একেই কি বলে দেবমাহাত্ম্য? অক্ষয়তৃতীয়ার সকাল থেকে শহরের আকাশের মুখভার। বেলা বাড়তে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি নেমেছে কলকাতায়। কিন্তু ১৮৪ কিলোমিটার দূরে দিঘার আকাশ রোদে ঝলমল। বৃষ্টি তো দূর, মেঘের নামগন্ধও নেই সেখানে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শেষ পর্বে। “আয়তনে, সৌন্দর্যে হার মানাবে পুরীর ৫০০ বছরের পুরনো মন্দিরকে”, মন্দিরপ্রাঙ্গণ থেকে আনন্দবাজার ডট কমের কাছে দাবি ছোট পর্দার অভিনেতা ভিভান ঘোষের। একই কথা জানিয়েছেন ওড়িশি নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “আমার চোখে দেখা সেরা মন্দির। মন্দিরগাত্রের সূক্ষ্ম কারুকাজ দেখার মতো।”

মন্দিরে পুজোর তদারকিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত দেব, সায়ন্তিকা। ছবি: সংগৃহীত।
মঙ্গলবার দিঘায় পৌঁছে গিয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপঙ্কর বাগচি, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত মোহতা, অরিন্দম শীল, লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সী, দিগন্ত বাগচী-সহ বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামী ব্যক্তিত্বেরা। ভিভান জানিয়েছেন, মন্দিরপ্রাঙ্গণে তিলধারণের জায়গা নেই। বাংলার সমস্ত ক্ষেত্র থেকে মোট ১২ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। মন্দির উদ্বোধনের দিন যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য আমন্ত্রিতদের মুঠোফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ।

দিঘায় মন্দিরের সামনে দেবলীনা কুমার, ভিভান ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।
গত ছ’দিন ধরে যজ্ঞ চলছে মন্দিরে। প্রাঙ্গণের প্রতিটি অলিন্দ ফুলের মালায় সাজানো। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভোগ রান্নার তদারকি করছেন। দিঘার মন্দির দেখে চোখ জুড়িয়েছে সুরকার জিতেরও। তিনি সোমবার বলেছিলেন, “মন্দির দেখে মনে হচ্ছে, যেন এক টুকরো স্বর্গ নেমে এসেছে সমুদ্রতীরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাজ্যবাসীর কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।” একই কথা শোনা গেল ভিভানের মুখেও।

মন্দিরের সামনে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি:সংগৃহীত।
ভিড় তা হলে কোথায় হবে? পুরীতে না দিঘায়? প্রশ্নের জবাবে ভিভানের দাবি, “কলকাতা থেকে পুরীর দূরত্ব অনেকটাই। যাঁরা সেখানে যেতে পারবেন না তাঁরা দিঘায় চলে আসবেন। এখানেও সমান ভিড় হবে।” এখনই সমুদ্রপারের দুই মন্দির নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। জগন্নাথদেবের ভক্তেরা সমাজমাধ্যমেই একই দেবতার দু’টি মন্দির নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। সেই আপত্তি নস্যাৎ করে দিয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর কথায়, “কালীঘাট বা তারাপীঠে দেবী কালিকার পুজো হয়। একই ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুজো হয় বড়মার। তিনিও কালীর একটি রূপ।”

বাংলার নায়িকারা দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “এতে কোনও সমস্যা না হলে পুরী-দিঘার মন্দির নিয়ে কেন বিরোধ বাধবে?”