শ্রেয়া।
প্র: অতিমারি-পরবর্তী সময়ে রেকর্ডিং শুরু করেছেন। লাইভ শো করছেন?
উ: এখনও না। আমি যে ধরনের কনসার্ট করি, সেগুলো মূলত টিকিট কেটে দেখতে আসেন দর্শক। লাইভ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে হয়তো কোথাও কোথাও, কিন্তু আমি এখনও সাবধানতা অবলম্বন করছি। সরকারি ভাবে যখন সব কিছু আবার আগের মতো করে আয়োজন করার অনুমতি মিলবে, তার জন্য অপেক্ষা করছি।
প্র: ভাই সৌম্যদীপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আপনার সিঙ্গল ‘অঙ্গনা মোরে’ মুক্তি পেয়েছে সদ্য। অনেক দিন পরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট গানে ফিরলেন...
উ: ফিল্মের গান তো করতেই থাকি, হিন্দি-বাংলা-তামিল-তেলুগু বিভিন্ন ভাষার ছবিতে। লকডাউনে বেশি কাজ হচ্ছিল না, উৎসাহ হারিয়ে ফেলছিলাম। তখন মনে হল, অনেক দিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজ়িক করা হয় না। ভাবছিলাম এমন কী করা যায়, যা একটু আলাদা শুনতে লাগবে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আমার প্রথম প্রেম। তবে ‘অঙ্গনা মোরে’তে শুধু আমার গায়কি দেখাতে চাইনি। গানটা যাতে সব বয়সের শ্রোতাদের কাছে পৌঁছয়, সে ভাবেই ভেবেছিল আমার ভাই, সৌম্যদীপ। ও আমার চেয়ে সাত বছরের ছোট। আমেরিকায় চাকরি করে। কাজের ফাঁকে যতটা সময় পায়, গানবাজনা নিয়ে থাকে। এটা ওর সঙ্গে আমার দ্বিতীয় কাজ।
প্র: লকডাউনে অনলাইন কনসার্ট বা লাইভ অনুষ্ঠান করেছেন?
উ: সত্যি বলতে কী, আমি ভীষণ মুডি। যে কাজ করে আনন্দ পাই না, সেটা কখনও করি না। অনলাইন কনসার্টে সেই মজাটা নেই। শিল্পী এবং শ্রোতা— কোনও তরফেই নেই। লকডাউনে বহু শিল্পীর কাছেই লাইভ কনসার্ট উপার্জনের একটা মাধ্যম ছিল, এটা ঠিকই। তবে আমি শুধু উপার্জনের জন্য কোনও কিছু করিনি এত বছরের কেরিয়ারে।
প্র: সিনেমার গান তৈরি মাঝে বন্ধ ছিল অনেক দিন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজ়িক কি সেই জায়গায় বেশি করে উঠে এসেছে?
উ: হ্যাঁ... ২০২০-র বেশিরভাগ গানই তো ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এখন সময় বদলে গিয়েছে। শ্রোতাদের কাছে গান ডিজিটালি পৌঁছে যায় এখন। আমরা যখন প্লেব্যাক করি, তা বড় পর্দায় রিলিজ় করবে নাকি ওটিটি-তে, সেটা মাথায় রাখি না। ছবির সঙ্গে মিউজ়িক লেবেল জড়িয়ে থাকে। তার মার্কেটিং যে ভাবে হয়, তার সঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজের পাল্লা দেওয়া একটু কঠিন। তবে এখন রিজিওনাল মিউজ়িকও মেনস্ট্রিমকে টক্কর দেয়। পঞ্জাবি মিউজ়িকের কথাই ধরুন। আমি চাই সেটা বাংলা থেকেও হোক।
প্র: আপনি বাংলা গানও করেন মাঝে মাঝেই। কোথায় ফাঁক রয়ে যাচ্ছে মনে হয়?
উ: কোথাও ফাঁক নেই। বাংলাতে অনেক প্রতিভাবান মিউজ়িশিয়ান আছেন, যাঁদের সঙ্গে কাজ করে আমি আনন্দ পাই। সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘প্রেম টেম’ ছবিতেই আমার গান রয়েছে। বাজেটের কথা অনেকে বলেন, তবে আইডিয়া ভাল হলে বাজেটে কিছু যায় আসে না। বাঙালি হিসেবে আমরা কেন নিজেদের জাতীয় স্তরে ভাবতে পারছি না আর? আমাদের কি আত্মবিশ্বাস কমে গিয়েছে? এক সময় গানের প্রথম ড্রাফট তৈরি হত বাংলায়, সেখান থেকে পরে হিন্দি গান হত। এস ডি, আর ডি বর্মন, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রা তাই করেছেন। সুমন চট্টোপাধ্যায় যখন তাঁর গান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, তার মান ছিল জাতীয় স্তরের। জনপ্রিয়তার নিরিখে তা দালের মেহেন্দির গানের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। আসলে বলিউডের মতো কিছু করতে চাওয়ার ইচ্ছেটা থাকা উচিতই নয়। কত মিলিয়ন ভিউ হবে, সেটা ভেবে বাংলায় কোনও শিল্পী গাইতে আসেন না। কিন্তু হিন্দি মেনস্ট্রিমে যখন কোনও শিল্পী এমনটা ভাবেন, খারাপ লাগে।
প্র: এখন পুরনো গানের কভার গেয়ে জনপ্রিয় হওয়ার ট্রেন্ড নিয়ে কী বলবেন?
উ: শিল্পী হিসেবে অরিজিন্যাল কাজের পক্ষে আমি। কারণ তা করার জন্য সাহস লাগে। ২০২০-র দশকে কী গান হয়েছিল, এই প্রশ্নটা কেউ কুড়ি বছর পরে করলে যেন বলতে না হয়, সেই সময়ে শুধু নব্বইয়ের দশকের গানের রিমেক হয়েছিল! বিভিন্ন মিউজ়িক লেবেল অনেক সময় বাধ্য করে
কভার করতে, কারণ তা জনপ্রিয় হওয়া সহজ। আমি এটার বিরোধী নই, কিন্তু তার পাশাপাশি অনেক অরিজিন্যাল গানও বেরোনো উচিত বলে মনে করি। সেই জন্যই তো ‘অঙ্গনা মোরে’র মতো গান করছি। কত বছর গানের গলা থাকবে, জানি না। কিন্তু যত দিন গাইতে পারছি, লোকের মনে থেকে যাবে, এমন কাজ করে যেতে চাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy