‘ব্রহ্মাস্ত্র’র আয়ের হিসাব এক এক জায়গায় এক এক রকম কেন?
১০৫ না ২২৫ কোটি? তিন দিনে ঠিক কত টাকা আয় হয়েছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র? নানা রকম বক্স অফিস পরিসংখ্যান দেখে রীতিমতো বিভ্রান্ত সকলে। তবে কি সত্যিই টাকা ঢেলে কারচুপি চলছে? যেমনটা অভিযোগ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত! আসলে হচ্ছেটা কী? সেটা স্পষ্ট করা যাক।
অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত পুরাণ-ফ্যান্টাসি ছবি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ বলিউডের খরা কাটিয়ে দিয়েছে, সেটুকু নিশ্চিত। আলিয়া ভট্ট এবং রণবীর কপূর ছাড়াও এ ছবির আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন অমিতাভ বচ্চন, নাগার্জুন এবং অতিথি চরিত্রে শাহরুখ খান। গত ৯ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে হিন্দি, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম-সহ ছ’টি ভাষায় মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি দেশের বাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডেও ভাল ভাবে চলেছে। ভাষা এবং দেশের এই ব্যাপ্তি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র লাভের অঙ্ক বাড়িয়েছে।
এ বার জানতে হবে, বক্স অফিসে নেট এবং গ্রস সংগ্রহের মধ্যে পার্থক্য কী? ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রযোজক কর্ণ জোহরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কঙ্গনা প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তিনি নেট-এর পরিবর্তে চলচ্চিত্রের মোট সংগ্রহ দেখাচ্ছেন! খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে, মোট বক্স অফিস সংগ্রহ সিনেমার টিকিট বিক্রির মোট পরিমাণ বোঝায়। এটি সব সময় একটি উচ্চতর হিসাব। অন্য দিকে, নেট বক্স অফিস সংগ্রহে পরিষেবা এবং বিনোদন কর-সহ সরকারের কেটে নেওয়া বিভিন্ন অংশ বাদ যায়। যেহেতু এই করের পরিমাণ এক এক রাজ্যে এক এক রকম, তাই নেট হিসাব এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে আলাদা হতে পারে। বক্স অফিস পরিসংখ্যানের একটি তৃতীয় দিক হল ডিস্ট্রিবিউটর শেয়ার। নাম থেকেই বোঝা যায়, ডিস্ট্রিবিউটররা যে পরিমাণটুকু পান এটি তাই । প্রেক্ষাগৃহের ভাড়া থেকে নেট সংগ্রহ বিয়োগ করলে এই অঙ্ক মেলে।
তা হলে, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? ছবিটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মোট সংগ্রহে ২২৫ কোটি টাকা আয় করেছে। এর অর্থ এই নয় যে, প্রযোজক, এমনকি পরিবেশকরাও এতটা উপার্জন করেছেন। তাঁদের ভাগ অনেক কম। যদি কোনও সূত্র বিশ্বব্যাপী সংগ্রহের পরিসংখ্যান কম দেখায়, তবে সেটা কোনও অসঙ্গতি নয়। সে ছবি নেট সংগ্রহের হতে পারে।
সংগ্রহগুলি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে গণনা করা হয়। প্রতিটি অঞ্চল এবং দেশের কাজ করার আলাদা উপায় রয়েছে। এই বিভিন্ন পদ্ধতির ফলেই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র বক্স অফিসের অঙ্কে হেরফের দেখা দিয়েছে।
সোমবার বক্স অফিস ইন্ডিয়া ডট কম জানিয়েছে, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রথম সপ্তাহান্তে ১০৫ কোটি টাকা আয় করেছে। ইন্ডাস্ট্রি ট্র্যাকার ‘স্যাকনিল্ক’ জানিয়েছে, ছবিটি ভারতে তিন দিনে ১৪৬ কোটি টাকা আয় করেছে। পার্থক্য হল, প্রথম সংখ্যাটি শুধু মাত্র হিন্দি সংস্করণের নেট সংগ্রহ এবং দ্বিতীয় সংস্করণটি সমস্ত ভাষার সংস্করণের মোট সংগ্রহ। কোনও হেরফের নেই। শুধু বিভিন্ন সূত্র বিভিন্ন নির্দেশনা অনুসরণ করে।
পাশাপাশি অগ্রিম বুকিংয়ের মতো বিষয়ও এখানে লক্ষণীয়। স্যাকনিল্কের মতে, প্রথম দিনের জন্য ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র অগ্রিম বুকিং মিলিয়ে ১৭.৭১ কোটি ছিল। কিছু বাণিজ্য বিশ্লেষকের মতে সেই অঙ্ক ২২ কোটি। দেখা গিয়েছে দুই হিসাবই আসলে ঠিক। শুধু গণনা পদ্ধতির স্কেল আলাদা। ২২ কোটির হিসাব মোট ব্লক করা আসন থেকে সংগৃহীত। এগুলি সেই আসন, যা অনলাইনে বুক করা যাবে না। কিছু বিশ্লেষক এগুলিকে অগ্রিম বুকিংয়ের পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করেন, কারণ এই আসনগুলি উপলব্ধ নয়৷ যাই হোক, এটি করা ভুল হবে কারণ এই আসনগুলি আসলে বিক্রি করা হয়নি। কাউন্টারে নেওয়ার জন্য টিকিট আছে। তা-ই প্রথম ১৭.৭১ কোটিই সঙ্গত বলে গণ্য হয়েছে।
তাই যদি একাধিক বিশ্বাসযোগ্য সূত্র জানায়, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ২১৫ কোটি থেকে ২২৫ কোটির মধ্যে আয় করেছে, তবে সেটিকেই নিরাপদ পরিসর বলে ধরা যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy