‘রানী রাসমণি’। ছবি: ফেসবুক।
হঠাৎ করে শুটিং বন্ধ হওয়ায় বেশ সমস্যায় পড়েছে টেলি-পাড়া। চ্যানেল থেকে প্রযোজক, ইউনিট সদস্য প্রত্যেকেই চিন্তায়। যদিও করোনাভাইরাসের জন্য শুটিং বন্ধের বিষয়টির যৌক্তিকতা কেউই অস্বীকার করতে পারছেন না।
বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক তড়িঘড়ি একাধিক ইউনিট করে যতটা সম্ভব এপিসোড ব্যাঙ্কিং করার চেষ্টা করে। ‘কৃষ্ণকলি’, ‘রানী রাসমণি’, ‘ধ্রুবতারা’, ‘আলোছায়া’, ‘নেতাজি’ প্রভৃতি ধারাবাহিকের ইউনিট শুটিং করে বুধবার ভোর অবধি। গতকাল রাত প্রায় পৌনে ১১টা নাগাদ ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের তরফে সেকেন্ড ইউনিট শুট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গিল্ডের সদস্যরা তড়িঘড়ি টেকনিশিয়ানস এবং অন্যান্য ইউনিট সদস্য নির্বাচন করে শুটিং স্পটে পাঠান। এতগুলো শুটিং ইউনিট একসঙ্গে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় সবাইকেই।
শুটিং বন্ধ হওয়াতে চ্যানেলগুলিও সমস্যায় পড়ে। প্রত্যেকটি চ্যানেলে দফায় দফায় মিটিং চলতে থাকে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এবং বুধবারেও প্রত্যেকটি চ্যানেলে মিটিং চলছে। কিন্তু চ্যানেলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। ফলে কোন ধারাবাহিকের ঠিক কতটা ব্যাঙ্কিং বা ব্যাঙ্কিং না থাকলে ঠিক কী চালানো হবে সে বিষয়ে যথাযথ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:বিদেশ থেকে ফিরে ঘরবন্দি থাকছেন জিৎ-মিমি
‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য
প্রযোজক, পরিচালক তথাকাহিনিকার সুশান্ত দাস বললেন, “করোনাভাইরাস যে জায়গায় পৌঁছেছে সেটাকে তো অস্বীকার করা যাবে না। একটা শুটিংয়ে অনেক লোকজন একত্র হচ্ছে। সাবধানতা নেওয়া হলেও যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। শুটিং বন্ধ হয়েছে এটাতে আপত্তি থাকতে পারে না। আমাদের যা ব্যাঙ্কিং আছে তাতে কিছুদিন টেলিকাস্ট চলবে। তারপর কী চলবে সেটা চ্যানেল সিদ্ধান্ত নেবে।”
আরও পড়ুন: নির্দেশ অমান্য করে জিমে শাহিদ, নোটিস পাঠাল পুর নিগম
সব ধারাবাহিক বা রিয়ালিটি শোয়ের ব্যাঙ্কিং সমসংখ্যায় নেই। এমন হতেই পারে যে একটা চ্যানেল নতুন এপিসোড টেলিকাস্ট করছে কিন্তু আর একটি চ্যানেল রিপিট টেলিকাস্ট দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রযোজক স্নিগ্ধা বসু বললেন, “খুব ভাল হয় যদি সব চ্যানেল একদিনে একসঙ্গে রিপিট টেলিকাস্টে যায়। তাহলে কেউ এগিয়ে বা পিছিয়ে থাকবে না।’’
প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, “চ্যানেল আমাদের ব্যাঙ্কিং জমা দিতে বলেছে। তারপর কী হবে সেটা চ্যানেলের বিষয়।”
‘আলোছায়া’ ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য
‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের ইউনিট আজ ভোর সাড়ে চারটে অবধি শুট চালিয়েছে। ধারাবাহিকের পরিচালক বিজয় মাজির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২৫ মার্চপর্যন্ত ব্যাঙ্কিং আছে। কিন্তু বাকি দিনগুলোয় ঠিক কী টেলিকাস্ট হবে তিনিও জানেন না। তবে একটি এপিসোড যেখানে ২৪ মিনিটের হয় সেখানে দৈর্ঘ্য কমিয়ে ১৮ মিনিট করা হয়েছে। তাতে হয়তো আরও দু’-একদিন নতুন এপিসোড টেলিকাস্ট হতে পারবে।
‘করুণাময়ী রানী রাসমণি’-র অন্যতম পরিচালক রূপক দে আজ ভোর পাঁচটা অবধি শুটিং করেছেন। তিনি বললেন, “আমাদের সাত দিনের মতো ব্যাঙ্কিং আছে।”‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকের নায়ক গৌরব রায়চৌধুরী জানালেন, তাঁদের ৭/৮ দিনের ব্যাঙ্কিং রয়েছে। তিনি যোগ করলেন, “আমাদের সব শুটিং ইউনিটেই বয়স্ক মানুষেরা থাকেন। যদি কোনও ভাবে ভাইরাস অ্যাটাক হয় তো তাঁদের ফ্যামিলিকে কে দেখবে? যা হয়েছে ঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফিনান্সিয়াল লস রিকভার করা যাবে, কিন্তু মৃত্যু রিকভার করা যাবে না।”
‘নেতাজি’ ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য
এরই পাশাপাশি পারিশ্রমিকের বিষয়টাও এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।বিশেষ করে, কম পারিশ্রমিকে যে সব ইউনিট সদস্য কাজ করেন তাঁরা পড়েছেন সমস্যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লোকেশন সাউন্ড রেকর্ডিস্ট বললেন, “আমাদের মতো মানুষের রুটি-রুজিতে টান পড়ল ঠিকই। তবু সবাই মিলে কিছু বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা মেনে নিয়েই ক’দিন অপেক্ষা করছি।”
অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তীর কন্ঠেও একই প্রতিধ্বনি, “ইউনিটে দু’রকম রিঅ্যাকশন পাচ্ছি। এক, আমরা পার ডে আর্টিস্ট। টেকনিশিয়ানরাও পার ডে-তে কাজ করেন। শুটিং বন্ধ মানে পারিশ্রমিকও বন্ধ। এ মাসে অনেকগুলো টাকা লস হবে এঁদের সবার। অন্যদিকে, কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটে গেলে দায় কে নেবে?”
এই ক’দিন টুরিস্ট স্পটেও যাওয়ার উপায় নেই। করোনার জেরে বন্ধ সবকিছুই। সবাই বাড়িতে থাকার কথা ভাবছেন আর অপেক্ষা করছেন আগামী ৩০ মার্চ ঠিক কী সিদ্ধান্ত হয়। সবার একটাই জিজ্ঞাস্য, ৩১ মার্চ থেকে কি ফেরা যাবে শুটিংয়ে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy