ফের কাঠগড়ায় জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
আরজি কর-কাণ্ডের মধ্যেই তোলপাড় বাংলা বিনোদন দুনিয়া। নির্যাতিতার মৃত্যু নতুন করে নারী নির্যাতনকে প্রকাশ্যে এনেছে। সে রকমই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে নারী নিগ্রহের ঘটনা এখন চর্চিত বিষয়। শনিবার একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ পরিচালক অরিন্দম শীলকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছে ডিরেক্টর্স গিল্ড। রবিবার অভিযোগের কাঠগড়ায় অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারেও সেই অভিযোগের ধারা অব্যাহত। এ বার ‘তথ্যপ্রমাণ’ সহযোগে অভিনেতার বিরুদ্ধে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মুখ খুললেন মডেল শিখা।
কী অভিযোগ তাঁর? অভিযোগকারীর দাবি, বছর তিনেক আগে, অভিনেতা নিজে ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। জানান, তাঁকে দেখে মনে হয়েছে, সুযোগ পেলে ওই মডেল উন্নতি করবেন। তাই তিনি চাইলে বাংলা ছবিতে মডেলকে সুযোগ করে দিতে পারেন। শিখার কথায়, “আমিও অভিনয় করার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। ফলে, জয়জিৎ নিজে থেকে যোগাযোগ করায় হাতে যেন চাঁদ পেয়েছিলাম।” কিন্তু এই আলাপ যে তাঁর বিপদের কারণ হবে কে জানত? মডেলের অভিযোগ, ক্রমশ কথার ধারা বদলে যেতে থাকে অভিনেতার। প্রথমে আভাসে তার পর সোজাসুজি শারীরিক সম্পর্কের কথা বলেন। এ-ও জানান, কিছু পেতে গেলে কিছু ‘কম্প্রোমাইজ়’ করতে হয়। উভয়ের বার্তালাপের প্রতিচ্ছবি (স্ক্রিনশট) আনন্দবাজার অনলাইনকে পাঠিয়েছেন শিখা।
সেই প্রতিচ্ছবি থেকে জানা গিয়েছে, অভিনেতা স্ত্রীকে বিচ্ছেদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একাধিক বার সহবাস করেন সেই মডেলের সঙ্গে। কিন্তু একটা সময়ের পর ওই মডেল বুঝতে পারেন, জয়জিৎ মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে ফাঁদে ফেলেছেন তাঁকে। শিখা তাঁকে একাধিক বার বিবাহবিচ্ছেদের কথা মনে করালেও সাড়া আসেনি অভিনেতার তরফে। ক্রমশ দূরে সরতে থাকেন জয়জিৎ।
মডেলের কথায়, “আমি জয়জিতের স্ত্রী শ্রেয়াকে পুরো ঘটনা জানাই।” তাতে কি কোনও সুরাহা মিলেছিল? মডেলের দাবি, শ্রেয়া তাঁকে নাকি পাত্তাই দেননি। উল্টে মেসেঞ্জারে জানান, অভিনেতার নাকি এ রকম অনেক সম্পর্ক আছে! তিনি বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না। এখানেই শেষ নয়। অভিযোগকারীকে শ্রেয়া প্রশ্ন করেন, বিবাহিত জেনেও কেন তিনি সম্পর্কে জড়িয়েছেন? এই বার্তালাপের স্ক্রিনশটও আনন্দবাজার অনলাইনকে দিয়েছেন মডেল।
এত দিন কেন চুপ ছিলেন তিনি? প্রশ্ন রাখতেই মডেলের জবাব, “এখনও সমাজ এই ধরনের ঘটনায় মেয়েদের দায়ী করে। অভিযোগের আঙুল তোলে তাদের দিকে। যার জেরে কালিমালিপ্ত হয় ওই মেয়েটি। পুরুষের গায়ে মালিন্য স্পর্শ করে না। তাই বলতে চেয়েও বলতে পারিনি।” এ-ও জানান, এমন স্বামীকে স্ত্রী সমর্থন করছেন কী ভাবে! নালিশ জানালেও ন্যায় পেতেন কি? স্রেফ প্রমাণের অভাবে দোষী বুক ফুলিয়ে ঘুরবে তা সহ্য করতে পারেননি তিনি। তাই নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার চান। একই সঙ্গে শ্লীলতাহানির মতো ঘৃণ্য ঘটনা থেকে মুক্ত করতে চান টলিউডকে।
সত্যিই কি এ রকম কিছু ঘটিয়েছিলেন জয়জিৎ? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অভিনেতার সঙ্গেও। জয়জিৎ বলেছেন, “আমি এ রকম কাউকে চিনি না। ফলে, শারীরিক সম্পর্ক দূরের কথা, মেসেঞ্জারে কথাও হয়নি আমাদের।” তাঁর আরও দাবি, তাঁর স্ত্রী তাঁকে বিশ্বাস করেন বলেই পাত্তা দেননি মেয়েটিকে। শেষে একটাই কথা অভিনেতার, “আনন্দবাজার অনলাইনের মারফত আমি ওই অপরিচিতাকে বার্তা দিচ্ছি, আদালতে আপনার সঙ্গে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy