারেনি। হোটেলের অন্দরে শ’খানেক মানুষের বাঁচার লড়াই দর্শকের শ্বাস রুদ্ধ করে দেয়।

তাজ হোটেলের জ্বলন্ত ছবি আজও আমাদের চোখে ভাসে। সমুদ্রের ধারে নিজের দানবীয় উপস্থিতি জাহির করা সেই তাজ তছনছ করে দিয়েছিল জনাকয়েক আতঙ্কবাদী। ছবির আর্ট ডিরেকশন, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং সিনেম্যাটোগ্রাফির আলাদা উল্লেখ করতে হয়। অস্ট্রেলিয়ার স্টুডিয়োতে গড়ে তোলা হয়েছে তাজের অন্দরের সেট। তার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে আসল ফুটেজ।

কেমন ভাবে সন্ত্রাসবাদীরা মুম্বইয়ে প্রবেশ করল, শহরে তাদের সদর্প বিচরণ এবং হামলা— সবটাই দেখানো হয়েছে। চোখে আঙুল দিয়ে না হলেও ঠুনকো নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পরিকাঠামোহীন পুলিশি ব্যবস্থার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কী নির্বিকারে, নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়েছে দশজন সন্ত্রাসবাদী!

সব ছবি তৈরির পিছনেই একটা উদ্দেশ্য থাকে। কোথাও ব্যবসায়িক লাভ, কোথাও সিনেম্যাটিক আকাঙ্ক্ষা, কোথাও বার্তা দেওয়া। এ ধরনের ছবিতে ইসলাম বিরোধিতা দর্শানোর একটা ঝোঁক থাকে। এ ছবি সেই দোষে দুষ্ট নয়। সন্ত্রাসবাদীরা কাউকে মানে না, তাদের বন্দুকের গুলি ধর্ম দেখে লক্ষ্য খোঁজে না। পৃথিবী জুড়ে ঘটে চলা সন্ত্রাসে কেউ না কেউ আপনজন হারাচ্ছে...

অন্য বিষয়গুলি:

Movie Review Hotel Mumbai Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy