মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বদলে যাবে শ্যুটিংয়ের পরিস্থিতি।
ওমিক্রন-উদ্বেগের মাঝেই কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। ফের ধূ ধূ করবে টেলি এবং টলিপাড়া? অতিমারির প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতোই কি রাজ্য সরকার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনের নির্দেশ দেবে? চিন্তায় প্রযোজক থেকে শুরু করে কলাকুশলীরা। বাইরে বেরিয়ে শ্যুটিং অথবা বাড়ি থেকে শ্যুটিং, কী ভাবে কাজ এগোবে বিনোদন জগৎ? টলিউড জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে অজস্র প্রশ্ন।
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসর্স (ডব্লিউএটিপি)-র সঙ্গে। সংগঠনের শীর্ষকর্তা শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছি। সব কিছুই তার উপর নির্ভর করছে। যদি সব বন্ধ করতে বলা হয়, করে দিতেই হবে। এখন আপাতত শ্যুটিং চলছে পুরোদমে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই।’’
চলতি বছরে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে লকডাউন চলাকালীন ধারাবাহিকের শ্যুটিং নিয়ে আর্টিস্ট ফোরাম, প্রযোজক সংগঠন এবং চ্যানেল দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল ফেডারেশনের সঙ্গে। শোনা গিয়েছিল, ফেডারেশনের তরফে শ্যুটিংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরেও কলাকুশলীরা বাইরে বেরিয়ে শ্যুটিং করছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রযোজনা সংস্থা ম্যাজিক মোমেন্টেস-এর কর্ণধার শৈবালের বক্তব্য, ‘‘ও সব গুজব রটেছিল। নিষেধাজ্ঞা জারি হলে কেউই শ্যুটিং করবে না। আগের বারও হয়নি, এ বারও হবে না। তবে হ্যাঁ, বাইরে শ্যুটিং করা বন্ধ হলে কলাকুশলীরা নিজেরা নিজেদের বাড়িতে বসে শ্যুটিং করতে পারেন।’’
কিন্তু সব কিছু নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী নির্দেশিকা জারি করেন, তার উপরে। শৈবাল জানালেন, নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরে আর্টিস্ট ফোরাম, প্রযোজক সংগঠন, ফেডারেশন, চ্যানেল, প্রত্যেক পক্ষ নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে। তার পরে একজোটে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানালেন তিনি।
শৈবালের কথায় জানা গেল, দেশের বাইরে গিয়ে ছবির শ্যুটিং বন্ধ হয়ে গিয়েছে করোনার জন্য। দেশের মধ্যে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছবির শ্যুটিং চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ধারাবাহিকের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে ছবির শ্যুটিংয়ের পরিস্থিতিও।
অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেনমেন্টের এক কর্ণধার এবং প্রযোজক সংগঠনের সভাপতি সানি ঘোষও শৈবালের সুরে সুর মিলিয়েছেন। আপাতত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ আসার পরে আমরা প্রত্যেকটি সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করব। সেখানেই বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বার আমরা মাথায় রাখব যাতে আগের বারের মতো ভুল বোঝাবুঝি না হয়।’’
ধারাবাহিকের শ্যুটিংয়ে ব্যাঙ্কিং অর্থাৎ বাড়তি পর্বের শ্যুট এগিয়ে রাখা হচ্ছে? সানি জানালেন, বছরশেষ উপলক্ষে বহু কলাকুশলী এখন ছুটিতে। তাই বাড়তি পর্বের ব্যাঙ্কিং করা হচ্ছে না এখনও। আগে থেকে জানা থাকলে তা-ও কিছু করা যেত। কিন্তু এখন কেবল সময়ের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
শ্যুটিং নিয়ে একই মত ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসেরও। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত স্বাভাবিক নিয়মে শ্যুটিং চলছে। পরিস্থিতি সত্যিই আশঙ্কাজনক। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সমস্ত সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে।’’
ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিয়া সেনগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘এক দিকে কাজের অভাব। অন্য দিকে কোভিড পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। বাঁচার তাগিদ কাজ করছে মানুষের মধ্যে। জানি না, বাংলা বিনোদন জগতের ভবিষ্যতের কী হবে।’’ সদ্য মানুষ ফের হলমুখী হচ্ছিলেন, প্রযোজকেরা লাভের মুখ দেখছিলেন। তার মধ্যেই ফের কোভিডের প্রকোপ নিয়ে আতঙ্কিত পিয়াও। তাঁর মতে, ফের প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে গেলে বাংলা ছবি শেষ হয়ে যাবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy