বিহার থেকে নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বই গিয়েছিলেন তিনি। পকেটে ছিল না একটি কানাকড়িও। ট্রেনে চেপে বসেছিলেন বিনা টিকিটে। ফলে নামী নৃত্যগুরুর কাছে নাচ শেখার বাসনা ছিল এক প্রকার স্পর্ধা। আর সেই স্পর্ধাই দেখিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক। এক সাক্ষাৎকারে সেই নায়কের কথা জানিয়েছিলেন বলিউডের ‘মাস্টারজি’ সরোজ খান।
বছর কয়েক আগে সরোজ খান এক সাক্ষাৎকারে জানান, এক সময় এক যুবককে তিনি নাচ শিখিয়েছিলেন বিনা পারিশ্রমিকে। শুধু বলেছিলেন জয়ী হতে। পরবর্তী কালে সেই যুবকই হয়ে ওঠেন বলিউডের ‘হিরো নম্বর ১’। শুধু অভিনয় নয়, বলিউডের সর্বকালের সেরা নৃত্যশিল্পী অভিনেতাদের মধ্যেও তিনি অন্যতম। তিনি গোবিন্দ।
সরোজ খান বলেন, “গোবিন্দ আমাকে বলেছিলেন, ‘মাস্টারজি আমি তো বিহার থেকে বিনা টিকিটে এখানে এসেছি, আমার কাছে আপনার পারিশ্রমিক দেওয়ার মতো অর্থ নেই।’ তাঁকে বলি, আমি তো টাকা চাইনি। যখন তুমি তারকা হয়ে উঠবে তখন দিয়ো। রাজি হন গোবিন্দ।”
সরোজ তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করতে গিয়ে গোবিন্দের শ্রদ্ধা ও একনিষ্ঠার কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, এক দিন কাজের ফাঁকে তিনি স্টুডিয়োয় বসে রয়েছেন, সে সময় একটি বালক এসে তাঁর হাতে একটি খাম তুলে দেয়। বলে, “চিচিদাদা (গোবিন্দের ডাকনাম) দিয়েছেন।” সরোজ দেখেন খামের উপর লেখা ‘গুরুদক্ষিণা’, আর ভিতরে ২৪ হাজার টাকা।
তবে এই মূল্য দিয়েই তৃপ্ত হননি গোবিন্দ। সারা জীবন তিনি সরোজকে শ্রদ্ধা করেছেন, পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। সরোজই বলেন, “সে সময় ‘দেবদাস’-এর শুটিং চলছে। ‘ডোলা রে’ গানের শুটিংয়ের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ি। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। আমার বড় মেয়ের পাশে এসে দাঁড়ান গোবিন্দ। বলেন, ‘মাস্টারজির ছেলে এসেছে।’” সরোজের স্মৃতিচারণে উঠে আসে সে সময়ের ঘটনা। তিনি জানান, অসুস্থতার সময় হাসপাতালে গিয়ে গোবিন্দ একটি মোড়ক তুলে দেন সরোজের বড় মেয়ের হাতে। তাতে ছিল নগদ ৪ লক্ষ টাকা। সেই টাকাতেই চিকিৎসা হয় নৃত্যগুরুর। সে বার সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। এ কথা গোবিন্দ জানতে দেননি কাউকে। শুধু বলেছিলেন, “মাস্টারজির ছেলে এসেছে।”