Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Celebrity Interview

‘রবিনকে খুব মনে পড়বে’, ‘মির্জ়াপুর ৩’-তে সফর শেষে কি মনখারাপ প্রিয়াংশুর?

‘মির্জ়াপুর ৩’ সিরিজ়ে তাঁর সফর শেষ হয়েছে। রক্তের দাগ আর অন্ধকার আবহের মধ্যেও তাঁর চরিত্রটি মুহূর্তে দর্শকের মন হালকা করত। ‘রবিন’-এর মৃত্যু হওয়ায় কি মনখারাপ প্রিয়াংশু পেইনুলির? মুম্বই থেকে জানালেন আনন্দবাজার অনলাইনকে।

Exclusive interview of Priyanshu Painyuli who worked in Mirzapur

প্রিয়াংশু পেইনুলি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্বরলিপি দাশগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৪২
Share: Save:

প্রশ্ন: মির্জ়াপুর ৩’-এ আপনার চরিত্রের পরিণতি এত দিনে প্রায় সকলেই জেনে গিয়েছেনএমন একটা দৃশ্যের জন্য কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

প্রিয়াংশু: দর্শক ওই দৃশ্য দেখে দুঃখ পাচ্ছেন। আর সেটা দেখে আমি আনন্দ পাচ্ছি (হাসি)। দর্শক চরিত্রটি সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন, তাঁরা ভাবতেই পারেননি, এমন হতে পার। ‘মুন্না ভাই’য়ের মৃত্যুতেও সবাই দুঃখ পেয়েছিল। কিন্তু রবিনের সঙ্গে যে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটতে পারে, কেউ আশা করেননি। অনেকে আবার বলেছেন, রবিন অন্ধ হলেও চলত। মেরে ফেললেন কেন! কিন্তু, পরিচালক এমনই ভেবেছিলেন। আমারও রবিনকে খুব মনে পড়বে।

প্রশ্ন: এ রকম ভয়াবহ দৃশ্যে অভিনয় করা ঠিক কতটা কঠিন মনে হয়েছে?

প্রিয়াংশু: অবশ্যই কঠিন ছিল। সিরিজ়েই দেখা যাচ্ছিল, প্রথম বার পরিবারের দায়িত্ব নিচ্ছে রবিন। এমনকি গুড্ডুর মতো শক্তিশালী মানুষের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে। তা ছাড়া, রবিন তো পিছনের সারিতেই থাকতে ভালবাসে। অশান্তি পছন্দ করে না। রবিন সব সময় একটা পরিবার চাইত। তাই, ওই দৃশ্যের আগেও একটা পারিবারিক আবেগপ্রবণ দৃশ্য ছিল।

প্রশ্ন: রবিনের সঙ্গে কি বাস্তবে আপনার মিল রয়েছে?

প্রিয়াংশু: একটা মিল তো রয়েছেই। রবিন খুব ভাল কথা বলতে পারে এবং কথার মাধ্যমে মানুষকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়ে নিতে পারে। আমার মধ্যেও মনে হয় সেই ব্যাপারটা আছে (হাসি)। এমনও হয়েছে, দু’টি মানুষ খুব ঝগড়া করছে, সেই সময় আমি শুধু কথা বলে তাদের মধ্যে মিটমাট করিয়ে দিয়েছি। রবিনের জন্য আর একটা বিষয় জানতে পেরেছি— রঙিন ছাপা শার্টে আমাকে দেখতে ভালই লাগে।

প্রশ্ন: আপনি তো প্রথম বাবলু ভাইয়া অর্থাৎ বিক্রান্ত ম্যাসির চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন?

প্রিয়াংশু: হ্যাঁ। কিন্তু সেই চরিত্রটি পাইনি। হতাশ হয়েছিলাম। পরে রবিনের চরিত্রে অডিশন দিয়ে সুযোগ পাই। এই চরিত্র আরও বেশি সময় বেঁচে থেকেছে (হেসে) আর আমার বেশ ভালও লেগেছে।

প্রশ্ন: নাটকের মঞ্চ থেকে সফর শুরু। তার পর বেশ কিছু কাজ করে ফেললেন পর্দায়বহিরাগত হয়ে কাজ পেতে অসুবিধা হয়নি?

প্রিয়াংশু: শুরুর দিকের সফর খুব সহজ ছিল না। আসলে বহিরাগতদের জন্য প্রতিটি কাজই বেশ কঠিন। কিন্তু প্রত্যেকটি কাজ একটু একটু করে এগিয়ে দেয়। আমরা অভিনয় ভালবেসে এই জগতে আসি। তাই আমাদের ছবির সঙ্গে জড়িত ব্যবসার দিকটা বুঝতে সময় লাগে। মুম্বইয়ে এসে এই কাজের পদ্ধতিটা শিখতেই বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল।

প্রশ্ন: ছবি নির্বাচন করেন কী ভাবে?

প্রিয়াংশু: সত্যি কথা বলতে বেছে বেছে কাজ করার মতো জায়গায় এখনও পৌঁছইনি। সব ধরনের চরিত্রেই কাজ করতে চাই। পরিচালকের উপর নির্ভর করছে অনেকটা। পরিচালককে যদি নিজের ছবি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মনে হয় সে ক্ষেত্রে আমার আর কী সমস্যা!

প্রশ্ন: পঙ্কর ত্রিপাঠীর সঙ্গে কোনও দৃশ্য নেই। তবু এক সিরিজ়ে কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?

প্রিয়াংশু: সব সময় মনে হত, ইস এমন একটা যদি দৃশ্য থাকত যেখানে কালীন ভাইয়ার সঙ্গে রবিনের দেখা হবে। ইচ্ছে ছিল, অন্তত একটি দৃশ্যে যদি তাঁর চরিত্রটি অভিনয় করা যেত! তবে ক্যামেরার পিছনে আমাদের দেখা হয়েছে। পর পর হয়তো আমাদের দৃশ্যের শুটিং হয়েছে। শুধু ভাল অভিনেতা নন, খুব ভাল মানুষও। আসলে আমি মনে করি, প্রতিভা কম হলেও চলে। কিন্তু ভাল মানুষ হওয়াটা খুব জরুরি। পঙ্কজজিও তেমন। খুব শান্ত, মিষ্টি ও মজার মানুষ।

‘মির্জ়াপুর ৩’-এ প্রিয়াংশু।

‘মির্জ়াপুর ৩’-এ প্রিয়াংশু।

প্রশ্ন: আলি ফজ়লের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

প্রিয়াংশু: আলি, শ্বেতা (শ্বেতা ত্রিপাঠী), আমরা সকলে একসঙ্গে থিয়েটার করতাম। সেটা যদিও বহু দিন আগের কথা। আবার ওঁদের সঙ্গে কাজ করলাম ‘মির্জ়াপুর’-এ। ওঁরা যে ভাবে এগিয়েছেন, তা দেখে সত্যিই ভাল লাগে। আমি ওঁদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। সমসাময়িকেরাও অনুপ্রেরণা জোগাতে পারেন। বিশেষ করে সিজ়ন ৩-এ আলির কাজ অসাধারণ। ওঁকে ব্যক্তিগত ভাবেও বলেছি, আমি শুধু তোমার বন্ধু ও সহ-অভিনেতা নই। আমি এখন থেকে তোমার ভক্ত।

প্রশ্ন: এক্সট্র্যাকশনছবিতে ক্রিস হেমসওয়ার্থের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও তো মনে রাখার মতো?

প্রিয়াংশু: ক্রিসের সঙ্গেও কোনও দৃশ্য ছিল না। তবে ওটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ছিল। ‘থর’, ‘অ্যাভেঞ্জার’ দেখার পরে এরই ছবিতে কাজ করা সত্যিই আমার কাছে বড় বিষয়। মনে আছে, শুটিংয়ের আগে আমার কেশসজ্জা চলছিল। ক্রিস হঠাৎ এসে বললেন, দারুণ লাগছে। ওটাই আমার সঙ্গে ওঁর প্রথম দেখা। পরে কথা হয়েছে ওঁর সঙ্গে। ওর মধ্যে একটা খেলোয়াড়ি মনোভাব রয়েছে। ওই ছবিতে আমাকে বাংলাদেশের টানে বাংলা বলতে হয়েছিল। সকলে খুব সহযোগিতা করেছিলেন।

প্রশ্ন: আপনি রাজ চক্রবর্তীর ছবি পরিণীতার হিন্দি সংস্করণে কাজ করছেন?

প্রিয়াংশু: (কিছুটা অবাক হয়ে) এটাও কি সকলে জেনে গিয়েছেন? হ্যাঁ, আমাদের কথা চলছে। গল্প ভাল লেগেছে। আসলে সবটা নিশ্চিত না হলে আমি কিছু বলি না। এমন হয়েছে, ছবির সব কিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে। মুখ্য চরিত্র অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই কাজটা হয়নি।

প্রশ্ন: এমন প্রত্যাখ্যান কী ভাবে সামলান?

প্রিয়াংশু: ব্যর্থতা ও সাফল্য দুটোই যেন খুব প্রভাব না ফেলে, সেই দিকে খেয়াল রাখি। যা-ই হোক, পরবর্তী কাজের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবা শুরু করে দিই। প্রত্যাখ্যান করা হলে অথবা কোনও কাজে আমি ব্যর্থ হলে, চেষ্টা করি পরবর্তী কাজে নিজের সেরাটা যাতে দিতে পারি। সফল হলেও নিজের মূল্যায়ন করি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy