ভিড় এড়িয়ে নিরাপদে সিনেমা দেখার দাওয়াই কী হতে পারে? প্রতীকী ছবি।
পুজোর মুখে দরজা খুললেও সুরক্ষা-বিধির চাপে কি ফের নুয়ে পড়বে সিনেমা হলগুলি? বিশেষত সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলগুলিকে কি বাড়তি চাপে পড়তে হবে? মঙ্গলবার কেন্দ্রের সিনেমা হল সংক্রান্ত নিরাপত্তা-বিধি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর বা এসওপি) প্রকাশিত হওয়ার পরে ফের এই প্রশ্নগুলি মাথাচাড়া দিচ্ছে।
অচেনা লোকের ভিড় এড়িয়ে নিরাপদে সিনেমা দেখার কিছু দাওয়াই আবার উঠে আসছে শহরের মাল্টিপ্লেক্সগুলির কাছ থেকে। আইনক্সের পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর অমিতাভ গুহঠাকুরতা বলছেন, ‘‘পরিবার বা ছোট ছোট দলের জন্য বিশেষ শোয়ের আয়োজনের দিকে আমরা হাঁটছি। পছন্দের কোনও ছবির বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে শুধু চেনা লোকেরাই হলে থাকবেন।’’ তবে ধন্দও রয়েছে বিস্তর। যেমন, সিনেমা হলে শুধু মোড়ক-বন্দি খাবার বিক্রি করা গেলে খোলা পপকর্ন বা যন্ত্র থেকে বোতাম টিপে নেওয়া নরম পানীয় বিক্রি করা যাবে কি না, সে উত্তর এখনও অজানা। মোবাইলে কোড স্ক্যান করিয়ে ডিজিটাল টিকিটে সকলে স্বচ্ছন্দ হবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলের মালিকদের একাংশও।
তবে কিছুটা জল না-মেপে এখনই টিকিটের দাম বাড়ানোর পথে হাঁটতে চাইছেন না কোনও সিনেমা হল বা মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা মানলে জীবাণুমুক্ত বা স্যানিটাইজ় করার খরচ বাড়বেই। তা হলে কি আপাতত দরজা খুললেও ক্রমশ সঙ্কট বাড়বে সিনেমা হলগুলির? শহরে-জেলায় অভিজ্ঞ প্রদর্শক, পরিবেশক অরিজিৎ দত্তের আশঙ্কা, ১০-১৫ শতাংশ সিনেমা হল খুলবে না। কলকাতার ‘প্যারাডাইস’-এর কর্ণধার সুনীত সিংহ থেকে ‘প্রাচী’-র বিদিশা বসু বলছেন, ‘‘হিন্দি, ইংরেজি ছবি ছাড়া কত দূর যুঝব?’’ ‘প্রাচী’ খুললেও ‘প্যারাডাইস’-এর দরজা খোলা তাই এখনও অনিশ্চিত। নানা জটিলতায় পূর্ব কলকাতার একটি মাল্টিপ্লেক্সও এখনই না-খুলতে পারে। যা পরিস্থিতি, তাতে পুজোয় প্রধানত বাংলা ছবি নিয়ে কলকাতা বা বাংলার সিনেমা হলগুলির দরজা খুললেও ভারতের অন্যত্র ১ নভেম্বরের আগে সিনেমা হল খোলার সম্ভাবনা কম।
মানতে হবে
সব সময়ে দর্শকদের মাস্ক, কর্মীদের
ফেসকভার, দরকারে পিপিই পরতে হবে
দর্শকদের লাইনে ছ’ফুটের পারস্পরিক দূরত্ব
দর্শকাসন অর্ধেক ভর্তি করা যাবে
ডিজিটাল টিকিট ও খাবারের জন্য স্পর্শবিহীন লেনদেন
ভিড় এড়াতে বিভিন্ন শোয়ের ভিন্ন ভিন্ন সময়
লবি, শৌচাগার, পার্কিং এলাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ
শুধুমাত্র তৈরি খাবার বিক্রি
এসি-র হাওয়া বার করার বন্দোবস্ত
দর্শকদের ফোন নম্বর রেখে দেওয়া
সিনেমা হলের সিঁড়ি, রেলিং, কাউন্টার জীবাণুমুক্ত করা
কোভিড সতর্কতায় সহযোগিতা না-করলে কড়া ব্যবস্থা
(তথ্যসূত্র: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক)
এ সব দুশ্চিন্তার মধ্যে কিছুটা ইতিবাচক মন নিয়ে এগোতেই আজ, বুধবার বৈঠক ডেকেছে প্রযোজক-প্রদর্শক-পরিবেশকদের সংগঠন ‘ইম্পা’। নিরাপত্তার খুঁটিনাটি নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনায় বসবেন পরিবেশক, প্রযোজকেরা। ‘ইম্পা’র কোষাধ্যক্ষ শান্তনু রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘দর্শকদের উপরে টিকিটের দামের চাপ বাড়াতে চাই না। আবার কোভিড পরিস্থিতিতে সাড়ে ছ’মাস বাদে সিনেমা হল খুলে কোনও ঝুঁকিও নিতে চাই না। এই দু’দিক রক্ষা করা নিয়েই আলোচনা হবে।’’
আরও পড়ুন: পুজোর ভিড়ই ডাকবে বিপদ, আতঙ্কে পুলিশ
উত্তর কলকাতার লেক টাউনে ‘জয়া’র কর্ণধার মানিক বণিক বলছেন, ‘‘জীবাণুমুক্ত করার নানা সরঞ্জাম, ফগিং মেশিন, থার্মাল গানের জন্য খরচ বেড়ে ৪০-৬০ হাজার টাকা হবে। শো পিছু ১৫০-২০০ টাকার ধাক্কা। কিন্তু এটা আবশ্যক।’’ বারাসত, কোচবিহারেও জয়া মাল্টিপ্লেক্স চালান মানিকবাবু। সিনেমা হল মালিকদের অনেকের আর্জি, টিকিটে পরিবেশকদের সঙ্গে ভাগাভাগির হারে কিছুটা অদলবদল হোক।
আরও পড়ুন: উৎসবের জেরে কি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে করোনা-কাল
পরিবেশকদের তরফে বাবলু দামানি আবার বলছেন, ‘‘অর্ধেক টিকিট বিক্রির চাপ তো আমাদের উপরেও থাকছে। কত টিকিট বিক্রি হবে তা-ও স্পষ্ট নয়।’’ প্রদর্শক তথা পরিবেশক শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘আগে ছবি দেখানো শুরু হোক। তার পরে না হয় দেখব, পরিবেশক-প্রদর্শক চুক্তি পাল্টাবে কি না!’’ লকডাউনের সময়ে সিনেমা হলে চলতে থাকা ‘ব্রহ্মা জানেন...’ ছবির প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অনেক সিনেমা হলই ছবিটা চেয়েছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ছবিটা না দিতেও অনুরোধ করেছে। তবে প্রদর্শকদের তরফে নতুন কোনও চুক্তির প্রস্তাব এখনও আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy