টেলিভিশন, ছবি, ওটিটি, নিজের পরিচালনা... দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছেন হর্ষ ছায়া। অরিন্দম ভট্টাচার্যের ‘অন্তর্ধান’ ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। ‘‘থ্রিলার বলে নিজের চরিত্র নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না,’’ সংক্ষিপ্ত উত্তর অভিনেতার। এর আগে অরিন্দম শীলের ‘হর হর ব্যোমকেশ’ এবং ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ ছবিতে পুলিশের চরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ‘‘পুরোপুরি বাঙালি চরিত্রে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা কঠিন। তাই অবাঙালি বা কম বাংলা বলতে হয় এমন চরিত্রে বাংলার পরিচালকেরা প্রস্তাব দিচ্ছেন,’’ সহাস্য মন্তব্য তাঁর। তবে হর্ষের স্ত্রী সুনীতা সেনগুপ্তের বাড়ি কলকাতায়। এখন অবশ্য তিনি মুম্বইয়ে থাকেন।
টেলিভিশনে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন হর্ষ। সাফল্য এসেছিল ‘হসরতে’ ধারাবাহিকে কৃষ্ণকান্ত ত্রিবেদীর চরিত্রে। সেই অভিনেতা গত দশ বছরে ছোট পর্দায় তেমন উল্লেখযোগ্য কাজ করেননি। খানিক উষ্মা তাঁর কণ্ঠে, ‘‘ছোট পর্দায় এখন ভাল কাজ হয় না। সব সিরিয়ালে কিচেন পলিটিক্স! বললে বলা হবে, চ্যানেল চালাতে গেলে টাকা লাগে। মার্কেটিং হেডরা সব সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের টার্গেট শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী দর্শক নন।’’
অভিনেতা হিসেবে সংবেদনশীল কনটেন্টের কথা বলেন হর্ষ। কিন্তু তিনি যখন ‘সত্যমেব জয়তে টু’-র মতো পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করেন, তখন কি তা স্ববিরোধিতা নয়? ‘‘কমার্শিয়াল ছবির বাজার বরাবরই ছিল। আমি নির্দিষ্ট এক ধরনের ছবি করেছি বলে, কখনও এমন ছবি করতে পারব না, তা তো নয়। অভিনেতা হিসেবে সব ধরনের ছবি করতে চাই। দর্শকের যদি এতে আপত্তি থাকে, তবে তাঁরা না-ই দেখতে পারেন। বড় ব্যানারের ছবিতে পারিশ্রমিকও অনেক বেশি,’’ বললেন অভিনেতা। ভাল চরিত্র এবং পারিশ্রমিক, তাঁর কাজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এখন দু’টি বিষয় বিবেচ্য।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও কাজ করেছেন হর্ষ। ‘আনদেখি’, ‘আউট অব লাভ’-এর মতো সিরিজ় প্রশংসিত হয়েছে। আগামী দিনেও সিরিজ়ে কাজ করতে আগ্রহী অভিনেতা। ‘‘এই ফরম্যাটে আমার টেলিভিশনের পুরনো দিনের কথা মনে হয়। তখন নির্দিষ্ট সংখ্যক পর্বের কাজ করলে হয়ে যেত। সিরিজ়েও তা-ই। কয়েক মাসের কাজ। বছরের পর বছর ধরে ছোট পর্দায় যুক্তি-বুদ্ধিহীন চরিত্রে কাজ করার মতো নয়।’’
গত দেড় বছর ধরে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নেই হর্ষ। সব অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন। ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সময়ের অপচয় ছাড়া কিছু হয় না। এক দল মানুষ যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন, তাঁরা ‘বাহ, বাহ’ বলবেন। যাঁরা পছন্দ করেন না, তাঁরা খারাপ কথা লিখবেন। ফলোয়ারের সংখ্যা দেখে যাঁরা কাজের প্রস্তাব দেন, তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে চাই না। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বছর হয়ে গেল। যাঁদের কাজ করার, তাঁরা ঠিকই প্রস্তাব দেবেন,’’ নাগাড়ে বললেন অভিনেতা।
এ বছর বেশ কয়েক দফায় কলকাতায় শুট করে গিয়েছেন হর্ষ। প্রথমে অ্যামাজ়ন প্রাইমের একটি সিরিজ়ের জন্য। তার পরে কাজল আগরওয়াল অভিনীত ‘উমা’র জন্য এক মাস শুট করেছেন। অরিন্দম শীলের ‘খেলা যখন’-এর শুটে কলকাতায় এবং ওড়িশায় ছিলেন।
অতিমারি তাঁর জীবনে খুব একটা বদল ঘটায়নি। ‘‘আমি অনেকটা সময়েই বাড়িতে থাকি। বেছে বেছে কাজ করি বলে বছরের বেশ কিছুটা সময় আমার কাজ থাকেও না। তাই অতিমারির পরে আমার জীবন বদলায়নি,’’ বললেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি পডকাস্ট শো, শর্ট ফিল্মের জন্য লেখালিখি করেন। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর পরিচালিত ছবি ‘খজুর পে আটকে’। ‘‘আগামী ছ’মাসের মধ্যে পরের ছবির কাজ শুরু করতে পারি,’’ বললেন হর্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy