‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকের মধ্য দিয়েই সিরিয়াল জগতে পা রাখেন শ্রুতি ।
আপনার জার্নিটা কেমন ছিল?
জার্নি বলতে... আমার বাড়ি কাটোয়া... মফসসল একদমই। পাঁচ বছর বয়স থেকে নাচ শিখি। কাটোয়াতে আমার নাচের স্কুল রয়েছে। পরে মডেলিং ও থিয়েটারেও জয়েন করি। ।অডিশনের দিন তিন খানা লোকাল ট্রেন ব্রেক করে এসেছিলাম। আমাকে রিজেক্ট করে দেওয়া হয় পরে সাহানাদি আমার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে কাস্টিং ডিরেক্টরকে বলেন যে, ‘এই মেয়েকেই আমার চাই। যেখান থেকে পার ওকে নিয়ে এসো।’ আবার তিনটে লোকাল ট্রেন ব্রেক করে কলকাতায় আসি। আমার লুক সেট হয়। তার পর তো... ‘ত্রিনয়নী’ আমার জীবনের ফার্স্ট ব্রেক, অডিয়ো ভিজুয়াল মিডিয়াতে।
অডিশনের খবর কী করে পেলেন?
নাটকের সূত্রেই। ‘রঙ্গিলা’ থিয়েটার গ্রুপে কৌশিক কর আছেন। উনিই আমাকে অডিশন দিতে বলেন। এই প্রজেক্টের জন্য এক জন ডাস্কি মেয়ে খোঁজা হচ্ছিল। আমি তো অডিশন দিইনি কখনও। স্টেজটাই আমার নেশা ছিল। ধারাবাহিকে আসব ভাবিনি। আমার স্কিন কমপ্লেক্সন নিয়ে খুব ইনসিকিয়োরিটিতে ভুগতাম। ছোট থেকেই খুব ইনফিরিয়োরিটি কমপ্লেক্সে ভুগেছি। বাবা একটা দোকানের কর্মচারী... প্রচণ্ড স্ট্রাগল...মাও সঙ্গে ছিলেন... একটা সময় বাবার কোনও কাজ ছিল না... তখন আমি ঠিক করি কাজ করব... সেখান থেকে আজ...
কমপ্লেক্স কেটেছে?
কেটেছে বলতে... এই কাজের মধ্য দিয়ে সেলফ কনফিডেন্স হয়তো একটু বাড়াতে পেরেছি। যাঁরা আমাকে এত দিন ডমিনেট করে এসেছেন তাঁদের একটা ট্রান্সফরমেশন দেখছি, হঠাৎ করে আমাকে আপন করে নিচ্ছেন। বাট এখানে এসে... আমার ইউনিটের লোকজন ভীষণই ভালো... কিন্তু কাজ করতে করতে... আমি জোর করে বলতে পারি না যে এখানে রেসিজম নেই। প্রচণ্ড পরিমাণে আছে... সেটা ফিল করি এখনও। টু বি ভেরি অনেস্ট, আমার গোটা ইউনিটে একমাত্র ডাস্কি আমি। তা নিয়ে অনেক কিছুই হয়... একটা খারাপ লাগা থাকে। কিন্তু এন্ড অব দ্য ডে নিজেকে সান্ত্বনা দিই যে ‘ত্রিনয়নী’ আমার সিরিয়াল, আমিই ত্রিনয়নী... হা হা হা... এত দিন জানতাম এ সব মফসসলেই হয়। বাট কলকাতাতেও এতটা বেশি জানা ছিল না। হিরোইন মানেই দে শুড বি ভেরি গ্ল্যামারাস, অ্যাট্রাক্টিভ। আমি মনে করি যে আই অ্যাম অ্যাট্রাক্টিভ ইন মাই ওয়ে। আমি সব সময় পাওলি দাম, পার্নো মিত্র, এঁদের খুব ফলো করি।
হিরো গৌরব রায়চৌধুরী-র সঙ্গেও ভালই বন্ধুত্ব শ্রুতির
টেলিভিশনে ডাস্কি নায়িকারা কিন্তু হিট।
আমি খুবই হ্যাপি যে টিআরপি লিস্টে ‘কৃষ্ণকলি’ টপে আছে। শ্যামা, মানে তিয়াসাদি আমার খুব ভাল বন্ধু। ‘ত্রিনয়নী’-ও টিআরপি তালিকায় সেকেন্ড পজিশনে আছে। তার মানে দর্শক অ্যাকসেপ্ট করছেন। খুবই ভাল লাগছে। আমার মনে হয়, মানুষের বাইরের রূপের থেকে ভেতরের শক্তিটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সেটাই দর্শক প্রমাণ করছেন।
আরও পড়ুন: বলিউডি সেলেব্রিটির সঙ্গে অতীতের গোপন প্রেম স্বীকার সোনাক্ষীর!
তিয়াসা বাস্তবে কিন্তু ডাস্কি নয়...
না, তিয়াসাদিকে ডাস্কি করা হয়। আর ‘ত্রিনয়নী’-তে আমি যা তাই দেখানো হচ্ছে। ত্রিনয়নীর স্ট্রাগলের সঙ্গে আমার স্ট্রাগলের অনেক মিল আছে, অন্তত রেসিজমের জায়গা থেকে। চরিত্রটা রিলেট করতে পারছি। এখানে মিস ম্যাচটাই দেখানো হচ্ছে। আমার হিরোর স্কিন কালার আমার বিপরীত। সেটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়েছিল, ‘এই মেয়েটাকে কাজের লোকের পার্ট দিলে ভাল হত। এ তো সাক্ষাৎ কালী। এ হিরোইন চলবে না।’ আমি ঘরে বসে মায়ের সামনে কাঁদতাম, ‘দেখ মা, একটা ভাল সুযোগ পেলাম। তা-ও মানুষ কী রকম করছে।’ তখন আমার হিরো আমাকে সব সময় মন দিয়ে কাজ করার কথা বলত, সাহস দিত। এক মাসের মধ্যেই সিরিয়ালটা টপ রেটেড হয়ে যায়। সেটাই খুব ভাল লাগছে।
‘ত্রিনয়নী’ -র চেনা ছক থেকে বেরিয়ে অন্য রূপে শ্রুতি
হিরোর সঙ্গে কেমন কেমিস্ট্রি?
আমার হিরো গৌরব রায়চৌধুরী। ও যখন ‘তোমায় আমায় মিলে’ সিরিয়ালটা করত আমি ওকে দেখতাম। ওর ফ্যান ছিলাম (হাসি)। আজ আমার কো-আর্টিস্ট। ভীষণ ভাল বন্ধুত্ব। আমার মা ওর জন্য রান্না করে পাঠায়। ও রান্না করে আনে, খাবার অর্ডার করে। একসঙ্গে খাই। আমি যেহেতু নতুন কাজ করছি, অনেক টেকনিক্যাল বিষয় ওর কাছ থেকে শিখছি। ইউনিটের প্রত্যেক কো-আর্টিস্ট খুব কোঅপারেট করে। ডিরেক্টর, ক্রু মেম্বাররাও খুব ভাল। মনেই হয় না নতুন কাজ করছি।
ছবি: সংগৃহীত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy