Few unknown facts about legendary actor Rekha dgtl
Rekha
একাধিক সম্পর্কের গুঞ্জন, স্বামীর রহস্যজনক মৃত্যু... রেখা আর বিতর্ক যেন হাত ধরাধরি করে চলেছে চিরকাল
কী বলা যায় তাঁকে? ‘এপিটোম অব বিউটি’? তাঁর সৌন্দর্যের ছটায় মাতোয়ারা আট থেকে আশি। তাঁর ঠোঁটের কোণে আলগা হাসি আজও হিল্লোল তোলে ভক্ত হৃদয়ে। তিনি ভানুরেখা গণেশন। ভক্তরা যাঁকে রেখা বলেই চেনেন। দীর্ঘ ফিল্মি গ্রাফে নানান চরাই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি ‘লেজেন্ড’।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
কী বলা যায় তাঁকে? ‘এপিটোম অব বিউটি’? তাঁর সৌন্দর্যের ছটায় মাতোয়ারা আট থেকে আশি। তাঁর ঠোঁটের কোণে আলগা হাসি আজও হিল্লোল তোলে ভক্ত হৃদয়ে। তিনি ভানুরেখা গণেশন। ভক্তরা যাঁকে রেখা বলেই চেনেন। দীর্ঘ ফিল্মি গ্রাফে নানান চরাই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি ‘লেজেন্ড’।
০২১৫
ছোটবেলাটা বেশ কষ্টেই কেটেছে অভিনেত্রীর। তাঁর বাবা তামিল অভিনেতা জেমিনি গণেশন এবং মা তেলুগু অভিনেত্রী পুষ্পভেল্লী কোনওদিনই বিয়ে করেননি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সে জন্য রেখাকেও বিভিন্ন সময়ে শুনতে হয়েছিল নানা গঞ্জনা, সম্মুখীন হতে হয়েছিল হরেক সমালোচনার। বাবা জেমিনিও রেখার ছোটবেলায় তাঁকে সন্তান হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন।
০৩১৫
একরত্তি মেয়েটার মনের জোর ছিল প্রচুর। হার না মানার সহজপাঠ শিখে গিয়েছিলেন খুব ছোট বয়সেই। সংসারে অভাব চরমে, বাধ্য হয়েই অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিলেন চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া ভানুরেখা। তবে প্রথম জীবনে রেখা কিন্তু মোটেও অভিনেত্রী হতে চাননি। তাঁর ইচ্ছা ছিল ডানা মেলে আকাশে ওড়ার। চেয়েছিলেন বিমানসেবিকা হতে। তবে তাঁর সেই ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি। চেয়েছিলেন সন্ন্যাসিনী হতেও। পরে অবশ্য সেই ইচ্ছা থেকে সরে আসেন তিনি।
০৪১৫
চোখে হাজার স্বপ্ন মেয়েটার। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের উপায় জানা নেই। পরিবারে চরম দারিদ্র। ক্রমাগত আসতে থাকে ‘বি গ্রেড’ তেলুগু ছবির অফার। বলিউডের পাড়ায় পাড়ায় তিনি তখন ক্রমাগত অডিশন দিয়ে চলেছেন। কিন্তু গায়ের রং কালো। আর সেলুলয়েডে তখন সুন্দরী মানেই প্রথম শর্ত ফরসা হতে হবে। হিন্দিও জানতেন না একেবারেই। তাই প্রযোজক-পরিচালকরাও একে একে ফিরিয়ে দিতে থাকেন তাঁকে।
০৫১৫
কিন্তু তিনি তো দমে যাওয়ার মেয়ে নন। ১৯৬৯-এ প্রথম কন্নড় ছবিতে অফার মেলে তাঁর। ওই বছরই হিন্দী ছবি ‘আনজানা সফর’-এ প্রথম ব্রেক মেলে তাঁর। কিন্তু ভাগ্য সেখানেও সঙ্গ দেয় না। কিন্তু ছবির মুক্তি আটকে যায়। বেশ কয়েক বছর পর যদিও সেই ছবি মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু ততদিনে ভানুরেখা ‘রেখা’ হয়ে গিয়েছেন।
০৬১৫
‘আনজানা সফর’-এ তাঁর সহ অভিনেতা ছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বিশ্বজিতের সঙ্গে তাঁর পাঁচ মিনিটের দীর্ঘ চুম্বনের দৃশ্যের জন্যই সে সময় সেন্সরশিপের রোষের মুখে পড়ে ওই ছবি।রেখার বয়স তখন মাত্র পনেরো বছর।
০৭১৫
তাঁর প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত হিন্দি ছবি ‘সাওয়ন ভাদো’। ওই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন অভিনেতা নবীন নিশ্চল। বক্স অফিসে ব্যাপক হিট হয় সেই ছবি। এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক হিট আসতে থাকে তাঁর ঝোলায়। চেন্নাইয়ের ওই ছোট্ট মেয়েটা রাতারাতি চলে আসেন লাইমলাইটে।
০৮১৫
‘কহানি কিসমত কি’, ‘সিলসিলা’, ‘উমরাও জান’, ‘খুন ভরি মাং’, ‘উৎসব’, ‘দো আনজানে’- তালিকাটা এতই লম্বা যে, গুনে শেষ করা যাবে না। এরই মধ্যে বিতর্ক এসে ঘিরে ধরে তাঁকে।
০৯১৫
দিনটা ১৯৮০-এর ২২ জানুয়ারি। আরকে স্টুডিওতে ধূমধাম করে ঋষি আর নিতু কপূরের বিয়ে হচ্ছে। এমন সময় রেখা পৌঁছন সেখানে। মাথায় সিঁদুর। গলায় মঙ্গলসূত্র। কিন্তু তাঁর তো বিয়ে হয়নি। তবে? সে সময় আবার বলি-পাড়ায় অমিতাভ-রেখার সম্পর্ক নিয়ে নানা গুঞ্জন। ওই অনুষ্ঠানে আবার সস্ত্রীক অমিতাভও এসে হাজির। অতিথিদের মনে তখন হাজারও প্রশ্ন ভিড় করেছে।
১০১৫
যদিও পরবর্তী কালে রেখা বলেছিলেন তিনি নাকি একটি ছবির শুটিং-এ ছিলেন। সেখান থেকেই চলে গিয়েছিলেন বিয়েবাড়িতে। তাই মেকআপ তোলার কথা তাড়াহুড়োতে তাঁর নাকি একেবারেই খেয়াল ছিল না। সে সময় এই ঘটনা নিয়ে চূড়ান্ত জলঘোলা হয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। জয়া আর অমিতাভের সম্পর্কের মধ্যেও এর প্রভাব পড়েছিল বিস্তর।
১১১৫
এর পর প্রায় এক মাসের মধ্যেই বিখ্যাত শিল্পপতি মুকেশ আগরওয়াল-কে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু বিয়ের এক বছর পরই আত্মহত্যা করেন মুকেশ। কেন মুকেশ আত্মহত্যা করেন তা এখনও রহস্যই থেকে গিয়েছে।
১২১৫
কেরিয়ারের গ্রাফ যত ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, গসিপও এসে ঘিরে ধরেছে তাঁকে। এর পর তাঁর নাম জড়ায় অভিনেতা বিনোদ মেহরার সঙ্গে। তাঁদের বিয়ের খবর সে সময় ছিল বলিউডের হটেস্ট টপিক। শোনা যায়, কলকাতায় নাকি বিয়ে করেছিলেন তাঁরা।কিন্তু বিনোদের মা নাকি তাঁকে পুত্রবধু হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন। যদিও এ ব্যাপারে কোনওদিনই মুখ খোলেননি রেখা।
১৩১৫
শুধু বিনোদ মেহরা অথবা অমিতাভ নন, শত্রুঘ্ন সিন্হা, রাজ বব্বর, কমল হাসান এমনকি সঞ্জয় দত্তের সঙ্গেও তাঁকে নিয়ে রটেছিল নানা রকমের গসিপ। তবে সে সবে থোড়াই কেয়ার ‘উমরাও জান’-এর। চিরকালই নিজের স্টাইল, গ্ল্যামার এবং ড্রেসিং সেন্সে নজর কেড়ে এসেছেন তিনি। কাঞ্জিভরমে তিনি অপরূপা।
১৪১৫
পেয়েছেন পদ্মশ্রী, জাতীয় পুরস্কার এবং বেশ কয়েকটি ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। নায়িকারা নাকি বন্ধু হতে পারেন না। কিন্তু রেখার বেস্টফ্রেন্ড কে জানেন? বলিউডের ড্রিমগার্ল হেমা মালিনী।
১৫১৫
জীবনের এতগুলো বসন্ত পেরিয়েও আজও রেখা মানেই অন্য এক মাদকতা, অন্য এক আবেদন। তিনি যে চিরসবুজ। ইংরাজিতে যাকে বলে ‘এভারগ্রিন’।