হাইকোর্ট চত্বরে শুটিংয়ে ঋত্বিক চক্রবর্তী, রাজ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার মানেই অফিসপাড়ায় ছুটি। হাইকোর্ট চত্বর, চারপাশ শুনশান। গত কালের ছবিটা কিন্তু একদম আলাদা। সকাল থেকে হইহই। সৌজন্যে প্রযোজক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী আর তাঁর আগামী ছবির দলবল। এ দিন সকাল থেকে শুটিং চলছে জোরকদমে। প্রথম ভাগের শুটিংয়ে অংশ নেন মিঠুন চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী, এসিপি লালবাজার অলোক সান্যাল প্রমুখ। খবর, আদালতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য এ দিন ফাঁকায় ফাঁকায় ক্যামেরাবন্দি করেন পরিচালক। প্রযোজনায় এসভিএফ।
খবর পেয়ে শুটিং ফ্লোরে উপস্থিত আনন্দবাজার অনলাইন। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিটে পা রাখতেই দূর থেকে মাইকে শোনা গেল রাজের গলা। তিনি দলের সবাইকে এবং অভিনেত্রী স্ত্রী শুভশ্রীকে নির্দেশ দিচ্ছেন। পায়ে পায়ে এগোতেই রাস্তার এক পাশে সারি দেওয়া দোকান, টাইপের যন্ত্র নিয়ে বসে কিছু লোক। তাঁরা টাইপে ব্যস্ত। আপনারা রবিবারেও কাজ করেন? প্রশ্ন রাখতেই আসল খবর ফাঁস। প্রত্যেকে নকল! রাজের নির্দেশে এ ভাবে ছুটির দিনে সেজে উঠেছে অফিসপাড়ার ছোট্ট একটি অংশ। চারপাশে নজর রাখতেই চোখে পড়ল এক দল আইনজীবী। কালো কোট গায়ে, হাতে কাগজের বান্ডিল নিয়ে ব্যস্ত পায়ে যাতায়াত করছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে দিয়েই ঝড়ের বেগে বেরিয়ে এলেন শুভশ্রী। সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট, লম্বা পনিটেলে নিখুঁত মহিলা আইনজীবী তিনি। কালো কোট হাতে সংলাপ বলতে বলতে বেরিয়ে যেতেই আচমকা ‘কাট কাট’ চিৎকার। আইনজীবীদের ‘নকল’ ব্যস্ততায় দাঁড়ি। বোঝা গেল, এঁরা রাজের ছবির ‘একস্ট্রা’ অভিনেতা।
পরের দৃশ্য হাইকোর্টের সামনে। ক্যামেরা সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে বসানোর নির্দেশ দিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি পরিচালক। সকাল থেকে কী কী দৃশ্য শুট করলেন? তাঁর জবাব, ‘‘সকাল থেকে আদালতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য নেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’ রাজ না বললেও টলিপাড়ায় গুঞ্জন, ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী মিঠুন-ঋত্বিক বাবা ও ছেলে। একটা সময়ের পর বাবার দায়িত্ব নিতে নারাজ সন্তান। উৎখাত করতে চায় বাড়ি থেকেও। সেই নিয়ে কাজিয়া। আদালত পর্যন্ত গড়াবে বাবা-ছেলের দ্বন্দ্ব। ছবিতে ঋত্বিকের স্ত্রী ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অহনা দত্ত। তাঁর বাবা অলোক সান্যাল। মিঠুনের স্ত্রী অনসূয়া মজুমদার। শুভশ্রীকে কী ভাবে দেখতে পাবেন দর্শক? জানা গিয়েছে, রাজ-ঘরনি মিঠুনের আইনজীবী।
একে একে শট নেওয়া শেষ। ভিড় কমতে শুরু করেছে। আলো কমে আসার আগে গাড়ির কিছু শট নিলেন রাজ। স্ত্রী, মাকে নিয়ে ঋত্বিক গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছেন। চালকের আসনে অহনা। প্রথম শট ‘ওকে’ হতেই ক্যামেরার ফোকাস অনসূয়ার মুখে। গাড়ির ভিতরে ‘পর্দার ছেলে’র পাশে গুছিয়ে বসতেই এ বার ক্যামেরায় চোখ রাখলেন পরিচালক। গাড়ির ভিতরে ক্যামেরা নিয়ে মন্তাজ শট নিলেন কয়েকটি। হাইকোর্টের গায়ের আলোগুলো তত ক্ষণে জ্বলতে শুরু করেছে। শুটিংয়ের হাঁকডাক কমতেই ফের রবিবারের শুনশান অফিসপাড়া হাজির। মাঝেমধ্যে নিস্তব্ধতা খানখান করে দিচ্ছে লঞ্চের ভোঁ শব্দ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy