‘রাণী রাসমণি’ ধারাবাহিকে দিতিপ্রিয়ার শেষ দিন
রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে মায়ের কাছে শ্যুটিংয়ের ‘কল টাইম’ জানতে গিয়েছিলেন দিতিপ্রিয়া। পরমুহূর্তেই মনে পড়ল, আর শ্যুটে যাওয়া নেই। ‘রাণী রাসমণি’-র যাত্রা শেষ যে! ফাঁকা ফাঁকা লাগছে অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়ের। বয়ঃসন্ধি কেটেছে যাঁদের সঙ্গে, গোটা চার বছর রোজ যাঁদের মুখ দেখতেন সকাল থেকে রাত, তাঁরা তো পরিবারই! কষ্ট হচ্ছে। অভ্যাসটাকে কী ভাবে পিছনে ফেলে রেখে এগিয়ে যাওয়া যায়, এখনও জানেন না দিতিপ্রিয়া।
শনিবার ধারাবাহিকের সেটে কেমন কাটল? শেষ দিনের হাসি কান্না ভালবাসার কথা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন দিতিপ্রিয়া।
দুপুর ১২টায় ‘কল টাইম’ ছিল তাঁর। দিতিপ্রিয়া পৌঁছনোর পরে শিল্পীরা সবাই মিলে মেকআপ রুমে বসে আড্ডা মারলেন। তার পর রানিমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য সেটে নিয়ে যাওয়া হল। দেখা গেল, সেখানে খাওয়াদাওয়ার বিশাল আয়োজন করা হয়েছে। জি বাংলা চ্যানেলের কর্ণধার থেকে শুরু করে কলাকুশলী, সকলে ছিলেন সেখানে। মাটির থালায় কলাপাতা পেতে খাওয়া হল।
সঙ্গে একগুচ্ছ উপহারও পেয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে সেখানে। স্মারকের পাশাপাশি ব্যাগ, ঘড়ি, গ্রামোফোন ইত্যাদি স্মৃতি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
২টো নাগাদ শেষ বারের মতো রানিমার পোশাক পরলেন দিতিপ্রিয়া। সেটের ভিতরে রেড কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল অভিনেত্রীর জন্য। সেখান দিয়ে তিনি হেঁটে গেলেন। হাততালি দিয়ে উঠলেন বাকিরা। সেখানে যে যার মতো বক্তব্য রাখলেন। সবাই মিলে লাইভ ভিডিয়ো করে দর্শকদের সঙ্গে কথা বললেন।
দিতিপ্রিয়ার কথায়, ‘‘আমি বুঝতে পারছিলাম, সবার গলা ভারী হয়ে আসছে। কিন্তু এর পর শট দিতে হবে যে! তাই সবাইকে আনন্দে রাখার চেষ্টা করছিলাম। আজেবাজে ঠাট্টা করছিলাম। কিন্তু শেষ শটের পর আর পারিনি নিজেকে সামলাতে। সবাই যখন জড়িয়ে ধরে, তখন কেঁদে ফেলি আমিও।’’
শেষ দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে কষ্ট হয়নি অভিনেত্রীর?
মৃত্যুসজ্জার শট নেওয়া হবে। দিতিপ্রিয়া জানেন, এখনই সবাই ভেঙে পড়তে পারেন। তাই ক্যামেরা চালু হওয়ার আগে সবাইকে হাসানোর জন্য তিনি বলেন, ‘‘আমার মুখের ডান দিকে ক্যামেরা থাকলে আমাকে দেখতে ভাল লাগবে। মরার সময়ে দেখতে ভাল লাগা দরকার।’’ সেটা শুনে সবাই হেসে ওঠেন।
কিন্তু তিনি চোখ বন্ধ করার পরে বুঝতে পারেন, কয়েকটা সেকেন্ড আশেপাশে কোনও শব্দ নেই। ক্যামেরাও চালু হয়নি। সকলে নীরব ছিলেন বেশ কিছু ক্ষণ। দিতিপ্রিয়া জানালেন, সেই দৃশ্যে চোখে জল আনার জন্য কারও গ্লিসারিনের প্রয়োজন পড়েনি। চোখ খুলে তিনি দেখেন, চার দিকে সবাই কাঁদছেন। দিতিপ্রিয়াও নিজেকে সামলাতে পারেননি।
তার পরে রাত হল, রানির পোশাক ছেড়ে ফেললেন দিতিপ্রিয়া। আর রানিমার পোশাক পরা হবে না তাঁর। কিন্তু অন্য কোথাও, অন্য কোনও রূপে খুব শিগগির আসতে চলেছেন দিতিপ্রিয়া রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy