জোট বাঁধছেন দেবদূত ঘোষ এবং রূপাঞ্জনা মিত্র।
আপাতত বাম-বিজেপি ভাই-ভাই। খবর, চিরাচরিত একটি ‘তর্ক’ নাকি এক করেছে দুই দলকে। এই তর্ক ২০২২-এও গড়াচ্ছে বলেও খবর। তারই সমাধান খুঁজতে জোট বাঁধছেন দেবদূত ঘোষ, রূপাঞ্জনা মিত্র। কী সেই বিষয়? আনন্দবাজার অনলাইনকে দুই অভিনেতাই জানিয়েছেন, স্টার জলসায় নতুন ধারাবাহিক আসছে নতুন বছরে। বিষয়, রূপ আগে না গুণ? চিত্রনাট্য লেখা হচ্ছে এর উপরেই। সেখানেই তাঁরা স্বামী-স্ত্রী! দু’জনেরই দাবি, রাজনীতি পেশায় ছায়া ফেলছে না তাঁদের। স্টুডিয়োয় তাঁরা শুধুই অভিনেতা। মঙ্গলবার থেকে শ্যুট শুরু হয়েছে। প্রযোজনায় এসভিএফ। স্টুডিয়োর পাশাপাশি শ্যুট হবে কলকাতার বেশ কয়েকটি পরিচিত অঞ্চলে।
পেশা এক হলেও রাজনৈতিক ভাবনায় পার্থক্য রয়েছে। চরিত্রেও কি তাঁরা বিপরীতধর্মী? রূপাঞ্জনার কথায়, ‘‘আমার চরিত্র একটু ধূসর। অনেক লড়াই করে একটি ব্র্যান্ড তৈরি করেছি। ফলে, সব কিছু সহজে মেনে নিই না। সোজা চোখেও দেখি না। তবে পুরোপুরি খলনায়িকা নই। ভাল-মন্দয় মেশানো রক্তমাংসের মানুষ।’’ দেবদূতের দাবি, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ইদানীং চরিত্র বাছার ক্ষেত্রেও বেশ খুঁতখুঁতে হয়ে পড়ছেন তিনি। নতুন ধারাবাহিকে তর্কের মাধ্যমে একটি মূল্যবোধের কথা বলা হয়েছে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। এবং ছোট পর্দায় তিনি রূপাঞ্জনার বিপরীত। পুরোপুরি ইতিবাচক চরিত্র।
এই ধারাবাহিক দিয়েই ছোট পর্দায় ফিরছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত ওরফে ‘দেশের মাটি’র ‘কিয়ান’। তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে নতুন নায়িকা স্বস্তিকাকে। এখনও ধারাবাহিকের প্রচার ঝলকের শ্যুট শেষ হয়নি। কিছু দিন আগেই স্টার জলসায় অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেনমেন্ট একই বিষয় নিয়ে দর্শকদের উপহার দিয়েছিল ধারাবাহিক ‘ওগো নিরুপমা’। খারাপ রেটিংয়ের জন্য আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় সেটি। বিষয়টি নিয়ে যদিও মন্তব্য করতে নারাজ তিন অভিনেতা। তবে দিব্যজ্যোতির দাবি, ‘জয়ী’, ‘চুনি পান্না’, ‘দেশের মাটি’-র চরিত্রগুলো যেমন প্রত্যেকটির থেকে প্রত্যেকটি ভিন্ন, এই ধারাবাহিকেও তেমনই অন্য রূপে ফিরছেন তিনি।
বাস্তবে দেবদূত-রূপাঞ্জনা রূপ না গুণ, কিসের কদর করেন? প্রশ্ন ছিল তাঁদের কাছে। দেবদূতের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘পড়াশোনা শিখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা অতিক্রম করেছি। এর পরেও রূপের কদর করব? আমার কাছে যে কোনও মানুষের গুণই সব।’’ রূপাঞ্জনা কিন্তু গুণের পাশাপাশি রূপকেও মর্যাদা দেন। তাঁর কথায়, গুণ সব সময়েই এগিয়ে। কিন্তু চেহারায় বাড়তি জৌলুস মানেই যেন বাড়তি আত্মবিশ্বাস। অভিনেত্রীর যুক্তি, ‘‘চোখজুড়ানো বলেও তো একটা ব্যাপার আছে? সৌন্দর্য সেই দিকটা পূরণ করে।’’ বউ খুঁজতে গেলে সুন্দরী খুঁজবেন না গুণবতী? জানতে চাওয়া হয়েছিল দিব্যজ্যোতির কাছে। নতুন ধারাবাহিকের নায়কের ঝটিতি জবাব, এই ধরনের গুরুগম্ভীর ভাবনার ধারেপাশে নেই তিনি। এটি তাঁর চতুর্থ ধারাবাহিক। তাই অভিনয় তাঁর পাখির চোখ।
দু’বছর পরে এই ধারাবাহিক দিয়ে ছোট পর্দায় ফিরছেন রূপাঞ্জনা। মাঝে ব্যস্ত ছিলেন বড় পর্দা, সিরিজের কাজ নিয়ে। দেবদূতও একাধিক সিরিজ, ছবি, মঞ্চ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। সদ্য মুশির্দাবাদ থেকে শ্যুট শেষ করে ফিরেছেন ‘আসমানী ভোর’ ছবির। ছবিতে তিনিই কেন্দ্রীয় চরিত্র। তাঁকে দুই বয়সে দেখা যাবে। সান বাংলায় অংশুমান প্রত্যুষের নতুন ধারাবাহিক ‘সাথী’-তেও ‘মাস্টারমশাই’য়ের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। খুব শিগগির শুরু করতে চলেছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি।
ক্রমাগত অভিনয়ে জড়িয়ে পড়লে দুই অভিনেতার নেশা রাজনীতির কী হবে?
রূপাঞ্জনার গলায় হতাশার ছাপ স্পষ্ট। তাঁর দাবি, যে ভাবনা বা আশা নিয়ে তিনি বিজেপি-তে যোগদান করেছিলেন তার থেকে দল অনেকটাই সরে এসেছে। তিনি সবার আগে শিল্পী। তাই ‘রগড়ে দেওয়া’র মতো মন্তব্য কানে বেজেছে। সবার আগে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। তখন থেকেই তিনি বীতশ্রদ্ধ। আপাতত তাই অভিনয়ে মন দিয়েছেন। দেবদূত কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক ভাবনা থেকে বিন্দুমাত্র সরেননি। অভিনেতার বক্তব্য, ‘‘সবটাই করতে হবে। করছিও সব কিছু। দল যখন যে দায়িত্ব দিচ্ছে পালন করছি। বাকি সময় অভিনয়।’’ পাল্টা যুক্তি, নেশার জন্য তো পেশাকে ত্যাগ করা সম্ভব নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy