শ্রীলেখা মিত্র —ফাইল চিত্র।
শ্রীলেখার জিভে ভীষণ ধার। ইউটিউবে লাইভ ভিডিয়োয় মুখ খোলার পর থেকেই এই কথা শুনতে হচ্ছে! কেন?
জনমত, লাইভে আমি নাকি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছি, বোমা ফাটিয়েছি, টালিগঞ্জের মুখোশ খুলে দিয়েছি। তার জন্য অনেকে আমার পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। বেশির ভাগ বলেছেন, অক্ষমতা ঢাকতে যাকে পারল তাকেই ‘বলি’ (পড়ুন গালি) দিল!
আপনারা কি জানেন, শ্রীলেখার লেখাও ভীষণ ধারালো? একটা সময় আমি একটি কলাম লিখতাম। সেখানে আমার মান-অপমান-অভিমানে মাখা টুকরো কথার হদিস থাকত।
আরও পড়ুন: বিনোদকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি ঢুকতেই রেখাকে চপ্পল খুলে মারতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি!
শ্রীলেখা-র ‘লেখা’য় আপাতত দাঁড়ি পড়েছে। বদলে, মুখ খুলেছি নিজস্ব চ্যানেলে। সেই থেকে রইরই কাণ্ড!
এমন কী বলেছি আমি? নেপোটিজম বা স্বজনপোষণ নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। কথাটা সদ্যভূমিষ্ঠ, এমন নয়। কথাটির মানে জানেন না বা শব্দটির সঙ্গে কেউ কোনও দিন পরিচিতি হননি, এটাও ভীষণ মিথ্যে। সবাই কমবেশি এর মুখোমুখি।
শুধু আমার ইন্ডাস্ট্রি বলে নয়, সব কাজের জায়গায় এটি আছে। শিক্ষকতা, আইটি সেক্টর, এমনকি সাংবাদিকতাতেও। বাজারে বিক্রি হয় না এমন ‘দুর্লভ তেল’ যাঁরা বসকে নিয়মিত মাখাতে পারেন বা বসের সঙ্গে উঠতে বসতে সেঁটে থেকে মাখো মাখো ‘প্রেম’ করতে পারেন তাঁরা সহজেই নিজেদের খামতি পুষিয়ে ওপরে উঠতে উঠতে এক্কেবারে শিখর ছোঁন। যাঁরা আপসহীন, তাঁদের অস্তিত্বের সঙ্কট নিত্যসমস্যা।
আবারও কোট আন কোট ‘প্রেম’ শব্দটাকেই উচ্চারণ করলাম। এর ব্যাখ্যা আগের মতোই ‘স্লাটশেম’ বা ‘দেহব্যবসা’ হবে কি না সেটা না হয় পাঠক ঠিক করুন!
আপনারা যাঁরা ধৈর্য ধরে আমার এক ঘণ্টার লাইভ ভিডিয়ো দেখেছেন, শুনেছেন, শেয়ার করেছেন, তাঁরা এ বারে একই ভাবে ধৈর্য নিয়ে দয়া করে আমার এই লেখা পড়ুন। তা হলেই বুঝবেন, কেন কলম ধরলাম।
আজকাল সবার স্মৃতিই দেখছি ‘২৪ ঘণ্টা’য় লোপ পাচ্ছে। তারই মধ্যে নানা মন্তব্য, ‘‘পারেও শ্রীলেখা! মুখে একটু রাখঢাক নেই? আরে বাবা বলবি তো বল, তোর এত নামটাম নেওয়ার কী দরকার ছিল? বেশ তো চলছে চারিদিকে। দাদা-দিদিদের সংসারে! দাদাকে খুশি করে, দিদির ঠাকুরপোদের... খুশি করে...!’’
‘আজকাল সবার স্মৃতিই দেখছি ‘২৪ ঘণ্টা’য় লোপ পাচ্ছে।’ —ফাইল চিত্র।
এই দেখুন, আবার স্লিপ অব টাং ভেবে ‘দুপুর ঠাকুরপো’ বলছি ভাববেন না যেন! আমি মোটেই তা বলিনি। এই সব ভেবে-টেবে অযথা, অকারণে গায়ে মেখে নেবেন না আবার। চারিদিকে যা চলছে, যে যা পারছে গায়ে মেখে নিচ্ছে। যিনি মুম্বইয়ে থাকছেন তিনিও, যিনি ম্যাঞ্চেস্টারে থাকছেন তিনিও। মাখার আগে দেখছেনও না, সুগন্ধ না দুর্গন্ধ মাখছেন!
যাক গে, আমি আমার কথায় ফিরি। দাদা-দিদিদের যাঁরা তৈলমর্দন করেন তাঁরা যে আমার কথায় মোটেই খুশি হননি, দিব্য বুঝেছি। অনেকে অবশ্য আড়ালে বাহবা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৪ ঘণ্টা আমাকে ‘মিথ্যে’, ‘ভুল’ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
তাঁদের প্রতি আমার আবারও সতর্কবার্তা, বলি ও চ্যাটার্জি, মুখার্জি, ব্যানার্জিরা! আর কত দিন এই নাটকটা করবেন? কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে মাঝেমধ্যে কেউটেও কিন্তু বেরিয়ে আসে। তখন পালাবার পথ খুঁজে পাবেন তো?
সময়টা বদলাচ্ছে। চাকা ঘুরছে। এত দিন স্বজনপোষণ বা নেপোটিজমের মুখপাত্র হয়ে যে শোষণটা করে গিয়েছেন দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, তার হিসেব জমা আছে। সবার মনে ও মাথায়।
আরও পড়ুন: ‘রিয়ার সঙ্গে বিয়ে! আমার কাছে অঙ্কিতাই সুশান্তের শেষ প্রেম’
আমার মতো বাকিরা যাঁরা ২০ বছর আছেন বা ২০ সেকেন্ড, কিছু ভুলি না। ভোলেন আপনারা। কারণ, সেটাই আপনাদের পক্ষে সহজ। আপনাদের হয়ে যখন নিউজ চ্যানেল ঘুঁটি সাজাচ্ছিল, আমি শ্রীলেখা মিত্র সে সব দেখে হাসছিলাম। আমি আহত হইনি। কারণ, আপনারা অতি তুচ্ছ আমার জীবনে।
আমাকে আহত করার হাতিয়ার আপনাদের কাছে তুলে দিইনি। হাতিয়ার আমার তোলা রইল আগামী প্রজন্মের জন্য। যারা শিরদাঁড়া সোজা রেখে বলবে, আমি ভয় করি না তোমাদের। আপসহীন আমি। নিজের যোগ্যতায় আমি কাজ করব। দেখি কে আটকায়। সেই দিন আর খুব বেশি দেরি নেই।
তত দিন কবির ভাষায়, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy