ছবি মুক্তির আগে আড্ডায় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য ফাইল-চিত্র।
প্রশ্ন: ‘লক্ষ্মী কাকিমা’ থেকে ‘কথামৃত’— মধ্যবয়সি প্রেম এখন ধারাবাহিক থেকে সিনেমা, সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। বিয়ের অনেক বছর কেটে গেলে সত্যিই কি সেই প্রেমটা থাকে?
অপরাজিতা: দেখুন, বিজ্ঞানকে কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। কেউ যখন প্রেমে পড়ে, তখন যে হরমোনগুলোর ক্ষরণ হয়, সেই উত্তজনা কিন্তু তার কয়েক বছর পর থাকে না। কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পর যেটা থাকে সেটা হল নির্ভেজাল বন্ধুত্ব। এর মধ্যে মানুষ অনেক ছেলেমানুষি করে। ঝগড়া হয়। কিন্তু একটা পর্যায়ের পর সম্পর্কটা থিতু হয়। মা-বাবারা আগে বলতেন, বিয়ে পাঁচ বছর টিকে যাওয়া মানেই ব্যস, সব ঠিক। ওই পাঁচ বছরেই সব চাওয়া-পাওয়া, ভাল মন্দ বুঝে নেওয়া হয়। প্রথম পাঁচ বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার পর একটা সুন্দর বোঝাপ়ড়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
প্রশ্ন: নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও কি এমনই অভিজ্ঞতা?
অপরাজিতা: আমার বরের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বোঝাপড়া সাংঘাতিক। আমার মা আর বাবার মধ্যে খুব ঝগড়া হত। অন্য দিকে জ্যাঠা-জেঠির খুব মিল ছিল। সেই সব দেখে আমি আমার স্বামীকে বলেছিলাম, আমরা তো খুব তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করলাম, তোমায় চেনার বা বোঝার তেমন সুযোগ পেলাম না। কিন্তু দু’জনের মধ্যে যদি কখনও ভুল বোঝাবুঝি হয় তা হলে কথা বলে মেটাব, ঝগড়া করব না। আর বিশ্বাস করি কপাল খারাপ থাকলে যা হওয়ার তাই হবে।
প্রশ্ন: শেষ কয়েক বছরে নিজেকে নতুন ভাবে তুলে ধরেছেন। পরিচালকরা মুখ্য চরিত্রে আপনাকে নিয়ে ভাবছেন। শুরুর বছরগুলো ফিরে দেখেন?
অপরাজিতা: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসে। আর তার সঙ্গে মানুষের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনও আসে। কোনও দিনই আমি ইঁদুরদৌড়ে বিশ্বাসী নই। শুরুতে যে ধরনের কাজ হত, তখন যেমন ভাবে শেখার, তেমন ভাবে করেছি। তবে এখন কনটেন্টের উপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। ফলে আমাদের কাজের পরিধি বেড়েছে। ‘জল নুপূর’ ধারাবাহিকে ‘পারি’ চরিত্র, তার পর ‘বেলাশুরু’ করার পর থেকে আমার একটা জোর গলায় কথা বলার জায়গা তৈরি হয়েছে— কোন চরিত্র করব, করব না, কেমন ভাবে করব।
প্রশ্ন: আজকাল তো খুব রিল করছেন, প্রচারের আলোয় থাকার পন্থা?
অপরাজিতা: না, তেমন নয়। আমার বেশ মজা লাগে। ‘লক্ষ্মীকাকিমা সুপারস্টার’-এর সেটের বাচ্চারা শিখিয়ে দিয়েছে। তবু বুঝি না অনেক কিছুই। তবে নাচের স্কুলে গেলে ছাত্রছাত্রীরা বেশ মজা পায়। সেই রিলগুলো থেকে অনেকে নাচের স্কুল সম্পর্কে জানতেও পারে। আর রিল তৈরি করলে আমার হতাশা কাটে।
প্রশ্ন: অপরাজিতা আঢ্যরও হতাশা হয়?
অপরাজিতা: আমার ডিপ্রেশন হয় না। অনেক সময় হয় যে, মন ভাল লাগছে না বা কোনও কারণে ঘেঁটে আছি। তখন মনে হয় একটু নেচে, গেয়ে নিই— এই আর কী!
প্রশ্ন: ইনস্টাগ্রামের অনুরাগী সংখ্যার ভিত্তিতেই আজকাল কাজও পাওয়া যায়...
অপরাজিতা: হ্যাঁ, বিশেষত মুম্বইয়ে হয়। কাজ পাওয়ার জন্য কিন্তু আমি রিল তৈরি করি না। আর তা ছাড়া ইনস্টাগ্রামে অনুরাগীর সংখ্যার ভিত্তিতে যদি অভিনেতাদের মান বিচার করা হয়, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
প্রশ্ন: নবাগত পরিচালকের পরিচালনায় কাজ করতে রাজি হলেন কেন?
অপরাজিতা: আমি অনেক নামী পাকা পরিচালকদের সঙ্গেও তো কাজ করেছি। যাঁরা ১৩৫টা শট নিয়ে একটা শটও লাগাতে পারে না। সে ক্ষেত্রে নতুন পরিচালকদের তো সুযোগ দেওয়া উচিত। আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অভিনয় করছে শুনে সেখানে আর ‘না’ বলার কোনও কারণই ছিল না।
প্রশ্ন: রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে আছে?
অপরাজিতা: আমি এখনও সাংসদ-বিধায়কের পার্থক্যই বুঝি না। আমি বিষয়টার কিচ্ছু জানি না। আমার একদম আগ্রহ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy