রিদ্ধিমা ঘোষ
শীতের বিকেলে কফি হাতে রিদ্ধিমা ঘোষ। লকডাউনে ওয়ার্ক আউট করা হয়নি। কিন্তু লাবণ্যে ঘাটতি পড়েনি। গৌরব চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘর করা থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে কম কাজ করা নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে অকপট তিনি।
প্রশ্ন: কফিতে চিনি। ওয়ার্ক আউট বন্ধ। মেনটেন করছেন কী ভাবে?
লকডাউনে বাড়ির কাজ করেই ওয়ার্ক আউট হয়ে গিয়েছে। আমি আর গৌরব আসলে কুঁড়ে। এর বেশি আর কিছু ইচ্ছে করেনি।
প্রশ্ন: কুঁড়েমির জন্যই কি ইনস্টাতে কাপল গোলস দেন না?
দেখুন সব কিছু ইনস্টায় পোস্ট করতে পারব না আমরা।
প্রশ্ন: কী বলছেন! রণবীর-দীপিকা তো চুমু খাওয়ার ছবিও ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন...
করতে পারেন। তাঁদের ব্যাপার। তবে আমরা ছবির প্রমোশন বা কোনও ঘটনায় কিছু বলা—এই অবধি ইনস্টায় রাখি। আমি গৌরবকে চুমু খেলে সেটা ছবি দিয়ে জানাতে হবে? প্লিজ হবে না। আমরা নিজেদের মধ্যে #কাপলগোলস। বাইরে আঙুল দিয়ে দেখাতে পারব না।
রিদ্ধিমা ঘোষ ও গৌরব চক্রবর্তী
প্রশ্ন: আচ্ছা ছবিতে আপনি কাউকে চুমু খেলে গৌরব আপত্তি করবেন?
কেন করবে? ও খুব ভাল করে জানে একজন অভিনেত্রীকে ও বিয়ে করেছে। তবে এ বিষয় একটা কথা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচলিত আছে। গৌরব ছবিতে বা সিরিজে অন্য নায়িকাকে চুমু খেতে পারে। আমি নাকি গৌরব ছাড়া আর কোনও নায়ককে চুমু খাব না। তাই আমি কাজ পাই না! এটা কিন্তু একদম ভুল!
প্রশ্ন: আপনি ইনস্টায় রিভিলিং পোশাক পরেছিলেন?
হ্যাঁ। আমি ওরকম পোশাকে কমফর্টেবল। আর আমি কী করতে পারি ‘রাজকাহিনী’-তে ধরা আছে। পুরো দৃশ্যটাও রাখা হয়নি। তবে রোজ ওরকম পোশাক পরে ছবি দিতে পারব না।
আরও পড়ুন: কালো ব্রা-লেটে আলিয়া, তাঁর কোমর ধরে কাছে টানলেন রণবীর
প্রশ্ন: আপনি বিবাহিত বলেই এই ধারণা?
আরে! এখন বেশিরভাগ নায়িকাই তো বিবাহিত। আমাদের তো সব কিছুতেই মুম্বই ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্ক। তো সেখানে দীপিকা, অনুষ্কাকে দেখুন। আমাদের এখানে ঋতুদি কতদিন ধরে কাজ করছেন, ইন্ডাস্ট্রি রুল করছেন। এগুলো কোনও বিষয়ই নয়। আমার শাশুড়িমা নিয়মিত কাজ করছেন। একজন মহিলা অফিস করলে তাকেও কি এই প্রশ্ন করা হয়?
প্রশ্ন: তাহলে কাজ না পাওয়ার কারণ কী?
কারণ, আমি ফর্সা। কারণ, আমার নাকি ‘ভাল মেয়ে’ইমেজ।কারণ আমায় শিক্ষিত দেখতে। শুনেই যাচ্ছি। আপনি ভাবুন ‘রাজকাহিনী’-তে ওরকম চরিত্র করার পরেও টানা দু’বছর আমি কোনও কাজ পাইনি। জাস্ট বসেছিলাম।
প্রশ্ন: সমস্যাটা কোথায়? ব্যোমকেশের ‘সত্যবতী’-র বাইরে কি কেউ ভাবছে না আপনাকে?
কিছুটা তাই। ওই যে বললাম, ‘ভাল মেয়ে’। আর কী কারণ জানি না।
প্রশ্ন: আপনি তো সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির পার্টিতে নেমন্তন্ন পান। ওঁকে বলেননি কাজের কথা?
বহুবার বলেছি। অনেকেই বলেন চরিত্রর সঙ্গে স্কিনটোন যাচ্ছে না। কালো রঙের জন্য যেমন অনেক মহিলাকে নানা কথা শুনতে হয়, তেমনই ফর্সা রঙের জন্য আমাকে অনেক শুনতে হয়েছে।
প্রশ্ন: গৌরব কী বলে?
গৌরব আর আমি কাজের ক্ষেত্রে একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে কিছু করি না। হ্যাঁ, কাজ শুরু হলে বলি। স্ক্রিপ্ট পড়ছি, ওকে বললাম তুমি আমার সঙ্গে রিহার্স কর।
আরও পড়ুন: নিজের স্বামী বেপাত্তা, রুবিনার স্বামীকে 'হট' লাগছে রাখির
প্রশ্ন: আপনি গৌরবের চেয়ে অনেক কম কাজ করেন। খারাপ লাগে?
কেন কম কাজ করি জানি না। মাঝে মাঝে আমি বলে ফেলি তুমি শ্যুটে যাচ্ছ, আমি বসে আছি। ও কিন্তু প্রচুর মোটিভেট করে আমায়। কখনও লস্ট ফিল করেছি। গৌরব সামলেছে। আমি অনেককেই বলি কিন্তু, কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করি। তবে কখনও বলি না ওই রোল দাও। আমি বলি আমি অডিশন দিতে চাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এই চলটা নেই। এ বার আমাদের এখানেও অডিশন চালু করা উচিত। লোকে সত্যবতী ছাড়া আর কিছু ভাবছে না আমায়।
প্রশ্ন: ‘মগ্ন মৈনাক’-এ সত্যবতী কেমন করে আসছে?
এখানে সত্যবতী সারাক্ষণ আছে এমন নয়। সিজন৬-এ সত্যবতী অজান্তেই কেস সলভ করে দেয়।
প্রশ্ন: অনির্বাণের সঙ্গে কেমিস্ট্রিটা কেমন জমছে?
অনির্বাণ আগে গৌরবের বন্ধু ছিল। এখন ও বলে, ও আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সেটের বাইরে আমাদের মান-অভিমান-ঝগড়া যে ভাবে চলে সেটাই সত্যবতী আর ব্যোমকেশের সম্পর্কে ধরা পড়েছে। ও চরিত্রে যে ভাবে ঢুকে যায় তা পরোক্ষ ভাবে সত্যবতীকেও সাহায্য করে। ব্যোমকেশ একজন সাধারণ মানুষ হয়ে বুদ্ধির জোরে সকলের চেয়ে আলাদা।
‘মগ্ন মৈনাক’-এ সত্যবতী
প্রশ্ন: অনির্বাণও তো তাই...
তাই? আমার মনে হয় না! ( প্রচন্ড হাসি)। সিজন ১-এ ও সেটে এসে খুব হাবভাব দেখাতো। এখন আমি হাবভাব দেখাতেই দিই না।
প্রশ্ন: অনির্বাণের জন্য কোনও প্রশ্ন আছে?
ওকে জিজ্ঞেস করবেন তো, ও যে সিরিজটা পরিচালনা করছে সেখানে আমি কেন নেই?
প্রশ্ন: অর্জুনের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক?
খুব ভাল। শুধু ও আমাকে ‘বৌদি’বললে রেগে যাই, ভাল লাগে না। আমি তো ওর বিপরীতেও কাজ করেছি। তবে আমাদের জমজমাট পরিবার। আমরা এখন সাত জন।অর্জুনের মেয়ে হল। সপ্তাহের একটা দিন সবাই আড্ডা দিই।
প্রশ্ন: আপনারা প্ল্যান করছেন না?
না। আমরা প্ল্যান করে কিছু করি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy