—ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন: অভিনয়ের শুরু কবে?
ক্লাস ফোরে সিরিয়াস গ্রুপ থিয়েটার অভিনয়ে হাতেখড়ি। চন্দন সেনের ‘ঝড়ের খেয়া’-তে অভিনয় করতাম। তার পর আইটি-তে চাকরি করি। পড়াতাম। তার মধ্যেই অভিনয় চলত। কিন্তু সন্ধেবেলা ছাড়া থিয়েটারে সময় দিতে পারছিলাম না। অরুণ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ হয়ে গিয়েছে তত দিনে। অনেক দল থেকেই ডাক আসছিল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ফেরা’ আর ‘ঘটক বিদায়’-এ অভিনয় করেছি। ‘ঘটক বিদায়’-এ উনি স্টার থিয়েটারে যে চরিত্র করতেন সেই চরিত্র একটা সময় থেকে আমি করতে থাকি। ওই নাটকে তিনি তখন অন্য চরিত্র করতেন। এই ধরনের কাজ করতে করতে ঠিক করলাম অ্যাকাডেমিকস ছেড়ে থিয়েটার করব। তখনও সিনেমার কথা মাথায় আসেনি।
প্রশ্ন: প্রথম ছবি তো ‘ফড়িং’?
হ্যাঁ। সিনেমায় একটানা অভিনয় করতে হবে তখনও ভাবিনি। ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী কাজ দিলেন।
আরও পড়ুন: নতুন বাড়িতে যাওয়া আর প্রেমে পড়া, কোন সূত্রে গাঁথলেন স্বস্তিকা?
প্রশ্ন: চাকরি করতে করতেই এক্কেবারে যশরাজ ফিল্মে ডাক!
হ্যাঁ। প্রথম যে দিন মুম্বই থেকে ফোন আসে সে দিন ভেবেছিলাম ওটা প্র্যাঙ্ক কল। কেউ ঠাট্টা করছে। পরে বুঝলাম ‘মেরি প্যায়ারি বিন্দু’-তে অভিনয় করতে হবে। খুব খুশি হয়েছিলাম।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
প্রশ্ন: কিন্তু মানুষ যশরাজ প্রোডাকশনে আপনার কাজের চেয়ে ‘একেন বাবু’-কেই সবচেয়ে বেশি করে চেনে। কেমন লাগে?
যশরাজ প্রোডাকশন আমায় আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল অভিনয়টা জোর দিয়ে করার। ‘একেন বাবু’র এই জনপ্রিয়তা দেখে খুব ভাল লাগে। সত্যিই আশা করিনি। এটা না করলে জানতাম না এত লোকে ওয়েবে দেখে। আমার নাম জানার পর লোকে ফেসবুকে খুঁজতে থাকে আমায়।
প্রশ্ন: এই বুদ্ধিদীপ্ত গোয়েন্দা এত মজার বলেই কি লোকে এত হন্যে হয়ে খোঁজে আপনাকে?
আমার সে রকম মনে হয়। ২০১৮ থেকে ‘একেন বাবু’ শুরু।
প্রশ্ন: সকলের এখন একটাই প্রশ্ন, আপনার বউ কবে আসবে?
(হেসে) আমার নয়। একেন বাবুর বউ খুকু যাকে সে মাঝে মাঝে ফোন করে।
প্রশ্ন: আপনি কি চান খুকু আসুক?
আমার চাওয়ার উপর কিছু নির্ভর করে না। আমি তো অভিনেতা। তবে আমিও তো খুকুকে দেখিনি। আগামী দিনে দেখতে পেলে মন্দ হত না।
প্রশ্ন: এখন শোনা যাচ্ছে ‘একেন বাবু’ জটায়ু হচ্ছেন। মনে হচ্ছে না, যেন শুধু একেনবাবু হয়ে থেকে না যান...
প্রথম দিকে খুব ভয় ছিল। একটা চরিত্র সফল হলে সেই ধরনের চরিত্রতেই কাস্টিং হতে থাকে। কিন্তু সৌভাগ্যবশত আমি তার পরে ‘লালবাজার’ সিরিজটা করলাম, ‘ভটভটি’, ‘এফআইআর’— সব কটা ছবিতেই চরিত্রগুলো আলাদা। কমেডির নামগন্ধ নেই।
প্রশ্ন: আপনি আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের সঙ্গে কাজ করেছেন না?
হ্যাঁ। ছবিটার নাম বদল হয়ে এখন হয়েছে ‘মাই মাদার অ্যান্ড মাই মেমরিজ’। এটা সম্পূর্ণ আলাদা চরিত্র। অরিন্দমদার শবরে কাজ করব। আমি ভাগ্যবান পরিচালক, প্রযোজকরা আমায় এত রকমের কাজ দিচ্ছেন।
প্রশ্ন: একেনবাবুকে জটায়ুর মতো দেখতে বলেই কি এ বার আপনি ‘ফেলুদা ফেরত’-এর জটায়ু?
দেখুন, বাহ্যিক মিল একটা আছে। চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ‘একেন বাবু’ করার পরে সবাই বলতে শুরু করল, এই তো জটায়ু পাওয়া গিয়েছে। এতে করে আমার মনে জটায়ু করার আশাও হয়েছিল। কিন্তু আমিও জানেন জটায়ুকে খুঁজছিলাম। কে হতে পারে? ভাবছিলাম, কোনও দিন যদি...
প্রশ্ন: তার পরেই সৃজিত ডাকলেন?
সৃজিতের সঙ্গে ‘কাকাবাবু প্রত্যাবর্তন’ করার কথা হয়েছিল ২০১৯-এ। কিন্তু কেনিয়া যাওয়া হয়নি। তার পরে জটায়ু করলাম।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে জিন্নার নাতির ছেলে হন, মা মৌরিনের জন্যই প্রীতির কাছ থেকে সরে যান নেস?
প্রশ্ন: সন্তোষ দত্ত মাথায় চলে আসেননি অভিনয় করার সময়?
লুক সেটেই সৃজিত খুব খুশি হয়েছিল। ও যখন ফেলুদা করছে তখন দেখলাম কী প্যাশনেটলি ও ছবিটা শ্যুট করছে। প্রচুর বাইরে শ্যুট হয়েছে। পোশাক থেকে পসচার, কোনও বিষয়ে সৃজিত এতটুকু কম্প্রোমাইজ করেনি। এ রকমও হয়েছে, সেটের কোথাও সামান্য হয়তো এ দিক-ও দিক হয়েছে, সেটা ঠিক করার জন্য আমরা দু’ঘণ্টা বসেও থেকেছি। তবে টিম ফেলুদার মধ্যে সারাক্ষণের আনন্দ ছিল। এই তো ফেলুদা করছি আমরা।
প্রশ্ন: আর সন্তোষ দত্তকে মনে পড়েনি?
জটায়ু বললেই ছোটবেলা থেকে জানি সন্তোষ দত্ত। সে যে-ই করুক না কেন সেটা থাকবেই। আমি নিজের মতো করে বুঝে চরিত্র করেছি। অনুকরণ করতে না চাইলেও অবচেতনে ছিল তো, ভাবছিলাম চলে না আসে। সৃজিতের কাছে জানতে চাইতাম, ঠিক হচ্ছে কি? ওর সহযোগিতা পেয়েছি খুব।
‘কাকাবাবু’ কি বাঙালিকে হলে ফেরাবে?
প্রশ্ন: এখন কোভিডের সময়। শীতের ছুটিতে ‘কাকাবাবু’ কি বাঙালিকে হলে ফেরাবে?
এটা বলা যাচ্ছে না। পুজোয় যে ছবি রিলিজ করেছে সব যে ফেস্টিভ মুডের তা তো নয়। এখন শীতের ছুটি, বড়দিন, পরিবারকে নিয়ে দেখার ছবি কাকাবাবু। আশা তো করা যায় নিজেদের কমফর্ট জোন নিয়েই মানুষ হলে আসবে।
প্রশ্ন: একেনবাবু, জটায়ু বা অনির্বাণ ট্রোলিংয়ের মুখোমুখি হয়েছেন?
সমালোচনা তো আসবেই। সবার সব ভাল লেগে গেলে মুশকিল। তবে মানুষ ভাবে না আমি কী বলছি? তার প্রতিক্রিয়া কী হবে? তা নিয়ে ভাবে না। বরং ভাবে কত তাড়তাড়ি কমেন্ট করতে পারি। ট্রোল করতে পারি। সহিষ্ণুতা মানুষের কমে আসছে।
প্রশ্ন: আপনার জীবনে ‘খুকু’ কবে আসবে?
এগুলো থাক। এই নিয়ে আলোচনা চাই না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy