Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

মিশন কাশ্মীর... ৩৭০ ধারা রদের পরে ইন্ডাস্ট্রি কী বলছে?

বলিউডে কাশ্মীর বরাবরই গুরুত্ব পেয়েছে। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, ‘বিশেষ মর্যাদা’র আওতায় আর থাকছে না জম্মু-কাশ্মীর। আলাদা হয়ে যাচ্ছে লাদাখও।

হায়দর ছবির একটি দৃশ্য।

হায়দর ছবির একটি দৃশ্য।

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০০:১৩
Share: Save:

কাশ্মীরে নৈসর্গ আছে, করুণ রস, বীর রস, ষড়যন্ত্র— সবই আছে। সোজা ভাষায় বললে জম্মু-কাশ্মীরে প্লট, ব্যাকগ্রাউন্ড হাতে গরম মেলে। তাই বলিউড বিষয়বস্তু হিসেবে বারবারই ভূস্বর্গের শরণাপন্ন হয়েছে। শুরুর দিকে ‘কাশ্মীর কী কলি’র মতো নরমসরম ছবি বাদ দিলে পরবর্তী কালে প্রায় প্রতি ছবিতেই কাশ্মীরের সন্ত্রাস, আর্মির ভূমিকা, স্থানীয় মানুষের জীবন, ক্রাইসিস ফুটে উঠেছে। কেউ সেখানকার সন্ত্রাসকে তুলে ধরেছেন, কেউ আবার মানুষের অসহায়তাকে।

সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, ‘বিশেষ মর্যাদা’র আওতায় আর থাকছে না জম্মু-কাশ্মীর। আলাদা হয়ে যাচ্ছে লাদাখও। জম্মু-কাশ্মীরও এখন এক সংবিধান, এক পতাকার আওতায়। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশ জুড়ে নানা মতামত উঠে আসতে থাকে। অনুপম খেরের টুইট, ‘কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়ে গেল।’ কঙ্গনা রানাউত বলছেন, ‘সন্ত্রাসবাদহীন রাষ্ট্রের সূচনা হল।’ জ়াইরা ওয়াসিম লিখেছেন, ‘দিস টু শ্যাল পাস!’ গওহর খান, ওনিরের মতো ব্যক্তিত্ব অবশ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ করেছেন।

বহু ছবিতেই কাশ্মীরে উগ্রপন্থীদের নাশকতার ঘটনা দেখানো হয়েছে। মণিরত্নমের ‘রোজা’য় অরবিন্দ স্বামীর চরিত্রটি উগ্রপন্থীদের হাতে বন্দি হয়। ‘মিশন কাশ্মীর’ দেখিয়েছিল কী ভাবে নতুন প্রজন্মকে নিজের উদ্দেশ্যপূরণের জন্য ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদীরা। কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদে বলিউড যতটা ফোকাস করেছে, সেখানকার মানুষের আক্ষেপ, তাঁদের অসহায়তা ততটা ফুটে ওঠেনি। বিশাল ভরদ্বাজের ‘হায়দর’ বা অশ্বিন কুমারের ‘নো ফাদার্স ইন কাশ্মীর’ খানিকটা হলেও তা ভরাট করেছিল। এজ়াজ খানের ‘হামিদ’-এ একটি ছোট্ট বাচ্চা তার বাবাকে খুঁজে বেড়ায়। তবে পরিস্থিতির বিচারে এই ধরনের ছবির সংখ্যা বড়ই কম।

‘আই অ্যাম’-এ ওনির কাশ্মীরের প্রেক্ষাপটে দুই বন্ধুর গল্প বলেছিলেন। পরিচালকের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি আনন্দ প্লাসকে বলেন, ‘‘কী বলব বলুন তো! আমিও এক রাষ্ট্র, এক নিয়মে বিশ্বাসী। কিন্তু যে ভাবে ঘটনাটা হল, তাতে আপত্তি রয়েছে। ওখানকার মানুষ কী চান, সেটা জানতে চাওয়া হল না। কাশ্মীরের নেতাদের হাউস অ্যারেস্ট করা হল। এগুলো কী? গত কয়েক বছরে কাশ্মীরে শুধু আর্মি দেখেছি...’’ ওনির কাশ্মীরকে প্রেক্ষাপট করেই তাঁর পরবর্তী ছবির পরিকল্পনা করছিলেন। ‘‘এই পরিস্থিতিতে সেটা কতটা সম্ভব হবে, সন্দেহ আছে,’’ পরিচালকের গলায় হতাশা।

‘উমরাও জান’-এর পরিচালক মুজ়ফ্ফর আলি তাঁর ছবি ‘জ়ুনি’ শেষ করতে পারেননি। কারণ ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, কাশ্মীরে মিলিটারি কার্যকলাপের কারণেই ছবিটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। কাশ্মীরি বয়নশিল্পীদের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মুজ়ফ্‌ফর। একই ভাবে ওখানকার শিল্পীদের পাশে রয়েছেন রিতু কুমারের ছেলে পরিচালক অশ্বিন কুমার। তবে এ দিনের সরকারি রায় নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

৩৭০ ধারা উঠিয়ে দেওয়ার ফলে জম্মু-কাশ্মীরে কাঙ্ক্ষিত শান্তি নেমে আসবে আশা করছেন অনেকে। হয়তো আগামী দিনে কাশ্মীরের শান্তি-উন্নতির ছবি বলিউডও দেখাবে। বিশেষত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বলিউডের ঘনিষ্ঠতা যে পর্যায়ে গিয়েছে! কিন্তু আসল পরিস্থিতির ছবি কি উঠে আসবে?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy