১১ এপ্রিলের আগে প্রশ্ন উঠেছিল। ওই দিন কি প্রেক্ষাগৃহে ‘পুরাতন’ বনাম ‘কিলবিল সোসাইটি’ হতে চলেছে?
ইদানীং বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় এই ‘বনাম’ শব্দের যেন একটু বেশিই প্রকাশ! একাধিক পরিচালক একদিনে ছবিমুক্তি ঘটালেই শব্দটা সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যম হয়ে টলিউডের লোকজনদের মুখেও জায়গা করে নেয়। যাঁদের ছবি মুক্তি পায় সেই সমস্ত পরিচালকদের মনেও কি ‘বনাম’ ছায়া ফেলে? বিষয়টি তর্কসাপেক্ষ। তবে ১১ এপ্রিল যাঁদের ছবি মুক্তি পেল সেই দুই পরিচালক আনন্দবাজার ডট কমের ক্যামেরার সামনে দাবি করলেন, “আমাদের এই ধরনের কোনও মানসিকতা নেই। বরং এই মানসিকতা দেখে আমাদের খারাপ লাগে।”
সুমন ঘোষ, সৃজিত মুখোপাধ্যায়। দুই ভিন্ন ঘরানার পরিচালক। একজন কলকাতার অন্য জন প্রবাসী। এই দুই অমিলের পাশে মিলও প্রচুর। তাঁরা প্রেসিডেন্সি কলেজ (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যলয়)-র ছাত্র। উভয়েই অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এবং ঘটনাচক্রে ছবি বানান। বলতে বলতেই সুমনের রসিকতা, “আর আমরা দু’জনেই বোধহয় খুব খারাপ ছবি বানাই না।” সুমনের এই কথায় হেসে সায় সৃজিতের। তিনিই মনে করিয়ে দিয়েছেন এক দিনে ছবিমুক্তির কথা।
সেই কথার রেশ ধরে ‘পুরাতন’ ছবির পরিচালকের দাবি, “বিশেষ কারণে কলকাতায় আসি। কাজ মিটলেই চলে যাই। তার পরেও গত ডিসেম্বরে টলিউডে রেষারেষির বাড়বৃদ্ধি দেখে মনখারাপ হয়েছে। এটা কেন হবে?” তাই তিনি সৃজিতকে নিয়ে ছেড়ে যাওয়া কলেজের অলিতে গলিতে বিহার করলেন। মনে করলেন, মনে পড়ালেন অনেক ‘পুরাতন’ স্মৃতি। এখানেই সৃজিতের স্বীকারোক্তি, “সুমনদা আক্ষরিক অর্থেই দাদা। খারাপ ছবি বানালে যে নির্দ্বিধায় বকে। ভাল ছবি বানালে প্রশংসা করে। ভাল ছবি না চললে দুঃখ পায়। আমাদের মধ্যে কোনও রেষারেষি নেই।”
আরও পড়ুন:
একই ভাবে পাওনার ঝুলি ফাঁকা নেই সুমনেরও। জানিয়েছেন, যেহেতু তিনি শহর থেকে দূরে, তাই তাঁকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল রাখার দায়িত্ব সৃজিতের। “এমকি অবসাদে ভুগলেও”, সুমন জুড়েছেন। বলেছেন, “বছর দু’য়েক আগের গল্প। সৃজিতের জন্মদিনে ফোনে বার্তা পাঠিয়েছিলাম। প্রত্যুত্তরে কোনও বার্তা নয়! ভোর তিনটেয় ওর ফোন। এ কথা সে কথার পর সরাসরি জানতে চাইল, আমি কি অবসাদে ভুগছি?” অগ্রজ পরিচালকের জবাব ‘হ্যাঁ’ হতেই অনুজ পরিচালক তাঁকে নিদান দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “তুমি তো অনেক কাজ করেছ। সে সব নিয়ে সপ্তাহান্তে টুক করে মন্দারমণি ঘুরে আসার মতো বুসান ঘুরে এস। সকলে জানুক তুমি কী কী করেছ।”
সুমন-সৃজিত এই গল্প ভাগ করে নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন, “এই হৃদ্যতার পরেও আপনারা বলবেন, কেবল এক পেশার কারণে আমাদের মধ্যেও রেষারেষি আছে?”