সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব ছবি।
বিস্ফোরক অভিনেতা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে ধারাবাহিকের ‘হিরাআম্মা’। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে এই নতুন অনুভূতি জন্মেছে তাঁর। ভাগ করে নিলেন আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে।
ট্রেলারে আপনি তো বেশ রাগি শাশুড়ি! ব্যক্তিগত জীবনে কেমন?
(এক গাল হেসে) এখনও শাশুড়ি তো হইনি। তবে এই ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিটার সঙ্গে যখন জড়িয়ে পড়লাম তখন থেকে মনে হল অনেক নতুন কিছু শুনলাম। আমার আর মেয়েদের জীবনে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
একটা ছবি আপনাকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করল?
হ্যাঁ। মনে আছে আমার। একটা শট দেওয়ার পর পরিচালক অরিত্র, জিনিয়া, ফ্লোরে যারাই ছিল সকলকে বলেছিলাম, আমার দুই মেয়ে। যদি আমি তাদের বিয়ে দিই বা তারা নিজেরা বিয়ে করে, আমি ওদের কন্যাদান করব না। মেয়েরা কি গরু যে দান করতে হবে? আগে জানলে আমার বাবা-মা শ্বশুর-শাশুড়ি, বর সবাইকে বোঝাতাম। আজ ভেবে দেখেছি, কিছু নিয়ম, সংস্কার আমার দিদিমা থেকে মা, মা থেকে আমি, তার পর আমার মেয়েদের মধ্যে চলে আসছে। আমরা শাস্ত্র পড়িনি। বড়রা যা বলেছে শুনে এসেছি। কিন্তু এখন আমি জানি মেয়েরা অশুচি নয়। আমার মেয়েদের তো বলেছি, তোদের পিরিয়ড হলেও তোরা পুজো কর।
‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবির একটি বিশেষ দৃশ্য
আর আপনি?
অনেক দিনের সংস্কার। এখনও ওই সময়ে ধূপটা ধরতে হাত কাঁপছে। কি সব শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়া হয় না? কে বলেছে মেয়েরা পুজো করতে পারে না? ভুল! আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তরুণ মজুমদার, গৌতম ঘোষের মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, এই ছবিটা নাড়িয়ে দিয়েছে আমায়। প্রথম দিন শুট করেছি। দ্বিতীয়, চতুর্থ... বারো দিনের মাথায় আমার ভেতর থেকেই মনে হয়েছে, শুধু ছবি করেই নয়, ভেতর থেকেও প্রতিবাদ করতে হবে। সামাজিক আচার মেনেই যদি বিয়ে হয় তা হলে সিঁদুর দানের পর মেয়েও সেই সিঁদুর ছেলের কপালে পরাবে। তবেই তো একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এটা দু’ হাজার কুড়ি! আজও এ ভাবে যদি না ভাবি তো আর কবে ভাবব?
আরও পড়ুন: আমাদের ভালবাসার বিয়ে, কিন্তু আজ মধুমিতার সঙ্গে কথা হয় না: সৌরভ
সম্প্রতি এক ধর্মগুরুর মুখে শোনা গিয়েছে, পিরিয়ডের সময় মেয়েরা রান্না করলে পরের জন্মে কুকুর হবে!
আমাদের এগনোর কথা। সেখানে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছি আমরা। মানুষকে মিথ্যে সংস্কারের ভয় দেখানো হচ্ছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই এই ছবি। সহজ ভাবে বাস্তব তুলে ধরা।
এই ছবি অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের প্রথম কাজ...
একেবারেই বাচ্চা ছেলে। কিন্তু ওর মধ্যে শিবু-নন্দিতার ছায়া আছে। খুব ভাল লেগেছে কাজ করে। এই ছবি স্কুলে স্কুলেও দেখান উচিত। সচেতনতা ওখান থেকেই তৈরি হবে।
পঁচিশ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। ক্ষোভ আছে?
আমাকে ঘিরেই যদি শুধু গল্প হত! ক্ষোভ সব মানুষের থাকে, তবে ওটা নিয়ে বসে থাকলে সময় নষ্ট। আমল দিই না। তবে এই যে রাস্তায় বেরলাম, লোকে বলল ‘আপনি তো হিরাআম্মা!’’
খুব ভাল লাগে। ২০১৫-য় ‘কেয়াপাতার নৌকো’ হয়েছে। আজও নিউ মার্কেটের দিকে হঠাৎ ঢাকার মানুষের সঙ্গে দেখা হলে বলে ‘আপনিই তো ফিরোজা’! আমার আর কিছু পাওয়ার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy