Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Koel Mallick

আমি মিতিন মাসি, রানে আমার পার্থ মেসো: কোয়েল

পোস্টার থেকে ট্রেলর। লড়াই করছেন তিনি মানুষের মুখোশ পরা শুম্ভ-নিশুম্ভের সঙ্গে। কে তিনি? সেলুলয়েডে তিনি মিতিন মাসি। কোয়েল মল্লিক। সংসার থেকে সিনেমা, সব নিয়ে অকপট আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে। পোস্টার থেকে ট্রেলর। লড়াই করছেন তিনি মানুষের মুখোশ পরা শুম্ভ-নিশুম্ভের সঙ্গে। কে তিনি? সেলুলয়েডে তিনি মিতিন মাসি। কোয়েল মল্লিক। সংসার থেকে সিনেমা, সব নিয়ে অকপট আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে।

কোয়েল মল্লিক।

কোয়েল মল্লিক।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:৩৫
Share: Save:

রানে কী বলে ডাকছেন এখন? মিতিন মাসি?

(প্রচন্ড হাসি) সেরকমই অবস্থা। তবে এই চরিত্র করা স্বপ্নের মতো। ছোটবেলাকে ছুঁয়ে যাওয়া।

কীরকম?

পুজোবার্ষিকীতে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের গল্প পড়তাম। নতুন পাতার গন্ধে সব জ্বলন্ত কাহিনি। শেষ করে তবেই শান্তি।চরিত্রগুলো গেঁথে যেত মনে।ভাবিনি আমিই কোনও দিন সেই ‘মিতিনমাসি’-র চরিত্রে অভিনয় করব!

ট্রেলারে দেখা যাচ্ছে আপনি লাফ দিচ্ছেন, শত্রুর সঙ্গে মারপিট করছেন একা! কী করে করলেন?

এই ছবির জন্যআলাদা করে মার্শাল আর্ট শিখতে হয়েছে আমায়।মিতিন মাসি এমন এক মানুষ, বাড়িতে সব্জি আনাজ কাটছেন আবার ব্যাগে রিভলভার নিয়ে বেরচ্ছেন রাস্তায়। নির্ভীক। দরকার হলে শত্রুকে হাতেনাতে সিধে করে দিচ্ছেন। সেল্ফ ডিফেন্সের বিষয়টা এই ছবিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি ছোট বয়স থেকে নাচ শিখেছি, সিনেমায় আছি দীর্ঘদিন। তাই ওয়েট ট্রেনিং, এক্সারসাইজের সঙ্গে যুক্ত বলে ফাইট সিনগুলো করতে সুবিধে হয়েছে আমার। মুম্বই থেকে বিখ্যাত ফাইটমাস্টার সুনীল রড্রিককে নিয়ে আসা হয়েছিল আমার জন্য।

আরও পড়ুন-‘এখনও সম্মান করি নেহাকে’, বিচ্ছেদের এক বছর পর অকপট হিমাংশ কোহালি

শোনা গিয়েছে, আপনি সব স্টান্ট নিজে করেছেন? ডামি নেননি কোনও!

এটা তো করতেই হত। আমার বডি ডাবলের জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে আসা হয়েছিল মুম্বই থেকে, কিন্তু আমি সব স্টান্ট নিজেই করেছি। অরিন্দমদা মজা করে বলেছিল, কোনও মানে হয়, আমরা মুম্বই থেকে পয়সা দিয়ে তোমার বডি ডাবলের লোক আনলাম আর সে ভিড় সামলালো!

'মিতিন মাসি' তে সব স্টান্ট নিজেই করেছেন কোয়েল

আজকের সমাজে মহিলাদের সেল্ফ ডিফেন্স কতটা জরুরি?

ভয় থেকে সব সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যে কোনও পরিস্থিতি আসুক, ছুটে পালালে চলবে না। আর মেয়েরা নিজেদের ফিজিক্যালি দুর্বল ভেবে সমস্যা থেকে পালায়। এটা কোনও কাজের কথা?গৃহবধূ হোক, ছাত্রী হোক, কর্মরত মহিলা হোক, মানসিকভাবে সকলকে দৃঢ় হতে হবে। ভয় মাথা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। আর তার সঙ্গে দরকার ফিজিকাল ফিটনেস। রাস্তায় কিছু হল, অফিসে কিছু হল যাতে মেয়েরা মোকাবিলা করতে পারে। মিতিন মাসি বলছে, ছোটবেলা থেকে শেখানো হয় মেয়েরা অবলা। নরম। এটা ভুল শেখানো। কিছু মহিলাই মেয়েদের আরও দূরে ঠেলে দেয়। বলে, আমরা পারিনি তোরাও পারবি না! এই ভয়টা ছোট থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এটা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। এটা থেকেই বেরনোর কথা বলবে এই ছবি। এটা জেন্ডারের বিরুদ্ধে কোনও ছবি নয়। তবে আজও আমাদের ‘ডটার’স্ ডে’,‘উইমেনস ডে’করতে হচ্ছে আলাদা করে। কেন? এ ভাবে আলাদা কেন? আসলে তো মনুষ্যত্বের কথা বলতে চাই আমরা। মিতিন মাসিও সেই জায়গা থেকে শুভ শক্তির জয়গান গাইবে। আমার মনে হয় অরিন্দমদাও এই ভাবনা থেকে ছবি করেছেন।

কেমন লাগল পরিচালক অরিন্দম শীলের সঙ্গে কাজ করে?

অরিন্দমদা এই গোয়েন্দা জনারে প্রচন্ড পারদর্শী। মিতিন মাসির প্রত্যেকটা ফ্রেমে মিস্ট্রি থাকে। উনি জানতেন, মিতিন মাসি নিয়ে ঠিক কী কী করবেন। এটা আমার কেরিয়ারের প্রথম ছবি যেখানে আমি ছবিকে হ্যাঁ বললাম আর তার এক মাসের মধ্যে ছবি শুরু হল। আর তিন মাসের মধ্যে ছবি রিলিজ করছে। অরিন্দমদা ফোন করে বরাবর স্ক্রিপ্টে এটা যোগ করছি, এটা রাখছি না। আমি পুরো স্ক্রিপ্ট লেখার মধ্যেই ঢুকে গিয়েছিলাম। অন্য ছবির কাজ করছি, কিন্তু একটা সত্তা শুট শুরুর আগেই মিতিন মাসিকে দিয়ে দিয়েছিলাম।অরিন্দমদা এই সুবিধের ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল।

সাহিত্য থেকে কতটা আলাদা অরিন্দম শীলের মিতিন মাসি?

সুচিত্রা ভট্টাচার্য সুপার হিউম্যান বিয়িং নন। আমি বা অরিন্দমদা সমস্ত মেয়ের মধ্যে তাঁকে দেখতে পাই। এই ছবিতে নারীশক্তির জাগরণকে তুলে ধরা হয়েছে। সুচিত্রা ভট্টাচার্য যে ভাবে চেয়েছিলেন সে ভাবেই এই চরিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। তবে দুটো ঘটনা অন্য ভাবে বলা হয়েছে। সেটা কী? দর্শককে হলে গিয়ে দেখতে হবে। ওটা অরিন্দমদার ক্যারিশমা।

কোয়েলের 'মিতিন মাসি' লুক

এরকম একটা চরিত্র, ট্রেলারে চমক। ঘরের প্রডাকশনে করলেন না! রানে কী বলছেন?

রানে তো খুব এক্সাইটেড। বলছে, একী, তুমি এ ভাবে এটা করে ফেললে? ও চাইতে শুরু করেছে ওর প্রডাকশনের জন্য মিতিন মাসিকে।

তাহলে পরের মিতিন মাসি রানের প্রোডাকশনে?

নাহ্ সেটা জানি না। তবে দর্শকদের ভালবাসায় আমি এই কাজগুলো করতে পারছি।রানের প্রসঙ্গ যখন এল একটা কথা বলি। মিতিন মাসির সঙ্গে পার্থ মেসোর যেরকম সম্পর্ক, প্রচন্ড সম্মান আর শ্রদ্ধার জায়গা। মিতিন মাসির মরাল সাপোর্ট। এই যে বিষয়টা, সম্পর্কটা আমার জীবনেও ছায়ার মতো আলো ফেলেছে। রানে হচ্ছে আমার জীবনে পার্থ মেসো। ওকে শুধু মজা করে বলি, দেখেছ, আমি করে ফেললাম মিতিন মাসি!ওর সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করি।

আরও পড়ুন-রানুকে নিয়ে এ বার বায়োপিক, নামভূমিকায় সুদীপ্তা?

এক জগতের মানুষ আপনারা। অসুবিধে হয় না কাজের জায়গা চেনা হলে?

আমি তো বলব সুবিধেই হয়। আমাদের সম্পর্কটা শুরুই বন্ধুত্ব থেকে, তাই সব কিছু শেয়ার করা যায়। একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস রাখা যায়। সেখান থেকে ভালবাসা জন্মায়।

রানে দেখেছে ছবিটা?

আরে, আমিই দেখিনি পুরোটা!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE