জয়া-প্রিয়ঙ্কা-সোহিনী-ঋতাভরী
ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে প্রস্তুতি পর্বটা আসলে অনেক বড়। মেকআপ শুরু হওয়ার আগেও চলে সেই প্রস্তুতি। ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে হয়, যাতে চড়া আলো বা মেকআপে তা রুক্ষ, প্রাণহীন হয়ে না পড়ে। তার জন্য অনেকে সালঁর উপরে, অনেকে চিকিৎসকের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু গৃহবন্দি জীবনে সে সবের সুযোগ নেই। ভরসা রাখতে হচ্ছে প্রাকৃতিক উপায়ে। টলিউডের নায়িকারাও ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপরুটিন বজায় রাখছেন।
প্রিয়ঙ্কা সরকার বললেন, ‘‘প্রকৃতির মধ্যেই সব আছে। আগে কখনও সে ভাবে দেখিনি। পরিবারের বয়স্কদের কাছ থেকে পাওয়া সেই টোটকা এখন কাজে লাগানোর সময়। সে দিন মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। মা বললেন, স্কিন স্ক্রাব করতে ময়দা মাখতেন। আগে এ সব করিনি। এখন ভেবে দেখছি। বাড়িতে তৈরি বেসনের মাস্ক ব্যবহার করছি। চুলে ডিম খুব ভাল কাজে দেয়। একটু দুধও হাতে নিয়ে মুখে মেখে নিই। আর চুলে তেল আমি আগেও লাগাতাম, এখনও মাখছি। সপ্তাহে দু’দিন করে তেল মাখাটা চালিয়ে যাচ্ছি।’’
জয়া আহসানও একই পদ্ধতিতে নিজের ত্বকের পরিচর্যা করছেন। প্রকৃতি ঠিক যে ভাবে নিজেকে রেস্টোর করছে, তিনিও সে ভাবেই নিজের ত্বক ও চুল রেস্টোর করতে চান। জয়া বললেন, ‘‘ছোটবেলায় আমার নানি রোজ চপচপে করে তেল মাখিয়ে দিতেন চুলে। এখন সে ভাবেই তেল মেখে থাকছি। তা ছাড়া রোজ সকালে নিম পাতা, হলুদ ও মধু খাই আমি। তার একটু পরে অ্যাপল সিডার ভিনিগার ও আদা খাই। আমার মনে হয়, বাইরে থেকে কিছু মাখার চেয়ে খেলে বেশি কাজে দেয়। আমাদের বাড়িতে একটা চকলেট মিন্ট গাছ আছে। রোজ সকালে ওই চকলেট মিন্ট জলে দিয়ে খাই। তাতেই পুরো রিফ্রেশ লাগে ভিতর থেকে।’’ তবে বাড়িতে আছেন বলে ডে ক্রিম, নাইট ক্রিম কিছুই মাখছেন না। ত্বককে বিশ্রাম দিচ্ছেন ক’টা দিন।
ঋতাভরী চক্রবর্তীরও একই মত। ত্বকে তেমন কিছু করতে হচ্ছে না। বেরোতে হচ্ছে না বলে মাঝেমাঝে হট অয়েল মাসাজ চলছে চুলে। তাঁর কথায়, ‘‘আমন্ড, ক্যাস্টর আর কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে মাথায় মাখছি। তবে তেল মেখে শুতে পারি না। শ্যাম্পু করে নিই। আর আমার চুলগুলো স্ট্রেট করেছিলাম। এখন আবার আগের মতো ওয়েভি হয়ে গিয়েছে। সেই পুরনো দিনে ফিরে গিয়েছি মনে হচ্ছে। আর ত্বকের জন্য রান্না করতে করতে হাতের কাছে যা পাই, মেখে নিই। কখনও হয়তো রান্নায় টক দই দিয়ে কিছুটা মুখে মেখে নিলাম। এক দিন ডিম মাখলাম চুলে। আর এখন রোজ সকালে কাঁচা রসুন খাচ্ছি।’’
আরও পড়ুন: ভরসা এখন টেলিফোনই
রান্নাঘরে কাজ করতে করতে ফল বা টম্যাটোর এক টুকরো মুখে ঘষে নেন সোহিনী সরকারও। আর চুলের যত্ন নিচ্ছেন কী ভাবে? তাঁর কথায়, ‘‘আগে রোজই বেরোতে হত। পলিউশনের জন্য একটু তেল থাকলেই চুল চিটচিটে হয়ে যেত। এখন দূষণ কমে গিয়েছে। তার উপরে বাড়িতেই বসে আছি। তাই সরষের তেল মাখছি। আমলকি দিয়ে তেল রোদে দেওয়া থাকে। সেই তেলই চুলে মাখছি। এক দিন চুলে ডিমও লাগিয়েছিলাম। আর বাড়িতে কিছু ফেসমাস্ক কেনাই ছিল। সময়ের অভাবে তা লাগানো হয়নি। সেগুলির এক্সপায়ারি ডেটও এগিয়ে আসছে। তাই ব্যবহার করে নিচ্ছি।’’
তবে বেশ সমস্যায় পড়েছেন ইশা সাহা। ইশার ত্বক স্পর্শকাতর। তাই মেডিকেটেড প্রডাক্টের উপরেই ভরসা করতে হয় তাঁকে। এখন সে সব কিছুই পাচ্ছেন না। ইশা বললেন, ‘‘আমার ত্বকে সব কিছু ব্যবহার করতে পারি না। তা ছাড়া আমার মুখে ডার্ক স্পট পড়ছিল বলে ক’দিন হল তার ট্রিটমেন্ট শুরু করেছিলাম। সেটাও এখন বন্ধ। চুলও পড়ছিল। তবে এখন দেখছি চুল লম্বা হচ্ছে।’’
ঘরোয়া রূপরুটিন তো না হয় হল। কিন্তু আই ব্রো প্লাক, ওয়্যাক্সিং, ম্যানিকিয়োর... এ সব কী ভাবে করছেন তাঁরা? জয়ার কথায়, ‘‘ভুরু প্লাক না করেই বেশ ভাল লাগছে। প্লাক না করা ভুরুতে ইনোসেন্ট দেখায়। আমার আবার সেটা খুব ভাল লাগে। তবে ধৈর্য ধরে নখ বড় করেছিলাম। হাইজিন বজায় রাখার জন্য কচকচ করে নখগুলো কেটে ফেলেছি। প্রথম প্রথম কষ্ট হচ্ছিল। এখন আর কিছু মনে হচ্ছে না।’’ সোহিনীও ভুরু প্লাক করেন না। প্রিয়ঙ্কা অবশ্য অনেক ঘরোয়া টোটকা পাচ্ছেন, কিন্তু কোন কোনটা প্রয়োগ করবেন, সেটা নিয়ে চিন্তিত। হাসতে হাসতে প্রিয়ঙ্কা বললেন, ‘‘অনেক হোমমেড ওয়্যাক্সিংয়ের ভিডিয়ো দেখছি। তবে নিজের উপরে প্রয়োগ করার ভরসা পাচ্ছি না। তাই আপাতত যেমন আছি, ঠিক আছে। সব স্বাভাবিক হলে সালঁয় গিয়েই যা করার করব।’’
এতটা সময় এর পরে হয়তো পাওয়া যাবে না। তাই নিজেকে রেজুভিনেট করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কেউই।
আরও পড়ুন: অনলাইনে মুক্তি পেতে পারে কাজলের ওয়েব ডেবিউ ‘ত্রিভঙ্গ’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy