সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আড্ডায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায় এবং কৌশিক সেন। ছবি: সংগৃহীত।
টলিউড পাড়ার মানুষেরা ছবির প্রচার ছাড়া সংবাদমাধ্যমের সামনে একসঙ্গে কথা বলেন না। মিডিয়ার ‘সত্যি’ ঘটনা সামনে আনার নিরলস প্রচেষ্টা চলতে থাকে। কিন্তু সত্যি বলে কি কিছু হয়? সেই কথার হদিস দিতেই একসঙ্গে সত্যি বললেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: রাজনৈতিক মতভেদ ব্যক্তিগত পরিসরে বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে?
কৌশিক সেন: ব্যক্তিগত ভাল লাগা, মন্দ লাগা নতুন নয়। আরজি কর আন্দোলনের কথাই ধরুন। এত ব্যাপ্তি যে আন্দোলনের, তা মিলিয়ে গেল কেন? শুধুই কি রাজনৈতিক চক্রান্ত? তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁত, সিআইডি-সিবিআই জোট একমাত্র দায়ী তা কিন্তু নয়। এর সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দও জড়িয়ে রয়েছে। আন্দোলনকে ঘিরে নিজের আমিটাকে এত বেশি প্রকাশ করে ফেললাম আমরা, অত্যাচারিত মেয়েটির থেকেও বেশি সেটাই জায়গা পেয়ে গেল। আমি কী ভাবে প্রতিবাদ করছি, কতগুলো জায়গায় প্রতিবাদ করছি তা মুখ্য হয়ে উঠেছে। এটা এই সময়ের একটা অসুখ। নিজেকে জাহির করছি আমরা। আমি, রেশমি, ঋদ্ধি, সুরঙ্গনা এই আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু একটা সময়ের পরে ভাল লাগত না এই সব দেখে।
অনন্যা: দ্বন্দ্ব তো সারা ক্ষণ চলছেই। ভারসাম্য রাখাটা খুব জরুরি। আমি সঠিক কাজ ভেবে অন্দোলনে যোগ দিয়েছি। কিন্তু সেই ভিড়ে গিয়ে দেখছি, প্রত্যেকের ঠিক-ভুল ভিন্ন। এখানে আমাকে ভাবতে হয়েছে, আমি কত দূর পর্যন্ত আমার ভাল লাগাটাকে আটকে দিয়ে এগিয়ে যাব, না কি একটা জায়গায় গিয়ে আমাকে থামতেই হবে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: আমাদের মধ্যেকার যে অন্তর্ঘাত তা সময়ের সঙ্গে, উপলব্ধির সঙ্গে বদলে যায়। সৃজিতের ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’ ছবিতেও তা-ই তুলে ধরা হয়েছে। তা ছাড়া, ধর্ম, রাজনীতির মতো জরুরি সামাজিক বিষয় ছবিতে রেখেছে সৃজিত। এই ছবিতে ও অনেক কড়া কথা বলেছে। আমি চাই সৃজিত যে সততার সঙ্গে ছবিটি বানিয়েছে, দর্শক যেন সেই সততার সঙ্গে ছবিটি দেখেন। সেন্সর বোর্ডের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব।
প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিতে শিক্ষা, মেধা, রুচির কি বিকৃতি ঘটেছে? পারস্পরিক প্রতিযোগিতা থাকবেই কিন্তু হুমকি, এই যেমন শিবপ্রসাদ ও দেবের ফ্যানক্লাবের ঘটনা...
কৌশিক সেন: কারও জন্যই স্বাস্থ্যকর নয়। এই প্রসঙ্গে অনির্বাণের গানের দুটো পঙ্ক্তি বলি, ‘ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে গিয়েছে, গন্ধ তো বেরোবেই।’ সংস্কৃতির হাঁড়ি ফেটে গিয়েছে। আগে সন্ধ্যাবেলা ফুটবল খেলে ফেরার সময় শুনতাম, কেউ আবৃত্তি, কেউ গানের অনুশীলন করছে। এটাই তো আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। তখন হয়তো সেই বাচ্চাটির কাছে সেটা অত্যাচারসম, কিন্তু এটা ভাল অনুশীলন। শ্রদ্ধা, মর্যাদা ছিল। একজন কবিতা লিখছে, গান লিখছে, তার চিন্তাভাবনা ভিন্ন হবে, তাই একটু তার কাছে থাকি— আগে এই ধরনের ভাবনা কাজ করত মানুষের মধ্যে। কিন্তু যে দিন থেকে আমার হাতে রিল এসে গিয়েছে, আমি ভাবতে শুরু করেছি যে আমি সব জানি। এটারই একটা প্রকাশ ঘটেছে ইন্ডাস্ট্রিতেও। তাই ওই ঘটনা না শিবপ্রসাদের ছবির জন্য স্বাস্থ্যকর, না দেবের ছবির জন্য। ভিন্ন ধরনের ছবি থাকুক, দর্শককে বেছে নিতে দাও তারা কোন ছবি দেখবে। রেশমি আমাকে বলেছিল ঘটনাটা। খুবই নিম্নমানের মনে হয়েছে আমার। যত তাড়াতাড়ি অবসান ঘটে, ততই ভাল।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: এই কাদা ছোড়াছুড়ি সমাজমাধ্যমে কোন প্রোফাইল থেকে হচ্ছে সেটা দেখতে হবে। আমি দেবকে খুব ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। ও ভীষণ পরোপকারী, মানুষের উপকার করে। মন দিয়ে নিজের কাজ করে। প্রযোজক হিসাবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমি খুব শ্রদ্ধাশীল ওর প্রতি। তবে আমি একটা বিষয় বুঝতে পারিনি। আমি ওর থেকে দাদা হিসাবে আশা করেছিলাম ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই ও একটা বিবৃতিতে বলবে “তোমরা যদি আমার অনুরাগী হও, আমি কিন্তু এ রকম ফ্যান চাই না। আমি এই ধরনের আক্রমণ চাই না।” পরে অবশ্য এ নিয়ে কথা বলেছে। কখনও দেখবেন না একজন সুখী, আত্মবিশ্বাসী মানুষ চিৎকার করছেন। ক্রিকেটের ময়দানে অস্ট্রেলিয়ার যে স্লেজিং করার প্রবণতা সেটা কি আমার খারাপ লাগে? কিন্তু তার তো একটা মান রয়েছে। ও একটা মানদণ্ড তৈরি করেছে, সেটা কী ভাবে টপকানো যায় তা ভাবতে হবে। তাকে অহেতুক আক্রমণ করার কোনও অর্থ নেই।
অনন্যা: খুবই হতাশাজনক। ছোটবেলায় আমাদের একটা অনুশীলন ছিল। এর মধ্যে দিয়ে আমরা বড় হয়েছি। আমার মনে হয়, এই প্রজন্মের মধ্যে কিছু মানবিক মূল্যবোধের ঘাটতি রয়েছে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: আমাদের প্রজন্ম সেই প্রজন্ম, যাদের বাড়িতে রবিবার মাংস হত। তখন ‘রেড মিট’ জাতীয় ন্যাকামো ছিল না। সেই সময়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ছিল এমনই। পাশের বাড়ির কাকুকেও সম্মান করতাম, দোকানের কাকুকেও সম্মান করতাম। যখন সিগারেট খাওয়া শুরু করলাম, কাকুদের বয়সি কাউকে দেখলে লুকিয়ে পড়তাম। তিনি হয়তো চেনা কেউ নন, তা-ও। আর এখন মুখের উপর ধোঁয়া ছাড়ে এরা!
অনন্যা: এখন পাড়ার কাকারা শাসন করতে গেলে তেড়ে মারতে যাবে তাদের! আগে রবিবার মাংস খাওয়ার জন্য বাকি ৬ দিনের অপেক্ষা কত মধুর ছিল! মাংসের স্বাদটাই অন্য রকম মনে হত। এখন মাংসের ঝোলের স্বাদ নেই বলছি না, কিন্তু বড্ড বেশি খাওয়া হয়ে যাচ্ছে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে যখন বেত কেড়ে নেওয়া হল, তখনই সমাজে অনেকটা বদল ঘটে গেল। রূপক কথা বলছি। তার মানে এই নয় যে ধরে ধরে বাচ্চাদের চাবকাতে হবে! কিন্তু শাসনের প্রয়োজন রয়েছে। আমার দিদা বলতেন, “পিতা শত্রু, মাতা বৈরী, তবেই ভাল সন্তান তৈরি।”
প্রশ্ন: উজানকে খুব শাসন করেছেন?
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: না। সৌভাগ্যবশত কখনও করতে হয়নি। ও নিজের মতো থাকে। ছোটবেলা থেকেই বকতে হয়নি ওকে। বেবিকটে ওকে বসিয়ে রেখে চূর্ণী নিজের কাজ করত। আমি স্কুলে যেতাম। উজান বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকত, কী ভাবত কে জানে। ওকে আঁকার জিনিসপত্র দিয়ে দেওয়া হত, নিজের মনে আঁকত। তবে এখন যদি মনে হয় ও কোনও কাজ ঠিক করছে না, ওকে বকা হয়।
প্রশ্ন: ঋদ্ধিকেও তো অন্য ভাবে মানুষ করেছেন?
কৌশিক সেন: অন্য ভাবে কি না জানি না। ঋদ্ধির এক বার চিকেন পক্স হয়েছিল। তখন আমি পুণেয় ছিলাম সেমিনারের জন্য। রেশমি ওর সঙ্গে একই ঘরে বন্দি ছিল। রেশমিই তখন ওয়ার্ল্ড সিনেমা দেখাতে শুরু করে ঋদ্ধিকে। এই ভাবেই ঋদ্ধির আলাদা জীবনযাত্রা শুরু হয়। এগুলো বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ করে। সব সময় বাবাকেই যে করতে হবে তেমন নয়। এই দেখুন না, আজ যেটা পরে এসেছি, সেটা ঋদ্ধিই কিনে পাঠিয়েছে।
প্রশ্ন: পরিচালক সৃজিতের মধ্যে আলাদা কী দেখলেন?
কৌশিক সেন: সৃজিতকে ভাল লাগার ও অপছন্দ করার কারণ একই। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অতনু ঘোষ, অঞ্জন দত্ত, সৃজিত বা অন্য যে কারও ছবিতে সেই ব্যক্তিকে একটু হলেও খুঁজে পাওয়া যায়। সৃষ্টির মধ্যে ব্যক্তির প্রতিফলন পাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। সৃজিতের মধ্যে দাম্ভিক দিক রয়েছে। এটা কিন্তু কার্যকরী। সব সময় যে নেতিবাচক দিক দিয়েই দেখা হয়, এমন নয় কিন্তু। মানুষ হিসাবে হয়তো অস্বস্তিতে ফেলে কখনও, যদিও আমার কখনও এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়নি। সৃজিতের এই দাম্ভিক বিষয়টিই কিন্তু ওর ছবির ইউএসপি। আমি নিজেও ওর এই বিষয়টি উপভোগ করি। ওর এই দিক যত দিন থাকবে, ততই ভাল। আমরা যে ১২ জন অভিনয় করেছি এই ছবিতে, তারা প্রত্যেকে নিজেদের হোমওয়ার্ক করে এসেছি। ফলে আমাদের অভিনয়ের তুলনায় কী ভাবে শট নেওয়া হচ্ছে ইত্যাদির দিকে বেশি নজর দিতে হয়েছে সৃজিতকে।
অনন্যা: সৃজিতকে সেটে খুব স্থিতধী মনে হয়েছে। আমি শুনেছিলাম, ও ফ্লোরে খুব চেঁচামেচি করে। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে আমি ওকে জিজ্ঞেসও করেছিলাম, “হ্যাঁ রে, তুই কি খুব রাগারাগি করিস ফ্লোরে?” আরও একটি বিষয় না বললেই নয়। আমাদের প্রত্যেককে ‘ইম্প্রোভাইজ়’ করার স্বাধীনতা দিয়েছিল সৃজিত। ছবির আগে সৃজিত বলেছিল আমাদের, “আমি প্রাথমিক চিত্রনাট্যের খসড়া দিচ্ছি। তোমরা নিজেদের মতো ‘ইম্প্রোভাইজ়’ করো।” আমি যখন প্রথম কাজ শুরু করেছিলাম, সেই গ্রিনরুমের পরিবেশ ফিরে পেয়েছি এই ছবির সেটে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: সৃজিত এই ছবিতে সব থেকে কম পরিশ্রম করেছে। আমাদের ১২ জনকে লড়িয়ে দিয়েছে ও। আমরা প্রত্যেকে তটস্থ একে অপরকে নিয়ে। একই সঙ্গে উপভোগও করেছি আমরা। ও মনিটরে শুধু টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখছিল। ও নিজেও উপভোগ করেছে ছবিটা। কাজেই যে সৃজিতকে নিয়ে এত কথা হচ্ছে তাকে আমরাও খুব বেশি পাইনি এই ছবিতে। ও রাগারাগিটা করবে কার উপর! আর কেনই বা করবে! ওর পিতৃপ্রতিম ফাল্গুনীদা, মানে আবীরের বাবা ছিলেন শুটিং ফ্লোরে। তবে ওর রাগের যে প্রতিভা তা কখনও বুমের উপর, কখনও আবার সহকারীর উপর পড়েছে।
প্রশ্ন: একাধিক তারকা কি বেশি দর্শক টানে?
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: দর্শক সম্পর্কে পৃথিবীর কেউ জানে না। ‘খাদ’ ছবিতে অনেকে ছিল, সেটা মানুষ দেখেছে। ফলে এই ছবিটাও দেখার কথা। অনেকে যেমন খাবারে নানা পদ চায় না, শুধু ডাল, ভাত আর মাছভাজা খেতে চায়। এই ছবি কিন্তু ১২টা বাটির বাফেট। কাজেই দর্শকের কতটা খিদে তা বুঝতে হবে আমাদের। তবে দর্শক বঞ্চিত হবে ছবিটা না দেখলে, এতে কোনও দ্বিমত নেই। এর আগেও দর্শক বঞ্চিত হয়েছে স্বেচ্ছায়। ভাল ছবি দেখেনি, উল্টে আবর্জনার মতো নিম্নমানের ছবি দেখে আপ্লুত হয়ে গিয়েছে। আমার ২১তম ছবি দেখি বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রথম। দর্শক বা সমাজের মন কী অবস্থায় রয়েছে তার উপর নির্ভর করছে ছবি। সৃজিত গবেষণামূলক ছবির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ও ঝুঁকি নেয়। নানা স্তরে ছবি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছে, যেটা আমাকে খুব আনন্দ দেয়।
কৌশিক সেন: কৌশিক তো একজন প্রথম সারির পরিচালক। কিন্তু ওর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে এটা কখনও মনে হয়নি। নিজেকে পরিচালক হিসাবে জাহির করেনি সেটে। সৃজিতকে ও যে ভাবে দেখে, তার কিছুটা বাইরে থেকে দেখা, আর কিছুটা কাজ করতে গিয়ে ওকে চিনেছে। এই উপলব্ধি যে কোনও শিল্পকে সমৃদ্ধ করে। এই যে দেবের ফ্যানক্লাব ও শিবুর ঘটনা ঘটল, এখানে তো কেউ কারও শত্রু নয়! পারস্পরিক সম্মান না থাকলে কাজের উন্নতি হবে কী ভাবে? আজ যদি সৃজিতের বদলটা কৌশিকের চোখে না পড়ে অথবা, কৌশিককে অভিনেতা হিসাবে ব্যবহার করতে গিয়ে সৃজিতের যদি কোনও প্রাপ্তি না হয়, তা হলে একসঙ্গে কাজ করে লাভ কী হল!
প্রশ্ন: কোনও কোনও ছবিতে আপনার উপস্থিতি দেখে লোকে বলে, “কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় শেষে এই ছবিতে অভিনয় করল!” কী উত্তর দেবেন?
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়: অভিনয় করতে ভাল লাগে আমার। অভিনয় যখন করছি, তখন আমি একজন পেশাদার মানুষ। কলকাতায় যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁদের অনেকের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ চাই আমি। যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁরা নেন। আমাকে তো সেই অর্থের মর্যাদা দিতে হবে। আমার কোনও রেস্তরাঁ নেই, বইয়ের দোকান নেই, বিউটি পার্লার নেই। তা হলে আমি আমার অংশটুকু কী ভাবে চালাব? সে ক্ষেত্রে আমাকে বছরে চারটে ছবি বানাতে হবে! আমি যদি একটু ভাল ভাবে জীবন কাটাতে চাই, সে ক্ষেত্রে আমাকে রোজগারের দ্বিতীয় উপায় ভাবতে হবে। যেটা পারি সেটাই করব, অভিনয়। আর অভিনয় করতে গেলে আমার কাছে সব সময় ‘পথের পাঁচালী’ আসবে না! সব ধরনের কাজই আসবে। সে ক্ষেত্রে আমি দেখি, আমার চরিত্রটার একটু হলেও কাজ আছে কি না। যিনি আমাকে কাজটা দিচ্ছেন তিনি তো সম্মান করেন বলেই কাজ দিয়েছেন। বাকিরা পছন্দ না করলে সেটা তাঁদের ব্যাপার। তা ছাড়া আমি যখন টাকা নিচ্ছি, এটাই মাথায় থাকে, ছবির শেষে যেন কেউ না বলতে পারে, “ও ছবিটা ঝুলিয়ে দিয়েছে!” অভিনয় করতে করতেই বোঝা যায়, এই ছবি এডিটের পরেও দাঁড়াবে না। আমি কাউকে কৈফিয়ত দেব না। রোজগার করে বাড়িতে দেব, সকলে আনন্দে থাকবে। আমি বেশ করব। দুর্বল ছবিতেও অভিনয় করব, ভাল ছবিতেও অভিনয় করব।
অনন্যা: আমার কাছে যে ভূরি-ভূরি ছবির সুযোগ আসে, এমন নয়। তিন বছরে যদি দুটো ছবি আসে, এমনিই তো কাজের পরিমাণ কম। দুটোর মধ্যে যেটা ভাল চরিত্র সেই কাজটাই করব।
কৌশিক সেন: আমার উপায় নেই, কারণ আমার থিয়েটার রয়েছে। ফলে আমাকে বাছাই করেই কাজ করতে হয়। আমার প্রথম ভালবাসা তখনও থিয়েটার ছিল, এখনও থিয়েটার। চরিত্র বাছাই করে কাজ করার সুযোগ পাই সব সময়, তা নয়। থিয়েটারকে প্রাধান্য দিয়েই কাজ করি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy