পরমব্রত, অঞ্জন, সায়ন্তন
সে দিন আকাশের মুখ ভার। উত্তর কলকাতার এক রাজবাড়ির ভিতরে ত্রিপল টাঙিয়ে ঢাকা উঠোন। দুপুরেই নেমেছে রাতের অন্ধকার। উঠোনের এক দিকে সাজানো ছোটখাটো হোটেল, অন্য প্রান্তে পুলিশ স্টেশন। বারান্দায় চলছে শুটিং। মনিটরের সামনে পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। এ দিকে নবাগতা আয়োশী তালুকদার ও সুপ্রভাতকে শট বোঝাচ্ছেন অঞ্জন দত্ত।
গত ক’বছরে দুর্গাপুজোর সঙ্গে ব্যোমকেশ সমার্থক হয়ে গিয়েছে। তবে এ বার প্রযোজনা সংস্থা থেকে পরিচালক, ব্যোমকেশ থেকে অজিত... সকলেই নতুন। পুরনো মুখ বলতে শুধু অঞ্জন। পরিচালক নন, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে সায়ন্তনকে গাইড করছেন তিনি।
‘মগ্নমৈনাক’ অবলম্বনে অঞ্জনের লেখা চিত্রনাট্যেই আস্থা রাখছেন ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’-এর পরিচালক ও শিল্পীরা। ব্যোমকেশের চরিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্রস্তুতি বলতে প্রথমে গল্পটা পড়া। দ্বিতীয়ত, অঞ্জনদার লেখা চিত্রনাট্য পড়ে চরিত্রটার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা। আর শেষ কয়েক বছরে দর্শক যে ভাবে ব্যোমকেশকে দেখেছেন, সেই ভাবটার কাছাকাছি থেকেও নতুনত্ব বার করে আনা।’’
ব্যোমকেশের লুকে পরমব্রত
অন্য দিকে রুদ্রনীল ঘোষের দাবি, পর্দায় অজিতকে বাঁচিয়ে তোলাই তাঁর বড় দায়িত্ব। ‘‘অঞ্জনদার পরে অনেকেই ওয়েব-বড় পর্দায় ব্যোমকেশ করেছেন। তবে চিত্রনাট্যের স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী, অজিত ক্রমশ গায়ে লেগে থাকা চরিত্রে পরিণত হয়েছে, যে সংলাপ বলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। ব্যোমকেশ সত্যান্বেষী, অজিত ব্যোমকেশমুখী। তাই আগে যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁদের চেয়ে খারাপ যেন না করি, সেটাই চেষ্টা।’’
ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য সায়ন্তনের করা ব্যোমকেশ সিরিজ় জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বড় পর্দায় করা কতটা চ্যালেঞ্জিং? সায়ন্তনের মতে, ‘‘চ্যালেঞ্জিং, আবার নয়ও। কার ব্যোমকেশ বেশি ভাল বা কতটা খারাপ, সেটা নিয়ে আলোচনা হবেই। সব রকমের সমালোচনার জন্যই প্রস্তুত আমি। আর সত্যি বলতে, ব্যোমকেশ বড় পর্দায় করব বলে স্বপ্ন দেখেছি। তাই কোনও রকম ভয়, দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম না।’’
অজিতের চরিত্রে রুদ্রনীল। সঙ্গে রয়েছেন নবাগতা আয়োশী তালুকদার।
অঞ্জনের ব্যোমকেশ বরাবর শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প অনুসারী। সায়ন্তনও গল্পের বিশুদ্ধতা বজায় রাখায় বিশ্বাসী। প্রসঙ্গত, সায়ন্তনের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই তাঁর ব্যোমকেশকে খুঁজে পান বলে এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অঞ্জন। ‘‘এই ছবির সাফল্য বা ব্যর্থতার দায় আমার নয়। আমার প্রযোজক-বন্ধু আমার লেখা স্ক্রিপ্টগুলি চেয়েছিলেন। না হলে ওগুলো নষ্ট হত,’’ মত তাঁর।
ছবিতে হিনা মল্লিকের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন আয়োশী। তার খুন ঘিরেই জাল ছড়ায় রহস্য। আয়োশীকে চরিত্রটি শিখিয়ে-পড়িয়ে নেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন অঞ্জন। তিনি রবি বর্মার চরিত্রটি করছেন। খলনায়কের চরিত্রে সুপ্রভাত, যাঁকে ‘আমি আসব ফিরে’, ‘ফাইনালি ভালবাসা’য় দেখা গিয়েছে।
অবশ্য ক্যামেরার পিছনের সব গোয়েন্দাগিরি করছেন রুদ্রনীল। পরমব্রতের কথায়, ‘‘আমি বই পড়ি। নিজের মতো থাকি। একে-ওকে ডেকে খোঁজ নেওয়া, কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে করার জন্য রুদ্র তো আছেই।’’ বৃষ্টির দিনে চপ দিয়ে মুড়িমাখা চিবোতে চিবোতে রুদ্রনীল বলছেন, ‘‘ইউনিটের সকলের মধ্যে বন্ডিং থাকতেই হবে। সেনাদের মতো কঠিন রুটিন মানা এখানে চলে না।’’
ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy