প্রথম দিন থেকে ‘হাউজফুল বোর্ড’ ঝুলছে বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহে। সকালের শো ভরিয়ে দিচ্ছেন এই প্রজন্মের কলেজ পড়ুয়ারা। চওড়া হাসি দেবের মুখে। যা ছুঁয়ে দিচ্ছেন তা-ই যেন ইদানীং সোনা! রহস্য জানতে নায়ক এবং তাঁর নায়িকা রুক্মিণী মৈত্রের মুখোমুখি আনন্দবাজার অনলাইন।
‘কিশমিশ’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেব-রুক্মিণী!
‘টনিক’কেও ছাপিয়ে গেল ‘কিশমিশ’। বাণিজ্যে দেবী লক্ষ্মীর পূর্ণ কৃপাদৃষ্টি। শুধুই শহর নয়, শহরতলিতেও প্রথম দিন থেকে ‘হাউজফুল বোর্ড’ ঝুলছে বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহে। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন প্রযোজক দেব অধিকারী। সকালের শো ভরিয়ে দিচ্ছেন এই প্রজন্মের কলেজ পড়ুয়ারা। আবারও চওড়া হাসি দেবের মুখে। যা ছুঁয়ে দিচ্ছেন তা-ই যেন ইদানীং সোনা! রহস্য কী? জানতে নায়ক এবং তাঁর নায়িকা রুক্মিণী মৈত্রের মুখোমুখি হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। হাসতে হাসতেই প্রযোজক দেবের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘নতুন পরিচালক। অনেক দিন পরে ভালবাসার গল্প। এই ধরনের ছবি এখন প্রায় দেখাই যায় না। সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল, বাজি ধরলে কেমন হয়? বলতে পারেন জুয়া খেলেছি, জিতেওছি।’’
কলকাতার এক প্রথম সারির রেস্তরাঁয় শুক্রবার প্রায় উদযাপনের মেজাজে ছবির নায়ক-নায়িকা। একই সরবতের গ্লাস থেকে চুমুক নায়ক-নায়িকার। দেব বুঝি এখনও তাঁর ‘টিনটিন’ অবতার ছাড়তে পারেননি! কলেজ পড়ুয়াদের মতোই প্রিন্টেড শার্ট, ছেঁড়া জিন্স। চোখেমুখে যুদ্ধজয়ের উন্মাদনা। অভিনেতা-প্রযোজক জানালেন, ‘টনিক’-এর বাণিজ্য নিয়ে সবাই মাতামাতি করেছেন। কেউ জানেনই না, ‘কিশমিশ’ এক দিনে ‘টনিক’-এর চার দিনের ব্যবসা করে নিয়েছে। সব চেয়ে বড় কথা, এই প্রজন্ম আবার প্রেক্ষাগৃহমুখী। বাংলা ছবির দুনিয়ায় এর থেকে বড় খবর আর কী হতে পারে?
দেবের কথার সুর রুক্মিণীর কথাতেও। তাঁর মতে, অভিনীত চরিত্র ‘রোহিণী’র মধ্যে দিয়ে তিনি দুই প্রজন্মের ভালবাসা অনুভব করেছেন। যার ছোঁয়ায় তিনি হেসেছেন, ব্যথাও পেয়েছেন। এই ভালবাসা সবার মনেই ছাপ ফেলেছে। ছবি থেকে তাই দর্শক দূরে থাকতে পারেননি। কিন্তু মুক্তির আগে এই দর্শকেরাই বলেছিলেন, আবার দেব-রুক্মিণী? ষষ্ঠ ছবিতে জুটি দর্শকদের আর নতুন কী উপহার দেবেন? দেব নয়, এ বার টানটান জবাব নায়িকার। বক্তব্য, ‘‘দর্শক, সমালোচক অনেক কিছু বলবেন। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামেও হয়তো অনেক কিছু লেখা হবে। তাতে আমার জীবন, সিদ্ধান্ত বদলায় না। এই ছবি যতটা দেবের ততটাই আমার। ২০১৫-য় পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় আমায় প্রথম এই ছবির জন্য ভেবেছিলেন। সেই সময় আমি অভিনয় দুনিয়ায় আসিনি। নানা কারণে ছবিটিও হয়নি। ২০১৯-এ ছবিটি আবার আমার কাছে এল। এ বার দেবের মাধ্যমে। তখনই বুঝেছি, এই ছবি আমার ভাগ্যেই আছে। বিপরীতে দেব থাকুক বা অন্য কেউ। তাই এ সব নিয়ে আর ভাবিনি।’’
এই একটি ছবির পিছনে দেব আরও অনেক কিছু করেছেন। মেট্রোয় নায়িকাকে নিয়ে প্রচার সেরেছেন। নায়িকা ছোট পর্দায় খবরও পড়েছেন! হাঁটুর বয়সী দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়ের পাশে নিজেকে মানানসই করেছেন। ঝুঁকি নিয়ে নিজেকে পরীক্ষা করার নেশায় ওজন ঝরিয়ে আবার বাড়িয়েছেন। সঙ্গে ছবিতে রেখেছেন প্রেমের গান। ছবি হিট করানোর এত ফর্মুলা কবে শিখলেন দেব? কী করেই বা শিখলেন? ফের ঝলমলে হাসি। দেবের দাবি, এক প্রযোজনা সংস্থা তাঁকে প্রশ্ন করেছিল, তিনি প্রচারের কী বোঝেন? দেবের মনে হয়েছিল, ভাল করে বোঝালে কেন তিনি বুঝতে পারবেন না! তিনি ছবির বিষয়ে নতুনত্ব চেয়েছিলেন। সেই প্রযোজনা সংস্থা তাতেও বাধা দিয়েছিল। সেই জেদ থেকে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলা। নিত্যনতুন ছবি দর্শকদের উপহার দেওয়ার চেষ্টা। হাতেকলমে কাজ করতে করতেই শিখেছেন সব কিছু।
দর্শকদের স্বাদ বদলাতে গিয়ে বিনোদন দুনিয়ার আরও একটি ছবি বদলে দিয়েছেন প্রযোজক-অভিনেতা। আগে এক দিনে একাধিক ছবি মুক্তি পেলে রেষারেষি হত দুই ছবির নায়ক প্রযোজকদের মধ্যে। ২৯ এপ্রিলের আগে দেব আর জিৎ বিবাদ ভুলে প্রচার সেরেছেন তাঁদের ছবির। দেব অনুরোধ জানিয়েছেন, দুটো ছবিই যেন দর্শক দেখেন। ঠিক যেমন সাংসদ দেব অধিকারী নির্বাচনের আগে বলেন, নিজের পছন্দের দলকে ভোট দেবেন। নিজের অধিকার প্রয়োগ করবেন। প্রচারে সাংসদের ভাবনাই কি জিতিয়ে দিল অভিনেতাকে? উত্তরে আরও একবার যেন সামনে এলেন সাংসদ দেব, ‘‘ইদানিং বিনা কারণে কেউ ভাল কথা বললেও লোকে কারণ খোঁজে! অবাক হয়ে ভাবে, এমনি এমনি বলল? সমস্ত বাংলা ছবি দেখলে আখেরে ইন্ডাস্ট্রির লাভ। আমি কোনও দিনই অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হতে চাইনি। আগামী দিনেও চাইব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy