তব্বু।—ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
তাঁর সমসাময়িকেরা প্রায় সকলেই রিটায়ার করেছেন। বড়জোর কোনও ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে দেখা যায় তাঁদের। কিন্তু তব্বু বরাবরই ব্যতিক্রম। এখনও কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র পাচ্ছেন। বলিউডের পয়লা নম্বরের দৌড়ে হয়তো তব্বু কোনও দিনই ছিলেন না কিন্তু ছবি বাছাইয়ের ধরন তাঁকে বাকিদের চেয়ে স্বতন্ত্র করে তুলেছিল। এক দিকে ‘চাঁদনি বার’, ‘মাচিস’, অন্য দিকে ‘সাজন চলে সসুরাল’। ‘গোলমাল এগেন’ও করেছেন, আবার ‘হায়দর’, ‘অন্ধাধুন’ও।
ইনফোকমে বক্তৃতা করতে শহরে এসেছিলেন অভিনেত্রী। বিষয় ছিল ‘ব্রেকিং দ্য স্টিরিয়োটাইপ’। যেটা তিনি নিজে বারবার করেছেন। প্রসঙ্গটা তুলতে একগাল হেসে বললেন, ‘‘ভেবেচিন্তে আলাদা জ়ঁর বেছে কাজ করিনি। শুরু থেকেই সব ধরনের কাজ করতে চাইতাম। গুলজ়ার সাব, বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে কাজ করছি, না কি রোহিত শেট্টি... এগুলো মাথায় রাখিনি। পরিচালকেরা যে আমাকে সব ধরনের চরিত্রের জন্য ভেবেছেন, এটা আমার কাছে বড় পাওনা।’’
‘হায়দর’-এর গজ়ালা বা ‘অন্ধাধুন’-এ সিমির মতো ধূসর চরিত্র করেও ক্যাজ়ুয়াল থাকেন তব্বু। যতই ইনটেন্স চরিত্রে অভিনয় করুন না কেন, সেগুলো তাঁকে প্রভাবিত করে না। নিজের ছবি দ্বিতীয় বার দেখেনও না। সাফ বললেন, ‘‘প্রভাবিত কেন করবে, আমার জীবন তো আলাদা! তবে ‘অন্ধাধুন’ ছবিটা আবার দেখতে চাই। অনেকে বলছে, ছবিটা যত বার দেখেছে আলাদা আলাদা বিষয় রিয়্যালাইজ় করছে। আমিও সেটা এক্সপিরিয়েন্স করতে চাই।’’
যত ছবি করেছেন, তার চেয়ে বেশি ছেড়েছেন। বলছিলেন, ‘‘ছবিতে আমার চরিত্র কতটা জরুরি, সেই চরিত্রটার জার্নি, এগুলো বিচার করতাম। তা ফুটিয়ে তোলার সময়ে আদৌ উপভোগ করব কি না, এসব ভেবেই স্ক্রিপ্ট বাছতাম। সকলে বলেন, আমি ছকভাঙা ছবি করেছি। সত্যি বলতে কী, সচেতন ভাবে কিছুই করিনি।’’
কালো প্লিটেড স্কার্ট আর বটল গ্রিন টপের লম্বা ছিপছিপে চেহারার তব্বুকে দেখলে বোঝা যায় না, তিনি পঞ্চাশের দিকে এগোচ্ছেন। বয়স নিয়ে কোনও ট্যাবু আছে? ‘‘কার নেই? সকলেরই মনে হয়, ‘বয়স হয়ে যাচ্ছে।’ আমরা যে জন্মদিন পালন করি, তার মধ্যেই বয়স নিয়ে ভাবনাটা লুকিয়ে রয়েছে।’’ অজয় দেবগণের সঙ্গে একটা সময়ে চুটিয়ে কাজ করেছেন। এখনও অজয় তাঁর চেয়ে কমবয়সি অভিনেত্রীদের সঙ্গে অনস্ক্রিন রোম্যান্স করছেন। যদি বিষয়টি উল্টো হত? ‘‘কমবয়সিদের সঙ্গে রোম্যান্স করতে চাই কি না জানতে চাইছেন তো? পার্সোনালি না কি অনস্ক্রিন? (ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলেন) এটা নির্ভর করবে আমাকে কোন চরিত্র দেওয়া হচ্ছে, তার উপর।’’
সেরিব্রাল-সিরিয়াস অভিনেত্রীর ইমেজ রয়েছে তাঁর। সত্যিটা কি তাই? ‘‘কেন এই ইমেজ, আমি জানি না। হয়তো কাজের ব্যাপারে আমি সিরিয়াস, তাই এই ধারণা তৈরি হয়েছে। নয়তো আমার পরিচিতেরা জানে, আমি কেমন। নিজেকে নিয়ে সিরিয়াস হলে হয়তো জীবনে আরও লাভবান হতাম (হাসি)!’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকলেও নিজেকে খুব একটা খোলসা করেন না। সেটাও তাঁর সচেতন সিদ্ধান্ত। ‘মি টাইম’ কাটান কী ভাবে? ‘‘সারাদিনই তো নিজের সঙ্গে সময় কাটাই। যখন শুটিং করি তখনও আমার ‘মি টাইম’। নিজের জন্যই তো কাজটা করছি। তা ছাড়া আমার মা আর পোষ্যর সঙ্গে সময় কাটাতে ভাল লাগে। বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করতে করতে যখন নিজেকে এক্সপ্রেস করি, মুহূর্তগুলো চুটিয়ে উপভোগ করি।’’
সম্প্রতি মীরা নায়ারের নেটফ্লিক্স সিরিজ় ‘আ সুটেবল বয়’-এর কাজ সদ্য শেষ করলেন অভিনেত্রী। তবে এখনই সে বিষয়ে মুখ খোলা বারণ, জানালেন তব্বু। আর তাঁর জীবনের সুটেবল বয়? এ বারেও মুখ খুললেন না। হাতের মুদ্রায় আর অভিব্যক্তিতে বুঝিয়ে দিলেন, ‘সে যখন আসার আসবে’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy