দিব্যজ্যোতি দত্ত
রেস্তরাঁয় ঢুকে অর্ডার করতে গিয়ে প্রথমেই তাঁর চিন্তা, সফট ড্রিংকে অ্যাডেড সুগার থাকবে। খাবারে থাকবে চিজ়। অর্ডার করার আগে সাতপাঁচ ভাবছিলেন বছর বাইশের দিব্যজ্যোতি। নিজের বয়সি আর পাঁচজন ছেলের তুলনায় পরিণত ভাবে কথা বললেও মাঝে মাঝেই বেরিয়ে আসছিল তাঁর ভিতরের শিশুসুলভ উচ্ছ্বাস। ছোট পর্দার ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’র কিয়ান এখন পরিচিত মুখ। যদিও দিব্যজ্যোতি মনে করেন, তিনি সাফল্যের প্রথম ধাপে সবে পা রেখেছেন। লক্ষ্য, আরও অনেক দূর। তার প্রস্তুতিও চলছে জোরদার।
কিয়ানের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে প্রথমেই জানা গেল, তিনি এখনও কলেজের গণ্ডি পেরোননি। নাকতলার বাসিন্দা দিব্যজ্যোতি ইতিহাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আগ্রহ অভিনয় আর ব্যবসাকে ঘিরে। গয়নার পারিবারিক ব্যবসায় ভবিষ্যতে হয়তো আসবেন, তবে আপাতত তাঁর ফোকাস অভিনয়েই। ‘‘দর্শকের ভালবাসা এমন একটা জিনিস, যেটা আরও ভাল কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। চেনা-অচেনা মানুষরা যখন ডেকে বলেন আমার কাজ তাঁদের ভাল লাগছে, তখন উদ্বুদ্ধ হই,’’ বললেন তিনি।
‘জয়ী’র আগে কোনও দিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি দিব্যজ্যোতি। সিরিয়ালে প্রথম সুযোগ পাওয়াও কাকতালীয় ভাবে। ‘‘আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের এক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন ‘জয়ী’র কাস্টিং ডিরেক্টর। সেখানে আলাপ হওয়ার পরে অডিশনে ডেকে পাঠানো হয়। তখন আমার ক্লাস টুয়েলভ,’’ শুরুর দিনগুলোর কথা বলছিলেন দিব্যজ্যোতি। প্রোমো শুটের দিন পর্যন্ত জানতেন না, হিরোর চরিত্রটা করছেন তিনি। ঋভু-জয়ীর কেমিস্ট্রির মতোই এখন জনপ্রিয় কিয়ান-নোয়ার জুটি। ‘‘শ্রুতিদি বন্ধু হয়ে গিয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য করতেও অসুবিধে হয় না,’’ বললেন কিয়ান।
এমনিতে প্রেম, দুঃখ আর রাগের দৃশ্য করতে সবচেয়ে ভাল লাগে দিব্যজ্যোতির। ‘‘নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করি,’’ বললেন তরুণ অভিনেতা। সেটে সকলের চেয়ে ছোট বলে প্রশ্রয়-ভালবাসাও যেমন পান, তেমন তাঁর প্রিয় ‘রাহুলদা’ (বন্দ্যোপাধ্যায়) আর ‘তথাদা’র (তথাগত মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে আড্ডাও চলে চুটিয়ে।
শুটিংয়ের মাঝে ফাঁক পেলেই ঘুরে আসেন জিমে। ‘‘আগে ক্রিকেট খেলতাম। এখন জিম ছাড়া ভাবতেই পারি না। সাধারণত প্যাকআপের পরে যাই। রোজ প্রণাম করে ঢুকি আর বেরোই।’’ দিব্যজ্যোতির মা-বাবা দু’জনেই ছোটবেলায় জিমন্যাস্টিকস করতেন। স্বাস্থ্যসচেতন হওয়াটাও পারিবারিক সূত্রেই পেয়েছেন। আর পাঁচজনের মতো তাঁরও ফাস্টফুড খেতে ভালই লাগে, কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। ‘‘যা খেয়ে আমার শরীরের উপকার হবে না, সেটা খেতে ইচ্ছে করে না। খেলে হয়তো ভালই লাগবে, কিন্তু পরে অপরাধবোধে ভুগি,’’ অকপট তিনি।
একাধিক ফ্যান তাঁকে সরাসরি প্রোপোজ় করেছেন ইতিমধ্যে। তবে সত্যিকারের প্রেমটা কি হয়েছে? ‘‘এখনও হয়ে ওঠেনি। বন্ধুদের মধ্যে একমাত্র আমিই সিঙ্গল,’’ হেসে ফেললেন দিব্যজ্যোতি। কিয়ানের ভক্তরা কি বিশ্বাস করবেন এ কথা? ‘‘অনেকে বলে, আমি নাকি গার্লফ্রেন্ডকে আড়ালে রেখেছি। এটুকুই বলতে পারি, শ্রুতি হাসন ছাড়া আমার আর কোনও ক্রাশ নেই এখনও পর্যন্ত,’’ সোজা জবাব তাঁর।
সাক্ষাৎকার দিতে আসা দিব্যজ্যোতির আঙুলে তখন সদ্য দেওয়া ভোটের কালি। রাজনীতির প্যাঁচপয়জার তেমন না বুঝলেও নিজেকে ‘দেশভক্ত’ বলতে ভালবাসেন। দেশভক্তিমূলক যে কোনও ছবি তাঁর প্রিয়। তবে ধর্ম আর রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলতে চান না। ‘‘সেটে দেখেছি বিজেপির কৌশিকদা (রায়) আর তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ ভরত কল বাবা-ছেলের মতো বসে গল্প করেন। বিজেপির সোহেল দত্ত আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আবার টিউশনের বেশির ভাগ বন্ধুই বামপন্থী। আমি যেমন নির্জলা উপোস থেকে শিবরাত্রি করি, আমার অনেক মুসলিম বন্ধু রোজ়া রাখে। ধর্ম বা রাজনীতি নিয়ে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাস করি না,’’ স্পষ্ট বয়ান তাঁর।
বর্তমানে ফোকাস শুধু সিরিয়াল হলেও সিনেমা, ফোটোশুটও টানে তাঁকে। ‘‘নিজেকে তৈরি করছি তাই। কর্মফলে বিশ্বাস করি। এই তো সবে শুরু,’’ ঝলমলে হেসে বললেন দিব্যজ্যোতি।
ফুড পার্টনার: ঈগল বাইটস পিৎজ়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy