Advertisement
E-Paper

আবিরে সিঁদুর মিশিয়ে প্রেমিকার সিঁথিতে! কখনও সিনেমার মতো দোল খেলেছে টলিপাড়া?

আবিরে সিঁদুরের মিশেল। পর্দার মতো বাস্তবেও এ ভাবে দোল উদ্‌যাপনে শামিল? জানালেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ এবং বিক্রম চট্টোপাধ্যায়।

কেমন ছিল রাজ চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের ‘রং’বাজি ?

কেমন ছিল রাজ চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের ‘রং’বাজি ? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫ ১১:২৬
Share
Save

‘খেলব হোলি রং দেব না তাই কখনও হয়?’ দোল এলে অলিতেগলিতে এখনও গমগম করে ‘একান্ত আপন’ ছবির এই গান। তারও আগে ‘বসন্তবিলাপ’ ছবির ‘ও শ্যাম যখন-তখন’ গানের দাপট। দোল আর হোলি মানেই দু’দিন অমিতাভ বচ্চনের রাজপাট। ‘রং বরসে’ কিংবা ‘হোলি খেলে রঘুবীরা’ না শোনাটাই যেন পাপ! আগে সমানতালে আসর মাতত রাজেশ খন্নার ‘কটি পতঙ্গ’ ছবির ‘আজ না ছোড়েঙ্গে’ গান দিয়ে।

পর্দায় এ ভাবেই দোল খেলার দৃশ্যে থালাভর্তি লাল আবির মুঠিতে ভরে নায়ক কত বার যে রাঙিয়েছেন তাঁর নায়িকাকে! সাদা বসনে সেজে ওঠা নায়িকার গাল, কপাল, সিঁথি রাঙা সেই রঙে! এই ধরনের দৃশ্যেই দেখানো হয়েছে আবিরে সিঁদুরের মিশেল। নায়ক একবার নায়িকার সিঁথিতে এই রং ছুঁয়ে দিলেই নায়িকা যেন শুধুই তাঁর। উদাহরণ রাজ চক্রবর্তীর ছবি ‘পরিণীতা’। যেখানে নায়ক বাবাইদার হাত থেকে সিঁদুর পরার শখ মেটাতে মেহুল আবিরে সিঁদুর মিশিয়েছিল।

কাট টু বাস্তবের দোল। কংক্রিটের জঙ্গলে ফাগুনকে অনুভব করাই কঠিন। তবু দোল এলে ‘বাতাসে বহিছে প্রেম নয়নে লাগিল নেশা, কারা যে ডাকিল পিছে, বসন্ত এসে গেছে।’ এ বার প্রশ্ন, সিনেমার মতো করে কেউ কি দোল খেলেন? বিশেষ করে যাঁরা বুক ঠুকে তাঁর প্রিয়াকে ভালবাসার কথা বলতে পারেন না, অথচ তাঁকে চিরকালের জন্য আপন করে পাওয়ার আশায় ব্যাকুল। তাঁরা কি রুপোলি পর্দার এই কৌশল কখনও প্রয়োগ করেছেন? সিনেজগতের সঙ্গে যুক্ত খ্যাতনামীদের কথাই ধরা যাক। যাঁরা এই ধরনের দৃশ্য পর্দায় জীবন্ত করে তোলেন তাঁরাও কি বাস্তবে কখনও এ ভাবে রং খেলেছেন?

এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ এবং বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

বিয়ের পরে রাজকে চুটিয়ে রং খেলতে দেখা যায় পরিবারের সঙ্গে, হালিশহরের বাগানবাড়িতে। বিয়ের আগেও কি তিনি এ ভাবেই রং খেলতেন? তাঁর রং খেলায় মিশে থাকত রোম্যান্টিসিজ়ম? তাঁর ‘পরিণীতা’ ছবির মতো? প্রযোজক-পরিচালকের কথায়, “আমি এমনিতে রঙে ভয় পাই। ফলে, বিয়ের আগে সে ভাবে কোনও দিন দোল খেলিনি। হ্যাঁ, বড়দের পায়ে আবির দিয়েছি। ওই পর্যন্তই। তাই কখনওই তুমুল দোল খেলা হয়নি।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আমার ছবির ওই বিশেষ দৃশ্যর স্রষ্টা কিন্তু আমি নই। পুরো কৃতিত্ব কাহিনি এবং চিত্রনাট্যকারের। বিষয়টা আমাকে খুব ছুঁয়ে গিয়েছিল। ফলে, ছবিতে রেখেছিলাম। পরে দেখলাম, দৃশ্যটা দর্শকেরও পছন্দ হল।” যদিও বাস্তবে এই কৌশল রাজকে প্রয়োগ করতে হয়নি। তাঁর দাবি, “যাকে পেতে চেয়েছি, তাকে সত্যিকারের সিঁদুর পরিয়ে, সাত পাক ঘুরে ঘরে এনেছি। আবিরে সিঁদুর মিশিয়ে পরাতে হয়নি।”

রাজের অভিনেতা-বন্ধু রুদ্রনীল ঘোষ এক সময় নাকি খুব রং খেলতেন, এমনই শোনা যায় টলিপাড়ায়। অভিনেতার কথায়, “হ্যাঁ, ঠিক কথা। ছা-পোষা ঘরের ছেলে। জীবনে বসন্ত একবারই আসত, দোলের সময়। ওই সময় বন্ধুরা একজোট। সবাই তার পছন্দের নারীকে রং দেবে। আমরা দল বেঁধে পাড়ার সেই মেয়েদের বাড়িতে। ওই একটি দিন রং হাতে ঢুকে পড়া যেত তাদের বাড়িতে।” ছুতো, বড়দের পায়ে আবির দেওয়া। লক্ষ্য, পছন্দের মেয়েটিকে একটু ছোঁয়া, একান্তে নিজের করে পাওয়া। রুদ্রনীলের আফসোস, “অনেক সময়েই সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। কখনও মেয়েটির বাবা-কাকাদের কড়া নজরদারিতে, কখনও রং মেখে ভূত হওয়ায় মেয়েটি চিনতেই পারেনি তার প্রেমিককে! আবিরে সিঁদুর মিশিয়ে পরানোর চেষ্টাও তাই বিফলে।”

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ও বন্ধুদের সঙ্গে কম রং খেলেননি। তার উপরে ছোট পর্দার মতো বড় পর্দাতেও তাঁর প্রেমিক সত্তা যথেষ্ট প্রবল। তিনিও কি কখনও... প্রসঙ্গ তুলতেই অভিনেতা বললেন, “যাদবপুরের সুলেখা অঞ্চলে বড় হয়েছি। ছোট থেকে দেখেছি, হইহই করে সেখানে সকলে রং খেলেন। ছোট থেকে সেই হুল্লোড়ে আমিও শামিল।” ছোট থেকে তাঁর লক্ষ্য ছিল রং মাখিয়ে উল্টো দিকে থাকা মানুষটিকে ভূত বানানো! তাঁর কথায়, “বড় হওয়ার পরেও সেই লক্ষ্য বদলায়নি। প্রেমিকাকেও সেটাই করেছি। ফলে, আবিরে সিঁদুর মিশিয়ে সিঁথি রাঙানোর ভাবনা মাথাতেও আসেনি! তবে পর্দায় অভিনয়ের খাতিরে এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়েছে।”

এই প্রসঙ্গে বিক্রমের যুক্তি, “কিছু জিনিস পর্দাতেই মানায়। বাস্তবে সেই মুহূর্ত তৈরি করা যায় না। হওয়া সম্ভবও নয়। অনেক ছবিতে রক্ত দিয়ে দোল খেলাও দেখানো হয়েছে। বাস্তবে কি সে রকম ভাবে কেউ রঙের উৎসব উদ্‌যাপন করবেন?” অভিনেতার জীবনে তাই কখনও এ ধরনের মুহূর্ত আসেনি। আগামী দিনেও আসবে না।

Raj Chakrabarty Rudranil Ghosh Bikram Chatterjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}