আবার ফিরতে চলেছে এমন ছবি।
সদ্য করোনার সংক্রমণ মুক্ত হয়েছেন অমিতাভ বচ্চন। করোনার সংক্রমণের দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শুটিং চালু হলেও শুক্রবার পর্যন্ত শুটিংয়ে যেতে পারতেন না বিগ বি। করোনা নয়, বয়সের কারণে। মহারাষ্ট্র সরকারের নির্দেশিকা ছিল, ৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে অভিনেতা বা কলাকুশলীরা শুটিংয়ের সেটে যেতে পারবেন না। ফলে ৭৭ বছরের অমিতাভের মতোই শুটিং করতে পারছিলেন না ৬৫ বছরের অনুপম খের, পরেশ রাওয়াল, রেখা কিংবা ৭১ বছরের হেমা মালিনির মতো বহু তারকা। কিন্তু শুক্রবার সেই দরজা খুলে দিল বম্বে হাইকোর্ট। শুটিংয়ে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিল হাইকোর্ট। ফলে এখন থেকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরাও শুটিং করতে পারবেন।
রাজ্য সরকারকে অনুরোধ-উপরোধ, এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত আদালতে গিয়ে জয় পেল সিনেমা, ধারাবাহিকের প্রযোজক ও কলাকুশলীদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (ইম্পা)। ৬৫ বছরের বেশি বয়সের অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের সিনেমা ও ধারাবাহিকের শুটিং সেটে যাওয়ার অনুমতি দিল বম্বে হাইকোর্ট। শুধুমাত্র বয়সের জন্য আলাদা করে কোনও নিয়ম হতে পারে না, পর্যবেক্ষণ উচ্চ আদালতের। তবে একইসঙ্গে করোনাভাইরাসের জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে শুটিং করার কথাও বলেছে বম্বে হাইকোর্ট।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বলিউডে সমস্ত সিনেমা, টিভি ধারাবাহিক-সহ যাবতীয় অনুষ্ঠানের শুটিং বন্ধ ছিল। কয়েক সপ্তাহ আগেই ফের শুটিং চালুর অনুমোদন দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। কিন্তু ৬৫ বছরের বেশি বয়সি অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের শুটিং সেটে যাওয়া যাবে না বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধেই আদালতে মামলা করেন প্রমোদ পাণ্ডে নামে এক শিল্পী। সেই মামলাতেই এ দিন আদালত মহারাষ্ট্র সরকারের নির্দেশিকা খারিজ করে সবাইকে শুটিং সেটে যাওয়ার অনুমতি দিল।
মামলার রায়ে বম্বে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র বয়সের কারণে কোনও ব্যক্তির উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় না। আদালতের ব্যাখ্যা, অন্যান্য সমস্ত ব্যবসাক্ষেত্রে যে বিধিনিষেধ ও সাবধানতা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে, শুটিংয়ের ক্ষেত্রেও সেটাই প্রযোজ্য। কোনও একটি নির্দিষ্ট সেকশনের জন্য আলাদা করে কোনও শর্ত চাপানো যায় না। অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো শুটিংয়েও সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রী বা কলাকুশলীরা শুটিংয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সুশান্ত রহস্য: কয়েক ঘণ্টা ধরে ইডি অফিসে জেরা চলছে রিয়ার
এর আগে এই মামলার শুনানিতে ইম্পার পক্ষের আইনজীবী অশোক সারোগি আদালতে সওয়াল করেন, লকডাউনের আগে যে সব সিনেমা-ধারাবাহিকের শুটিং চলছিল, শুটিং চালু হওয়ার পরেও তার অধিকাংশই আটকে রয়েছে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে কারও শুটিংয়ে যাওয়ার অনুমোদন না দেওয়ায়। সারোগি আদালতে বলেন, গোটা ইন্ডাস্ট্রি মুখ থুবড়ে পড়েছে। স্থিতিশীল হয়ে গিয়েছে। সিনেমা-ধারাবাহিকের সঙ্গে যাঁদের রুজি-রুটির সম্পর্ক, তাঁদের অনেকেই অভাবে রয়েছেন, অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। তা ছাড়া বর্ষীয়ান অভিনেতা-কলাকুশলীদের মুন্সিয়ানা ও দীর্ঘ অভিজ্ঞতার জন্যই অনেক সিনেমা-ধারাবাহিকে তাঁদের নেওয়া হয়। তাঁরাই না থাকলে ওই সব সিনেমা-ধারাবাহিক অর্থহীন হয়ে পড়ে বলেও যুক্তি দেন ইম্পার আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত এই মামলায় জয় পেয়ে খুশির হাওয়া সিনেমহলে।
আরও পড়ুন: বিবাহিত গায়কের সঙ্গে ব্যর্থ প্রেমে মীনাক্ষীর অকাল বলিউড বিদায়ে নাকি লাভ হয় মাধুরীর
উদ্ধব ঠাকরে সরকারের ওই নির্দেশিকা জারির সময়েই অবশ্য ইম্পার পক্ষ থেকে এবং বর্ষীয়ান শিল্পী-কলাকুশলীদের তরফে বিরোধিতা করেছিল ইম্পা। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল তারা। মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেও সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল ইম্পা। চিঠিতে বলা হয়েছিল, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে কাউকে সেটে ঢোকার অনুমোদন না দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। ওঁরা নিজের নিজের ক্ষেত্রে মহান। তাঁদের পরিবর্ত হিসেবে অন্য কাউকে নেওয়া যায় না। কিন্তু সেই আর্জি কানে তোলেনি উদ্ধব ঠাকরের সরকার। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইম্পা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy