সুজিত সরকারের ‘গুলাবো সিতাবো’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন।
সুরকার শান্তনু মৈত্রের ডাকে প্রথম সুজিত সরকারের সঙ্গে ‘গুলাবো সিতাবো’ ছবিতে কাজ। মাল্টিপ্লেক্সের বদলে ওয়েব প্ল্যাটফর্মে রিলিজ নিয়ে শুধুমাত্র আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে মুখ খুললেন ‘গুলাবো সিতাবো’-র মিউজিক প্রোডিউসার, অ্যারেঞ্জার রথিজিৎ ভট্টাচার্য।
সুজিত সরকার, শান্তনু মৈত্র, অমিতাভ বচ্চন, আয়ুষ্মান খুরানা আর বাংলার রথিজিৎ,পাঁচমাথা মিলল কী করে?
রথিজিৎ: (হাসি) পুরোটাই শান্তনু মৈত্রের কৃতিত্ব। ওঁর সঙ্গে বহু কাজ করেছি। উল্লেখযোগ্য, এইচএমভি থেকে হওয়া গুলজার সাহেবের একটি প্রোজেক্ট। ওঁর কিছু কবিতায় মিউজিক দিয়েছিলেন শান্তনুদা। সেখানে মিউজিক অ্যারেঞ্জার আর প্রোডিউসার আমিই। সে বারের মতো এ বারেও শান্তনুদাই এই ছবির জন্য মুম্বইয়ে ডাকেন।
প্রথম সুজিত সরকারের মুখোমুখি?
রথিজিৎ: এই প্রথম আমার কাজ সুজিতদার সঙ্গে। ভীষণ অমায়িক, ভদ্র। গভীরে ঢুকে কাজ করেন। গড়পড়তা সবাই যা করেন সুজিতদা সেটা এড়িয়ে চলেন সযত্নে। ‘গুলাবো সিতাবো’র কথাই ধরুন, পুরো আবহ নির্ভর ছবি। গান নেই-ই। এ দিকে এই ছবি কমেডির প্রাণভোমরা। কিন্তু এই ঘরানার ছবিতে যে ধরনের মিউজিক ব্যবহার সাধারণত হয়ে থাকে সুজিতদা তার ধারপাশও মাড়াননি। বদলে বাংলার প্রচুর বাজনা এতে শোনা যাবে। বিশেষ করে লোকগানের বাজনা।
উদাহরণ দেবেন?
রথিজিৎ: যেমন, অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘মির্জা’ চরিত্রে মিশেছে একতারার সুর। বাউল গানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বাজনা খমক এখানে শুনতে পাবেন। কোথাও খঞ্জিরা বেজেছে। আবহে এবং থিমে কোনও ভারী বাদ্যযন্ত্রের জগঝম্প নেই। ওয়েস্টার্ন ইনস্ট্রুমেন্ট ছুঁইনি বলব না, তবে খুবই কম। বাংলার লোকগান, মাটির গন্ধ এ ছবির আবহে বেশি। চরিত্র বুঝে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।গোটা থিম একরকম সুরে কথা বলেছে। যা খুব কম ছবিতে দেখা যায়। এটাই সুজিতদা, শান্তনুদা চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্লাভস-মাস্ক পরে স্ক্রিপ্ট পড়ছেন রানি রাসমণি, ক্যামেরা চালু টলিপাড়ায়
এ ছবিতে আপনি কোন ভূমিকায়?
রথিজিৎ: মিউজিক প্রোডিউসার, অ্যারেঞ্জার। প্রোডিউসার হিসেবে কম্পিউটারে সমস্ত মিউজিক প্রোগ্রামিং হয়েছে আমার তত্ত্বাবধানে। নতুন নতুন ভাবনাও নেওয়া হয়েছে আমার থেকে। আবহ ছাড়া একটি গান ‘কঞ্জুস’-এরও মিউজিক প্রোডিউসার আমি। গানে শুনতে পাবেন আমার বাজনা আর ভোকাল পারকাশান। সঙ্গে ছিলেন মুম্বইয়ের আরেকজন মিউজিক প্রোডিউসার। আবহে বাজিয়েছি একতারা, খঞ্জিরা, খমক, পারকাশান। শান্তনুদা বলে দিয়েছিলেন আমাকেই বাজাতে।
‘গুলাবো সিতাবো’-র মিউজিক প্রোডিউসার, অ্যারেঞ্জার রথিজিৎ ভট্টাচার্য। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
কাজ করে কী বুঝলেন? বাংলা-বলিউডে কাজের ধারা এক?
রথিজিৎ: ভীষণ ডিটেলে কাজ করেছি, জানেন। এত গভীরে ঢুকে কাজ এর আগে করিনি। দু’মিনিটের বদলের জন্যও দরকারে কলকাতা থেকে মুম্বই ডেকে পাঠিয়েছেন সুজিতদা। পরিচালক কী ভাবে ছবির পাশাপাশি মিউজিকের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে পারেন সেটা এই ছবিতে কাজ না করলে জানতে পারতাম না। তার পরেও বলব, দুই ইন্ডাস্ট্রির তুল্যমূল্য বিচার না করাই বোধহয় ভাল। এখানেও যে এখন একেবারেই এমন ডিটেলিং হচ্ছে না তা নয়। তবে সবটাই নির্ভর করে অর্থ, সময় আর কে কেমন চাইছেন তার ওপর।
অমিতাভ বচ্চন অভিনীত চরিত্রের আবহে একতারা বাজালেন। কেমন দেখলেন বিগ বি-কে?
রথিজিৎ: এ যাত্রায় বিগ বি, আয়ুষ্মান খুরানা অধরাই থেকে গেলেন। ওঁদের অভিনয়, ডাবিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। তাই....। কথা ছিল, প্রিমিয়ারে দেখা হবে। সেটাও করোনার করুণায় হল না।
আরও পড়ুন: ‘সাহসী’ হতে না পেরে কেরিয়ারের শীর্ষে থাকতেই ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান হুসেনের আর এক স্বপ্নসুন্দরী
নিতান্ত কৌতূহলী হয়েও উঁকি দেননি সেটে?
রথিজিৎ: আমি তখন দিনে ‘সারেগামাপা’-র শুট করছি। রাতে সুজিতদার ছবির। দম ফেলার ফুরসতটুকু ছিল না। তাই হয়ে ওঠেনি। নিশ্চয়ই পরের বার হবে। একবারেই সব পেলে পরের বারের জন্য থাকবে কী?(হাসি)
মুম্বইয়ে আর কিছু কাজ করছেন? বাংলায়?
রথিজিৎ: ‘হাতি’ ছবির একটি গান রিলিজ করেছে। আপাতত কাজ বন্ধ করোনার জন্য। আর নিজের অরিজিনালসের ওপর জোর দিচ্ছি। কারণ, যা দিন আসছে তাতে সিনেমা তৈরির সংখ্যা কী দাঁড়াবে বলা মুশকিল। তাই নিজেকে বাঁচাতে অরিজিনালসকেই আগামীদিনে আঁকড়ে ধরতে হবে বেশি করে।
আবহ যে ছবির ‘প্রাণ’ সেই সুরের মায়া দর্শক-শ্রোতা অনুভব করতে পারবেন ওয়েবে?
রথিজিৎ: তা কি হয়? মাল্টিপ্লেক্সের ডলবি সাউন্ডের স্বাদ কি ছোট স্ক্রিনে মেলে? এই ধরনের ছবির আবহ বুঝতে বড়পর্দা, সিনেমা হল আদর্শ। পরিস্থিতি বুঝে অনেক কিছুই তো মানিয়ে নিতে হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy