Advertisement
E-Paper

সমঝোতা হল না, শুক্রবার থেকে ফ্লোরে যাবেন না পরিচালকেরা! অচল হতে চলেছে টলিউড?

ফেডারেশন নীরব, কাল থেকে ফ্লোরে যাবেন না পরিচালকেরা! কৌশিক, জয়দীপ, শ্রীজিতের ভবিষ্যৎ কী?

সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি অনির্বাণ ভট্টাচাৰ্য, সুব্রত সেন, সুদেষ্ণা রায়। —নিজস্ব চিত্র।

সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি অনির্বাণ ভট্টাচাৰ্য, সুব্রত সেন, সুদেষ্ণা রায়। —নিজস্ব চিত্র। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫৪
Share
Save

প্রতীক্ষার প্রহর শেষ। বৃহস্পতিবারেও পরিচালক গিল্ড-এর ডাকে সাড়া দিল না ফেডারেশন। বুধবার সাংবাদিকদের গিল্ড-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, সাড়া না মিললে পরিচালকেরাও অসহযোগিতায় নামবেন। তাঁরাও ধর্মঘট করবেন। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর আনন্দবাজার অনলাইনকে ডিরেক্টর্স গিল্ড-এর সভাপতি সুব্রত সেন এবং সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে ফ্লোরে যাবেন না পরিচালকেরা। তিন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং শ্রীজিৎ রায়কে অসঙ্গতির কারণ দেখিয়ে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণার পরেই নতুন করে মাথাচাড়া দেয় গিল্ড-ফেডারেশন কাজিয়া। তিন জনের কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? সুব্রত, সুদেষ্ণা উভয়েই জানিয়েছেন, পরিচালক নয়, প্রযোজক জয়দীপ এবং শ্রীজিতের সঙ্গে আগামী কাল সন্ধ্যায় মুখোমুখি বসবেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং ইন্দ্রনীল সেন। পাশাপাশি, গিল্ড-এর তরফ থেকে কিছু শর্ত রাখা হবে ফেডারেশনের কাছে। সেই শর্ত মানা হলেই পরিচালকেরা আবারও শুটিং ফ্লোরে যাবেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মঘটের বিরোধী। সুব্রত এবং সুদেষ্ণার কথায়, “আমরাও সেটাই পালন করব। কাজ কোথাও বন্ধ থাকবে না। কেবল পরিচালকেরা ফ্লোরে যাবেন না। লাগাতার তাঁদের হাত থেকে কাজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যখন তখন শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আলোচনায় বসতে চাইলে সাড়া মিলছে না। তাই পরিচালকেরা যথেষ্ট অপমানিত। সেই জায়গা থেকে এই সিদ্ধান্ত।”

কিন্তু পরিচালকেরা ফ্লোরে না গেলে শুটিং পরিচালনা করবেন কে? সে ক্ষেত্রে ধারাবাহিকের পর্ব পরিচালক বা ছবির সহকারী পরিচালক কি কোনও ভাবে উপস্থিত থাকবেন? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল গিল্ড সভাপতির কাছে।

সুব্রতর জবাব, “পরিচালক ছাড়াই শুটিং সম্ভব, ফেডারেশনের আচরণে এমনই মনে হয়েছে। সুতরাং, পরিচালকদের উপস্থিতির তো কোনও দরকার নেই! আর পর্ব বা সহকারী পরিচালক তো আদতে পরিচালকই। তাই তাঁরাও থাকবেন না।” তবে এই মুহূর্তে আউটডোর শুটিংয়ে ব্যস্ত পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায় এবং সুমন দাস। তথাগত তাঁর আগামী ছবি ‘রাস’-এর শুটিং করছেন। সুমন পুরীতে ব্যস্ত ধারাবাহিকের শুটিংয়ে। তাঁদের আপাতত ছাড় দেওয়া হয়েছে। শহরে ফেরার পর তাঁরাও ফ্লোরে যাবেন না।

মৌখিক ভাবে সাংবাদিকদের জানানোর পাশাপাশি গিল্ড একটি লিখিত বিবৃতি-ও জারি করেছে। সেই লেখা অনুযায়ী, “এত দ্বারা গিল্ড-এর সকল সদস্যদের জানানো হচ্ছে, আগামী কাল (৭/২/২০২৫) শুক্রবার থেকে সাংগঠনিকভাবে সকল পরিচালক শুটিং করা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আমাদের দেওয়া শর্তাবলী মেনে না নেওয়া পর্যন্ত পরিচালকদের এই শুটিং প্রত‍্যাহার জারি থাকবে।”

পরিচালকেরা যে শর্তাবলী রেখেছেন তা নিম্নরূপ----

১.আমাদের সমস্ত দাবিগুলোকে লিখিত আকারে উত্তর দিতে হবে। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বা বৈঠকে করা মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে আমাদের আস্থা নেই। কারণ আমরা দেখেছি জুলাই ২০২৪-এ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশ (কোনও ভাবে কাজ বন্ধ করা যাবে না) ফেডারেশনের কর্তাব্যক্তিরা হেলায় অগ্রাহ্য করেছেন।

২.যে তিনজন পরিচালককে ‘ব্ল্যাকলিস্ট’ করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, লিখিতভাবে জানাতে হবে তাঁরা প্রত্যেকে তাঁদের শুটিং নির্দ্বিধায় যেন শুরু করতে পারেন।

৩.লিখিতভাবে জানাতে হবে, কোনও অবস্থাতেই লিখিত বা মৌখিক নির্দেশে কাউকে ‘ব্ল্যাকলিস্ট’ করা যাবে না।

৪.লিখিতভাবে জানাতে হবে, কোনও অবস্থাতেই লিখিত বা মৌখিক নির্দেশে কারও কোনও কাজ বন্ধ করা যাবে না।

৫.পরিচালক, প্রযোজক এবং প্রোডাকশনের তরফ থেকে ফেডারেশনকে টেকনিশিয়ানদের একটি তালিকা শুটিং এর আগে অবশ্যই দেওয়া হবে। কিন্তু সেই তালিকা দেওয়ার সঙ্গে ফেডারেশনের তরফ থেকে কোনও অনুমতি আসার প্রশ্ন থাকবে না। প্রযোজক এবং পরিচালক নির্দ্বিধায় কাজ শুরু করতে পারবেন। তালিকা নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই কাজ বন্ধের নির্দেশ মৌখিক বা লিখিতভাবে দেওয়া যাবে না।

৬.কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে সমস্যা থাকলে তা তাঁর সংশ্লিষ্ট গিল্ডকে জানাতে হবে। সেই গিল্ড তার সদস্যদের নিয়ে ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। কিন্তু কোনও ভাবে তাঁর কাজ আটকানো যাবে না।

সুব্রত জানিয়েছেন, এই শর্তাবলী ফেডারেশনকে মেল করা হবে। সংগঠনের সভাপতি শর্ত পড়ে, সম্মতিসূচক বার্তা মেল করে পাঠালে তবেই কাজে ফিরবেন পরিচালকেরা।

ফেডারেশনের নির্দেশ মেনে টেকনিশিয়ানরা গত সপ্তাহ থেকে অসহযোগিতার পথে হেঁটেছেন। এ বার কি পরিচালকদের পালা?

সুব্রতর কথায়, “আমাদের প্রয়োজন থাকলে তবে না অসহযোগিতার প্রশ্ন! পরিচালকদের তো কারও প্রয়োজনই নেই। ফলে, অসহযোগিতারও কোনও জায়গা নেই।”

Tollywood

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}