অরিন্দম
প্র: এ বার পুজোয় বাংলা ছবি বাংলাতেই হল পাচ্ছে না। পরিস্থিতি বদলানোর জন্য কিছু ভাবছেন?
উ: আমরা তো দক্ষিণ ভারতে বাস করি না। যেখানে সর্বাগ্রে নিজেদের ভাষা প্রাধান্য পায়। সরকারি নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও এখানকার ডিস্ট্রিবিউটররা জানিয়ে দিয়েছে, ৬০-৭০ শতাংশ জায়গা ‘ওয়র’ই নিয়ে নেবে। বাকি জায়গায় চারটে বাংলা ছবি গুঁতোগুঁতি করবে।
প্র: তার মধ্যেও কিছু সংস্থার একাধিপত্য রয়েছে। বাকি জায়গাটুকুর মধ্যে কি সমান ভাগাভাগি হবে?
উ: অন্য সংস্থা বাহুবলী নয়। তবে যে সংস্থা সারা বছর ডিস্ট্রিবিউটরদের ছবি সাপ্লাই করে থাকে, তাদের একটা প্রাধান্য থাকবেই। মোদ্দা কথা, যে ছবি ভাল ব্যবসা করবে, সেটিই লম্বা দৌড়ে টিকে থাকবে।
প্র: শবর, ব্যোমকেশ, মিতিন মাসি—পরপর গোয়েন্দা চরিত্র পরিচালনা করতে গিয়ে একঘেয়ে লাগছে না?
উ: প্রতিটা গোয়েন্দা চরিত্রকে স্বতন্ত্র করে গড়ে তোলাটা চ্যালেঞ্জ। আলাদা লুক তৈরি করতে হয়। আমি প্লেন অ্যান্ড সিম্পল ‘মিতিন মাসি’ করব না। মিতিনের চরিত্রের মধ্যে অনেক পরত রয়েছে। কোয়েলের মতো প্রফেশনাল অভিনেত্রী আমি কম দেখেছি। ছবিতে আমি কোয়েল মল্লিককে চাইনি, মিতিন মাসিকে চেয়েছি। ও সেটাই করে দেখিয়েছে। একজন চলচ্চিত্রকারের দায়িত্ব, শিল্পীর কাছ থেকে সেরাটা বার করে আনা। আমাদের এখানকার বেশির ভাগ পরিচালক এ ব্যাপারে অক্ষম। আর দোষ পড়ে সেই অভিনেতা বা অভিনেত্রীর উপরে।
প্র: যেমন গত ছ’মাস ধরে আপনি সব দোষের ভাগীদার হলেন?
উ: ওহ, একটা অধ্যায় গিয়েছে! ‘ভূমিকন্যা’ আমাকে সারা জীবনের মতো একটা শিক্ষা দিয়েছে। অন্ধ ভাবে মানুষকে বিশ্বাস করার ফল ভুগেছি। যাদের উপরে আস্থা রেখে ক্রিয়েটিভ, ফিনান্স ছেড়েছিলাম, তারা আমাকে এ ভাবে ডোবাবে ভাবিনি!
প্র: তা হলে সব দায় অন্যের বলছেন?
উ: তা একবারও বলছি না। দিনের পর দিন এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছি। একটা ছোট্ট ভুলে আগের সব অবদান ভুলে গেল সকলে! কারও টাকা মেরে দেওয়ার প্রবৃত্তি আমার ছিল না। তিন কোটি টাকার উপর লস হয়েছে প্রজেক্টে। সেটা সামলানোর জন্য একটু সময় চেয়েছিলাম মাত্র। গত কয়েক মাস ধরে মানসিক ভাবে ধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তবে খারাপ ফেজ়টা কাটিয়ে উঠতে নিসপাল সিংহ, ফিরদৌসুল হাসান, নীলরতন দত্ত, বিক্রম ঘোষের মতো কিছু মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিশ্বাসের জায়গায় যেমন চিড় ধরেছে, আবার নতুন বন্ধুও পেয়েছি। এই লড়াইটা আমাকে আগের চেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী করেছে।
প্র: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সোহিনী সরকারের সঙ্গে নাকি এখন আপনার যোগাযোগ নেই। অথচ এই দু’জনের কেরিয়ারে আপনার অবদান কম নয়...
উ: দু’জনেই খুব ব্যস্ত। সে জন্যই হয়তো যোগাযোগ করার সময় পায় না। আমি ওদের চেয়ে অনেক বড়। এই প্রশ্নের জবাবে বেশি কথা বলে ওদের বিব্রত করতে চাই না।
প্র: ‘খেলা যখন’ আবার শুরু করছেন। সেখানে অনির্বাণ থাকবে?
উ: ওকে ফোন করেছিলাম। ধরেনি। টেক্সট করেছিলাম। জবাব আসেনি।
প্র: ‘ভূমিকন্যা’র সকলে টাকা পেয়ে গিয়েছেন?
উ: এটুকু বলতে পারি, এভিরিথিং ইজ় সেটল্ড।
প্র: বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে আপনি ছাড় পেয়েছেন। এমনকি, আর্টিস্ট ফোরাম আপনার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেনি।
উ: আমি আর্টিস্ট ফোরামের ফাউন্ডার মেম্বার। আমি তো নিয়মিত প্রযোজক নই। একটা প্রোডাকশন, সেটার লস— সবটা ঘাড়ের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা ফেডারেশন, ফোরাম বুঝেছে। এর মধ্যে দিদির ঘনিষ্ঠ হওয়ার কিছু নেই। আমাকে কখনওই দিদির ঘনিষ্ঠ বলা যাবে না, বড়জোর স্নেহভাজনটুকু বলা যায়।
প্র: আপনি একটি পোর্শে কিনেছেন এবং পেন্টহাউস বুক করেছেন— এটাও শোনা যাচ্ছে।
উ: যারা গসিপটা ছড়িয়েছে, তারাই উত্তরটা দিতে পারবে। চার বছরের পুরনো গাড়িতেই চড়ি। আর কোথায় থাকি, তা সকলেই জানেন।
প্র: এসভিএফ-এর সঙ্গে ভবিষ্যতে আর কাজ করবেন না?
উ: এ রকম তো কিছু নেই। আমার সম্পর্ক শ্রীকান্ত মোহতার সঙ্গে। আমি শুধু ওর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি।
প্র: বলিউডে কাজ করার বিষয়টি কত দূর এগোল?
উ: হিন্দিতে ‘ধনঞ্জয়’ ছাড়া আরও একটা ছবির কথা চলছে। তা ছাড়া অনেক দিন ধরে মহিলা চরিত্র নিয়ে ট্রিলজির পরিকল্পনা করছি। একটা কোয়েলের সঙ্গে ‘মিতিন মাসি’। মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘খেলা যখন’। আর একটি ছবি, বাংলা সিনেমাকে আমার ট্রিবিউট। বাংলা সিনেমার একশো বছর নিয়ে গত দু’বছর ধরে কাজ করছি। সেই ছবিতে সাদা-কালো, রঙিন — দুটো ইমেজারিই থাকবে।
প্র: কারও বায়োপিক?
উ: না, ফিকশন স্টোরি। ঘোস্ট রোম্যান্টিক থ্রিলার। এর বেশি এখন বলা যাবে না। বছরের শেষে শুরু করব প্রজেক্টের কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy